সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় জলমহাল মাছ লুটের ঘটনায় আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ বৃহস্পতিবার সকালে তাঁদের উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সাত দিনে সুনামগঞ্জের দিরাই, শাল্লা ও জামালগঞ্জ উপজেলায় আটটি জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। হাজার হাজার মানুষ সংঘবদ্ধ হয়ে জলমহালে নেমে মাছ ধরে নিয়ে গেছেন। মাছ লুটের ঘটনায় দিরাই উপজেলার গোফরাঘাট জলমহালের ইজারাদারের পক্ষে গোফরাঘাট আদর্শ মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি লংকেশ্বর দাস বৃহস্পতিবার থানায় মামলা করেন। মামলায় তিনি গ্রেপ্তার আটজনসহ দুই হাজার ব্যক্তিকে আসামি করেছেন। দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ও তাড়ল ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে এই মামলার আট আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হলেন সরমঙ্গল ইউনিয়নের কল্যাণী গ্রামের জীবন রায় (৪৫), চন্দ্রপুর গ্রামের এরশাদ মিয়া (৩২) ও হুমায়ুন (২০), বাউসী গ্রামের বাঁধন বৈষ্ণব (২৩), সমীরণ বৈষ্ণব (১৪) ও মৃদুল বৈষ্ণব (১৫), তাড়ল ইউনিয়নের ভাঙ্গাডহর গ্রামের পিন্টু তালুকদার (৩২) ও মৃদুল দাস (২৮)।

দিরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.

আবদুর রাজ্জাক বলেন, একটি মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। যাঁরা মাছ লুটের ঘটনার সঙ্গে যুক্ত এবং এ ঘটনায় যাঁদের ইন্ধন রয়েছে, তাঁদের আইনের আওতায় আনা হবে।

দিরাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সঞ্জীব সরকার প্রথম আলোকে বলেন, বৃহস্পতিবার উপজেলায় কোনো জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেনি। একটি জলমহালে কিছু লোকজন জড়ো হওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁদের ফিরিয়ে দেন।

গত শুক্রবার প্রথমে দিরাই উপজেলার কামান জলমহালে আশপাশের ১০ থেকে ১৫টি গ্রামের মানুষ জড়ো হয়ে মাছ লুটে নিয়ে যান। সর্বশেষ বুধবার দিরাই উপজেলা বেতরই ও জামালগঞ্জের আইলা জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটে। লুট হওয়া জলমহালের মধ্যে দিরাই উপজেলার পাঁচটি, শাল্লার দুটি এবং জামালগঞ্জ উপজেলার একটি রয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম ছ ল ট র ঘটন দ র ই উপজ ল র গ র প ত র কর ঘটন য়

এছাড়াও পড়ুন:

জলমহালের দ্বন্দ্ব গড়াল সংঘর্ষে

বাহুবল উপজেলার স্নানঘাট গ্রামে দু’পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। সালিশ বিচারে উপস্থিত ব্যক্তিদের ওপর হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের এই সংঘর্ষে নারীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
রোববার সকাল ৬টার দিকে উপজেলার স্নানঘাট ইউনিয়নের স্নানঘাট গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে স্নানঘাট গ্রামের বাসিন্দা আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুর রহমান ও কৃষক লীগ নেতা মোশাহিদ মিয়ার নেতৃত্বে গ্রামের স্থায়ী বাসিন্দা কালা মিয়ার ছেলে জাবেদ আলীকে ছুরিকাঘাতে আহত করা হয়। হামলাকারীদের ভয়ে জাবেদ আলী ঠিকমতো চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে অবস্থান করছিলেন।
এক পর্যায়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা চান মিয়া ও সোহেল মিয়াসহ ১৫-২০ জন লোক সালিশের জন্য জাবেদ আলীর বাড়িতে যান। এ সময় মোশাহিদ মিয়া ও তাঁর লোকজন তাদের ওপর হামলা চালায়। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে রোববার সকালে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়ায় দু’পক্ষের লোকজন।
প্রায় ২ ঘণ্টাব্যাপী সংঘর্ষে নারীসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হন। এদের মধ্যে আব্দুল মজিদ, মোর্শেদ মিয়া, আশিক মিয়া, শামীম মিয়া, মুক্তা মিয়া, কাশেম মিয়া, রমজান আলী ও ইরফান আলীকে হবিগঞ্জ সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে বাহুবল মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
স্থানীয়রা জানান, উপজেলার একটি জলমহালের ইজারা নিয়ে দুটি পক্ষের বিরোধ চলমান। পুলিশ জানায়, স্নানঘাটের নায়ের আলীর কাছ থেকে জলমহাল ইজারা নেন আইয়ুব আলী। ইজারা গ্রহীতার দাবি, তিনি ৩ বছরের জন্য পুকুর ইজারা নেন। তবে ইজারাদাতা বলছেন, এক বছরের কথা। এর জের ধরে উভয় পক্ষের তর্ক হয়। যেখানে ইজারা গ্রহীতার পক্ষে কথা বলেন জাবেদ আলী।
সূত্র জানায়, স্নানঘাট গ্রামের সাবেক চেয়ারম্যান ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার ঘটনায় দায়ের করা মামলার আসামি তাজুল ইসলাম। তাঁর লোকজন অনেক দিন ধরে স্থানীয় বেশ কয়েকটি পরিবারের ওপর অত্যাচার চালিয়ে আসছিল। তুচ্ছ বিষয় নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতা ফয়জুর রহমানের নেতৃত্বে জবেদ আলীর ওপর হামলা চালানো হয়। স্থানীয়দের সহায়তায় আশঙ্কাজনক অবস্থায় জাবেদ আলীকে উদ্ধার করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। 
এলাকাবাসীর দাবি, তারা সাবেক চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম তাজু, ফয়জুর রহমান ও মোশাহিদ বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন।
বাহুবল মডেল থানার ওসি মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কৃষক উদ্বেগে, লাভ প্রভাবশালীর
  • জলমহালের দ্বন্দ্ব গড়াল সংঘর্ষে