যশোরের মনিরামপুর উপজেলার প্রদীপ বিশ্বাস দেশে প্রথম শেওলা ও কচুরিপানা কাটার যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন। যে যন্ত্র ১০০ জন শ্রমিকের ১ মাসের কাজ করতে পারে মাত্র একদিনে। ইন্টারনেটে এ যন্ত্র দিয়ে কচুরিপানা কাটার ভিডিও ভাইরাল হয়েছে।

ডিঙ্গি নৌকার ওপর বিশেষ কায়দায় ইঞ্জিনসহ অন্যান্য উপকরণ বসিয়ে কচুরিপানা কাটার মেশিন আবিষ্কার করা হয়েছে। মেশিন চলছে আর কচুরিপানা কেটে দুই পাশে পড়ছে। ফাঁকা হয়ে যাওয়া কচুরিপনাভর্তি জলাশয়ের মধ্যে দিয়ে ছুটে চলছে ডিঙ্গি নৌকা।

প্রদীপ বিশ্বাসের তৈরিকৃত যন্ত্র গোপালগঞ্জ পাউবো (পানি উন্নয়ন বোর্ড) কিনে নিয়ে গেছে। দেশের নানা প্রান্ত হতে যোগাযোগ করে মেশিন ভাড়া, কেনা বা তৈরির অর্ডার পাচ্ছেন তিনি।

প্রদীপ বিশ্বাস যশোরের মনিরামপুর উপজেলার কুচলিয়া গ্রামের মৃত.

প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের ছেলে। বাবা ছিলেন অভয়নগর উপজেলার জুটমিলের মেকানিক। বাবার হাত ধরে এ পথে আসা প্রদীপ বিশ্বাসের। সুন্দলী বাজারে কুচলিয়া অংশে রয়েছে প্রদীপ বিশ্বাসের ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপ।

সপ্তম শ্রেণিতে পড়াকালিন বাবা প্রভাত চন্দ্র বিশ্বাসের হাত ধরে মেকানিক পেশায় আসেন প্রদীপ বিশ্বাস। যশোর সদর হতে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে সুন্দলী বাজারে গেলে দেখা যায়, নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘কুচলিয়া পিকেবি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্ক’-এ বসে একমনে কাজ করছেন তিনি।

কচুরিপানা কাটা যন্ত্র বিষয়ে জানতে চাইলে প্রদীপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমরা ভবদহ জলাবদ্ধ অঞ্চলের মানুষ। বিল বছরের ৯ মাস পানির নিচে থাকে। ফলে জলাশয় কচুরিপানায় ভর্তি থাকে। ভবদহের প্রভাবে এ অঞলের নদী-খালে পলি জমায় নাব্যতা হারিয়ে ফেলায় কচুরিপানা জন্মায়। এতে করে খাল-বিল ও নদীতে নামা কঠিন হয়ে পড়ে। মূলত এই কচুরিপানা থেকে পরিত্রাণের উপায় বের করার চিন্তায় আমার এ মেশিন তৈরিতে নেমে পড়া।’’

তিনি জানান, দুই বছর আগে ২২ হর্স-পাওয়ারের ইঞ্জিন, এঙ্গেল, পাত, কাঠ, চেইন, পেনিয়াম, গিয়ারবক্স, প্লেনসিড ও ১৯টি বিচালি কাটা ছুরি দিয়ে যন্ত্র বানালেও ঘন কচুরিপানা কাটতে গেলে মেশিন বন্ধ হয়ে যেত। এরপর ডিঙ্গি নৌকা চালাতে ১১ হর্সপাওয়ার ও কচুরিপানা কাটতে ২২ হর্সপাওয়ারের দুটি ইঞ্জিন, ৯টি ছুরি পাতের মধ্যে বিশেষ কায়দায় সেট করে যন্ত্রটি বানানো হয়। প্রায় তিন লাখ টাকা ব্যয় করে মাসখানেক কাজ করে তৈরিকৃত যন্ত্র কচুরিপানা কাটার উপযোগী হয়। 

তার যন্ত্র দিয়ে কুচি কুচি করে কাটা কচুরিপানা জৈব সার তৈরি সম্ভব বলে তিনি মনে করেন।  প্রদীপ বিশ্বাসের একমাত্র সন্তান জনতা ব্যাংকে কর্মরত রণজিত বিশ্বাস জানান, সরকারি-বেসরকারি পর্যায় পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এ ধরনের উন্নতমানের যন্ত্র তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে তৈরি করা সম্ভব।
 

ঢাকা/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

নাগরদোলায় অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে গলা কেটে হত্যা, অভিযুক্ত স্বামী আ

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় লাকী বেগম (২০) নামে একজন অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে নাগরদোলায় উঠিয়ে ছুরিকাঘাত করে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশ অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করেছে।  
 
সোমবার (১৪ এপ্রিল) রাতে বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নের হাফেজ মহিউদ্দিনের ওরসের মেলায় এ ঘটনা ঘটে।  

নিহত লাকী বেগম একই উপজেলার কালাপোল এলাকার বেদে পল্লীর মনসুর আলীর মেয়ে।  আটক স্বামী মো. সাকিব সদর উপজেলার মান্নান নগর বেদে পল্লী পাড়ার মো. মঙ্গলের ছেলে।    

নিহত লাকীর মা শেফালী বেগম জানান, এক বছর আগে পারিবারিকভাবে জেলার সদর উপজেলার মান্নান নগরের বেদে পাড়ার মঙ্গলের ছেলে সাকিবের সাথে লাকীর বিয়ে হয়। লাকী বর্তমানে পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। গত পনের দিন আগে সে শ্বশুর বাড়ি থেকে স্বামীসহ বাবার বাড়িতে আসে। রবিবার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। এক পর্যায়ে সাকিব তার স্ত্রীকে মারধর করে জামা কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। পরে নিজের ব্যবহৃত একটি মুঠোফোন ভেঙে ফেলে এবং নিজের মাথা নিজেই ফাঁটিয়ে ফেলে। 

সোমবার সন্ধ্যার পরে লাকীর স্বামী ও তার পরিবারের সদস্যরা একলাশপুর ইউনিয়নের মহিউদ্দিন হাফেজের ওরসের মেলায় ঘুরতে যায়। সেখানে স্বামী-স্ত্রী এক সাথে নাগরদোলায় উঠে।  

শেফালী বেগমের অভিযোগ, নাগরদোলায় চড়াকালীন সাকিব তার মেয়ে লাকীকে গলায় ছুরিকাঘাত করে গুরুতর আহত করে। পরে রক্তাক্ত অবস্থায় লাকীকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।  

লাকীর বাবা মনসুর আলী বলেন, “সাকিব মাদকাসক্ত ছিলো। কথায় কথায় লাকীকে নির্যাতন করতো। আমাদের ঘরে এসেও মেরেছে। সে আমার মেয়েকে হত্যা করেছে। আমরা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।”

বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা লিটন দেওয়ান বলেন, “অভিযুক্ত স্বামীকে আটক করা হয়েছে। পারিবারিক কলহের জের ধরে এ ঘটনা ঘটে। নিহতের মরদেহ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা আছে। নিহতের পরিবারের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” 

ঢাকা/সুজন/টিপু

সম্পর্কিত নিবন্ধ