ভারতীয় বাংলা সিনেমার গুণী নির্মাতা সৃজিত মুখার্জি। চলতি বছরের শুরুতে অভিনেত্রী ঋতাভরী চক্রবর্তীর সঙ্গে তোলা ছবি সৃজিত তার সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন; তারপরই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে আসেন তারা। এ আলোচনার মূল কারণ হলো—আট বছর আগে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন এই জুটি। দুই প্রাক্তন মুখোমুখি হয়ে পাতাঢাকা সেই গল্প বাইরে টেনে বের করেন।
কয়েক মাস আগে আলোচনা হলেও দুজনেই মুখে কুলুপ এঁটেছিলেন। অবশ্য, সৃজিতের সঙ্গে প্রেম-বিচ্ছেদ নিয়ে কখানো কথাও বলেনিনি ঋতাভরী। ‘স্ট্রেট আপ উইথ শ্রী’ পডকাস্টে হাজির হয়ে এ নিয়ে কথা বলেন এই অভিনেত্রী।
ঋতাভরী চক্রবর্তী বলেন, “আমি এ বিষয়ে কখনো কোথাও কথা বলিনি। সৃজিত যা ইচ্ছে বলুক; ও একটা পাগল (হাসি)! আমার কাছে ও এরকমই। ও আমার খুব কাছের। আমরা ৭-৮ বছর কথা বলিনি। আবার এখন। সত্যি বলতে, আমরা একসঙ্গে নিজেদের বন্ধুত্বটাকে উপভোগ করছি।”
আরো পড়ুন:
ইসলামি রীতিতে দাফন চান কবীর সুমন
বছর ঘুরে বছর আসে, বনি-কৌশানীর কেন বিয়ে হয় না?
রাফিয়াত রশীদ মিথিলার বর সৃজিতের সঙ্গে সম্পর্ক ভাঙার দায় নিজের কাঁধে নেন ঋতাভরী। তার ভাষায়, “আমি সৃজিতের হৃদয় ভেঙেছি। এটা নিয়ে কখনো গর্ব করব না; আমি যা করেছি সেটা ভুল। অনেকগুলো বছর ভেবেছি, ও আমাকে ঘৃণা করে। আমি বিস্তারে বলব না। শুধু এটুকু বলব, যা করেছি আমার ভুল ছিল।”
ভুল বুঝতে পারলেও সৃজিতের সঙ্গে যোগাযোগের সাহস পাননি ঋতাভরী। তা জানিয়ে এই অভিনেত্রী বলেন, “কোনো সম্পর্ক শেষ করারও আসলে একটা ডিগনিটি থাকে। যার যা ইচ্ছে রাগ থাক গুবলুকে নিয়ে, আমি যা করেছি সত্যি ভুল করেছি। আসলে, নিজের উপরেই বা কী রাগ করব। তখন আমার বয়স মাত্র ২৪ বছর। তাই আমরা অনেকগুলো বছর কথাও বলিনি। মাঝের সময়ে মনে হয়েছে, ওর কোনো কাজ খুব ভালো লেগেছে, একবার ফোন বা মেসেজে জানাই। সত্যি বলতে সাহস করে উঠতে পারিনি।”
তা হলে সম্পর্কটা কীভাবে ঠিক হলো? এ প্রশ্নের জবাবে ঋতাভরী বলেন, “সৃজিত খবরের কাগজে পড়েছিল, আমার আর তথাগতর (ঋতাভরীর প্রাক্তন প্রেমিক) বিয়ে। তারপর আমাকে মেসেজ করেছিল, ফিশ ওরলিটা হবে তো বিয়েতে…’! সঙ্গে যোগ করেন, ‘ওই আসলে সবটা ঠিক করেছিল। তখনো উপর উপর চলছিল ব্যাপারটা। সম্প্রতি আমরা বসে সবটা মিটমাট করি।”
২০১৭ সালে সৃজিত ও ঋতাভরী আচমকাই প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। সেই সময় পরিচালক ব্যস্ত ছিলেন ‘কাকাবাবু’ সিনেমার শুটিং নিয়ে। আর শুটিংয়ের ফাঁকেই ঋতাভরীর সঙ্গে লাঞ্চ কিংবা ডিনার ডেটে দেখা যেত। হোয়াসঅ্যাপেও দীর্ঘ সময় চ্যাট করতেন তারা। শুধু তাই নয়, সেই সময় ঋতাভরী প্রায়ই মুম্বাই যেতেন শুটের কাজে। বিমানবন্দর থেকে ঋতাভরীকে আনতে যেতেও দেখা গেছে এই পরিচালককে।
একই বছর ঋতাভরীর জন্মদিনের পার্টিতেও উপস্থিত ছিলেন সৃজিত। প্রিয় মানুষকে কেক খাওয়ানো থেকে শুরু করে একসঙ্গে ছবি তোলা— সবই তারা সকলের সামনে করেছেন। টলিপাড়ায় গুঞ্জন চাউর হয়েছিল, সৃজিতের ঘরণী হতে যাচ্ছেন ঋতাভরী। সৃজিতের সঙ্গে ঋতাভরীর পরিচয় ‘চতুষ্কোণ’ সিনেমা থেকে। এক সাক্ষাৎকারে ঋতাভরী বলেছিলেন— “গত তিন বছরে ভালোবাসার চেয়ে সৃজিতের সঙ্গে ঝগড়া বেশি করেছি।”
সবকিছু মিলিয়ে সৃজিত-ঋতাভরীর প্রেমের রসায়ন সবারই দৃষ্টি কেড়েছিল। যদিও সৃজিত এ সম্পর্ক নিয়ে কখনো খোলামেলা আলোচনা করেননি। বরং সম্পর্কটাকে গোপন রেখেছিলেন। সৃজিত আড়াল করলেও ঋতাভরী এই পরিচালকের সঙ্গে ঘর বাঁধার স্বপ্নও সাজিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রেম আকস্মিকভাবে ভেঙে যায়।
এরপর দুজনের পথ আলাদা হয়ে যায়। ২০১৯ সালে মিথিলাকে বিয়ে করে সংসারী হন সৃজিত। আর ঋতাভরী মনোবিদ তথাগত চ্যাটার্জির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান। কিন্তু এ সম্পর্কও টিকেনি। বর্তমানে ‘জওয়ান’ সিনেমার সংলাপ রচয়িতা সুমিত আরোরার সঙ্গে প্রেম করছেন ঋতাভরী। শোনা যাচ্ছে, চলতি বছরের শেষের দিকে বিয়েও করবেন তারা। এরই মাঝে পুরোনো প্রেম যেন ছাইচাপা আগুনের মতো জ্বলে উঠেছে।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
কেইপিজেডের বিনিয়োগ পরিবেশের ধারণা নিলেন অর্ধশত বিদেশি বিনিয়োগকারী
কোরিয়া, চীন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের প্রায় ৬০ জন ব্যবসায়ী ও প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত কোরিয়ান রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা বা কেইপিজেড ঘুরে দেখেন।
সরেজমিন এই পরিদর্শনের মধ্য দিয়ে আজ সোমবার থেকে শুরু হয়েছে বিনিয়োগ সম্মেলনের অনানুষ্ঠানিক যাত্রা। আনুষ্ঠানিকভাবে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করা হবে আগামী বুধবার। রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ওই দিন সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস।
‘বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট-২০২৫’ শীর্ষক এ বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)। এ সম্মেলন আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত চলবে।
সম্মেলনের অনানুষ্ঠানিক যাত্রার প্রথম দিনে আজ দেশি-বিদেশি আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের চট্টগ্রামের দুটি বিশেষ শিল্প এলাকা পরিদর্শন করানো হয়। এদিন সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এসব বিনিয়োগকারীরা কেইপিজেডে অবস্থিত ইয়াংওয়ান করপোরেশনের বিভিন্ন কারখানা ঘুরে দেখেন। কারখানা পরিদর্শন শেষে ইয়াংওয়ান করপোরেশনের পক্ষ থেকে দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সামনে কেইপিজেডে বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বিষয়ে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরা হয়।
প্রসঙ্গত, বেসরকারি বিদেশি বিনিয়োগকারীর উদ্যোগে গড়ে তোলা কেইপিজেড পরিচালনা করে কোরিয়ার বিশ্বখ্যাত শিল্পগ্রুপ ইয়াংওয়ান করপোরেশন।
পরিদর্শনকালে আগ্রহী বিনিয়োগকারীরা ইয়াংওয়ান গ্রুপের বিনিয়োগ, উৎপাদিত পণ্য, রপ্তানির পরিমাণ, কর্মসংস্থান, বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কী কী বাধা ইত্যাদি বিষয়ে জানতে চান।
ইয়াংওয়ান কর্তৃপক্ষ ও সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ৭০ লাখ বর্গফুটের বেশি আয়তনের কেইপিজেডে ৪৮টি শিল্পপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। সব কটি প্রতিষ্ঠানই সবুজ শিল্প হিসেবে স্বীকৃত। ৪৮টি প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগই তৈরি পোশাক খাত–সংশ্লিষ্ট। এর বাইরে জুতা ও ব্যাগের একাধিক কারখানা রয়েছে। এসব কারখানায় সব মিলিয়ে প্রায় ৩৫ হাজারের বেশি মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে।
শুধু কারখানা গড়ে তোলার মধ্যে নিজেদের কর্মকাণ্ড সীমিত রাখেনি ইয়াংওয়ান গ্রুপ। কেইপিজেড এলাকায় শ্রমিকদের জন্য গড়ে তোলা হয়েছে ১০০ শয্যার হাসপাতাল। রয়েছে কর্মকর্তাদের আবাসন, বিনোদন সুবিধা ও প্রশিক্ষণকেন্দ্র। নতুন করে গড়ে তোলা হচ্ছে ৬০০ শয্যার হাসপাতাল ও টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট।
বিদেশি বিনিয়োগে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মীরাও কর্মক্ষেত্র নিয়ে তাঁদের ব্যাপক সন্তুষ্টির কথা তুলে ধরেন পরিদর্শনকারী দেশি–বিদেশি আগ্রহী বিনিয়োগকারীদের কাছে।
বিনিয়োগ বাধা কী? কিহাক সাংয়ের উত্তর
চার ঘণ্টার বেশি কেইপিজেড এলাকা পরিদর্শন শেষে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ইয়াংওয়ান গ্রুপের চেয়ারম্যান কিহাক সাং।
এ সময় চীনের একজন বিনিয়োগকারী প্রতিনিধি তাঁর কাছে জানতে চান, বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে তিনি অন্যতম প্রধান বাধা কী মনে করেন? জবাবে কিহাক সাং বলেন, প্রশাসনিক জটিলতা বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। তবে এই বাধা সত্ত্বেও বাংলাদেশ লাভজনক বিনিয়োগের জন্য উত্তম গন্তব্য বলে মন্তব্য করেন তিনি। এ কারণে তিনি এ দেশে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগ ও ব্যবসা সম্প্রসারণ করছেন বলে জানান।
কেইপিজেড পরিদর্শন শেষে এদিন অর্ধশতাধিক দেশি–বিদেশি বিনিয়োগকারী ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে অবস্থিত জাতীয় বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল পরিদর্শনে যাওয়ার কথা আছে।
এদিকে বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজক প্রতিষ্ঠান বিডা জানিয়েছে, দেশে বিনিয়োগ বাড়ানোর লক্ষ্যে আয়োজিত এই আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ সম্মেলনে বিশ্বের ৫০টি দেশের ৫৫০ জনের বেশি বিনিয়োগকারী ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি অংশ নিচ্ছেন। এ জন্য সরাসরি বিনিয়োগ করবেন এমন বিনিয়োগকারীদের পাশাপাশি বিশ্বের নামীদামি বেশ কিছু কোম্পানির শীর্ষ নির্বাহী কিংবা প্রতিনিধিরাও নিবন্ধন করেছেন।