সুনামগঞ্জে জলমহালের মাছ লুটের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৮
Published: 6th, March 2025 GMT
সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় জলমহাল মাছ লুটের ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সাত দিনে সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলায় আটটি জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। হাজার হাজার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে জলমহালে নেমে মাছ ধরে নিয়ে গেছেন। মাছ লুটের ঘটনায় দিরাই উপজেলার গোফরাঘাট জলমহালের ইজারাদারের পক্ষে গোফরাঘাট আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি লংকেশ্বর দাস বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি গ্রেপ্তার আটজনসহ দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করেছেন। দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ও তাড়ল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই মামলার আট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন সরমঙ্গল ইউনিয়নের কল্যাণী গ্রামের জীবন রায় (৪৫), চন্দ্রপুর গ্রামের এরশাদ মিয়া (৩২) ও হুমায়ুন (২০), বাউসী গ্রামের বাঁধন বৈষ্ণব (২৩), সমীরণ বৈষ্ণব (১৪) ও মৃদুল বৈষ্ণব (১৫), তাড়ল ইউনিয়নের ভাঙ্গাডহর গ্রামের পিন্টু তালুকদার (৩২) ও মৃদুল দাস (২৮)।
দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জীব সরকার প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার উপজেলায় কোনো জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেনি। একটি জলমহালে কিছু লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের ফিরিয়ে দেন।
গত শুক্রবার প্রথমে দিরাই উপজেলার কামান জলমহালে আশপাশের ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে মাছ লুটে নিয়ে যান। সর্বশেষ বুধবার দিরাই উপজেলা বেতরই ও জামালগঞ্জের আইলা জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। লুট হওয়া জলমহালের মধ্যে দিরাই উপজেলার পাঁচটি, শাল্লার দুটি এবং জামালগঞ্জ উপজেলার একটি রয়েছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ছ ল ট র ঘটন দ র ই উপজ ল র গ র প ত র কর ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
সুনামগঞ্জে আরও দুটি জলমহালের মাছ লুট
সুনামগঞ্জে আরও দুটি জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে এসব জলমহালে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মানুষকে বোঝালেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। এর আগে গত পাঁচ দিনে জেলার দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় আরও ছয়টি জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার দিরাই উপজেলার বেতইর জলমহালের কুচুয়া ও সেখামপুর বিলে মাছ লুটের ঘটনা ঘটতে পারে, এমন খবর আগেই পেয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সনজিব সরকার সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা গিয়ে দেখেন,বিলে মাছ ধরতে মানুষজন জড়ো হচ্ছেন। এ সময় তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ঘণ্টা দুয়েক মানুষকে সামলে রাখতে পারলেও পরে আর সম্ভব হয়নি। জলমহালটির আয়তন বড় হওয়ায় যেদিকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন, সেদিকে না নেমে অন্যদিকে বিলে নেমে পড়েন লোকজন। এ খবর জেনে সব দিক থেকেই মানুষ মাছ ধরতে শুরু করেন।
পরে একই জলমহালের আরেক অংশে গিয়ে লোকজনকে বিলের মাছ ধরা থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন তাঁরা; কিন্তু উপজেলার সুজাননগর এলাকার ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোক আগে থেকেই জড়ো হয়ে আছেন। একপর্যায়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ঢিল ছোড়েন মাছ ধরতে আসা লোকজন। পরে বাধ্য হয়ে সেখান থেকে সরে আসেন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দিনভর অনেকটা উৎসবের আমেজে এসব জলমহালে হাজার হাজার মানুষ পলো, জালসহ নানা উপকরণ নিয়ে মাছ ধরেন।
দিরাইয়ের ইউএনও সনজিব সরকার বলেন, ‘আমরা মানুষজনকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখি; কিন্তু একসময় কয়েক হাজার লোক সেখানে জড়ো হন। আমরা যেদিকে ছিলাম, সেদিকে না নেমে অন্যদিকে আরও লোকজন বিলে নেমে পড়েন। বিলের ইজারাদারের লোকজন বলছে, এর পেছনে কারও কারও উসকানি আছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।’
এ ছাড়া মঙ্গলবার জামালগঞ্জ উপজেলায় আয়লা-ছাদাইয়া জলমহালেও কয়েক হাজার মানুষ নেমে মাছ লুট করে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই জলমহালের ইজারাদার স্থানীয় নবীনগর উত্তর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রীতুষ বর্মণ। তিনি জলমহালের মাছ লুটের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রীতুষ বর্মণ জানান, এই জলমহাল জেলার দিরাই ও জামালগঞ্জ উপজেলার মাঝামাঝি অবস্থিত। মঙ্গলবার ভোররাতে পাশের দুই উপজেলার ১০ থেকে ১২ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বিলের পাড়ে জড়ো হন। এতে ভয়ে বিলের পাহারার দায়িত্বে থাকা লোকজন পালিয়ে যান। পরে জড়ো হওয়া মানুষ বিলে নেমে মাছ লুট করে নিয়ে যান।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, তাঁরা সব ঘটনাই খতিয়ে দেখছেন।