জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চলতি বছর আট বিশিষ্টজনকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে সরকার। এ তালিকায় রয়েছেন ‘পপসম্রাট’ আজম খান। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।  

বাংলা পপ গান গেয়ে এ দেশের সাধারণ মানুষের মন জয় করেন আজম খান। শুধু তাই নয়, এ ঘরানার গান গেয়ে ‘পপ সম্রাট’ উপাধি লাভ করেন। সবাই তাকে গুরু বলেও সম্বোধন করতেন। আজম খান ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

আজম খান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আজম খান ক্লাস নাইনে পড়াকালীন অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি শাসকরা বিভিন্নভাবে দেশের মানুষকে অনেক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এমন অনুভব শক্তি আজম খানকে বিপ্লবী চিন্তার মানুষে পরিণত করে। সেই সময় তিনি জানতে পারেন ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর কথা। গণসংগীতের চর্চা করতেন এই শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা। বন্ধুদের সঙ্গে এই শিল্পীগোষ্ঠী সংগীত পরিবেশন করতে থাকেন আজম খান।

আরো পড়ুন:

ইসলামি রীতিতে দাফন চান কবীর সুমন

‘শয়তানের খপ্পর থেকে পাসপোর্ট উদ্ধার হয়েছে’

ধীরে ধীরে মানুষের প্রশংসা পাওয়ার পর এই শিল্পীগোষ্ঠী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন। তাদের সাধারণ মানুষের জীবনের অভাব ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হতো গানে গানে। প্রতিবাদী গান গাওয়ার জন্য পুলিশের লাঠির বাড়িও খেয়েছেন আজম খান। গণ–আন্দোলনের সময়গুলোতেও গান করে গেছেন বরেণ্য এই শিল্পী।

আজম খানের গাওয়া অনেক জনপ্রিয় গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এত সুন্দর দুনিয়ায়’, ‘অভিমানী’, ‘অনামিকা’, ‘পাপড়ি’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘আমি যারে চাইরে’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ও চাঁদ সুন্দর’, ‘বাধা দিয়ো না’, ‘ও রে সালেকা ও রে মালেকা’ ও ‘জীবনে কিছু পাব না রে’।

২০১১ সালের ৫ জুন অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে অনন্তের পথে পাড়ি জমান পপ সম্রাট।

স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে প্রদান করে আসছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই পদক প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র প্রদান হয়।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এই শ ল প আজম খ ন র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

হজ অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করলেন প্রধান উপদেষ্টা

হজযাত্রীদের সেবা সহজ করতে তৈরি মোবাইল অ্যাপ ‘লাব্বাইক’ উদ্বোধন করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, হজযাত্রীরা যাতে নির্বিঘ্নে ধর্মকর্ম পালন করতে পারেন, সে জন্য এই অ্যাপ বড় ভূমিকা রাখবে।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় সরকারি ব্যবস্থাপনায় প্রথমবারের মতো নির্মিত অ্যাপ উদ্বোধন করে হজযাত্রীদের এই অ্যাপ ব্যবহারের আহ্বান জানান প্রধান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি বলেন, ‘ধর্ম পালনে সহায়ক হওয়ায় এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ নানা ফিচার থাকায় এই অ্যাপ হাজিদের একাগ্রচিত্তে হজ পালনে মস্ত বড় অবদান রাখবে।’

চলতি বছর পবিত্র হজ পালনের শুরু থেকে হজযাত্রীরা এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারলেও আগামী বছর থেকে যেন মানুষ হজে যাওয়ার চিন্তাভাবনার পর্যায় থেকে এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারেন, সে লক্ষ্যে কাজ করার জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগকে নির্দেশনা দেন প্রধান উপদেষ্টা।

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘হজ ব্যবস্থাপনায় যেসব দেশ আমাদের দেশের চেয়ে উন্নত, তাদের কাছ থেকে অভিজ্ঞতা গ্রহণ এবং যেসব দেশে এ ধরনের ব্যবস্থা নেই, সেসব দেশকে বিনা মূল্যে আমাদের অ্যাপটির কারিগরি দিক প্রদানের উদ্যোগ নেওয়া হবে।’ ভবিষ্যতে এই অ্যাপকে আরও সহজ এবং ত্রুটিমুক্ত করার পরামর্শও দেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘এই অ্যাপ চালু হওয়ায় হজযাত্রীদের ধর্ম পালন সহজতর হবে। এর পাশাপাশি সৌদি আরব গিয়ে তাঁরা চলাফেরায় দুশ্চিন্তামুক্ত হবেন।’

অ্যাপটি তৈরির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা।

এই অ্যাপের পাশাপাশি হজ প্রিপেইড কার্ড ও হজ রোমিং প্যাকেজ সুবিধার উদ্বোধন করেন অধ্যাপক ইউনূস।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন

ধর্ম উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন, সংস্কৃতিবিষয়ক উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব।

সম্পর্কিত নিবন্ধ