নাঈমুর রহমান দুর্জয় আর দেবব্রত পাল জুটি ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (কোয়াব) দায়িত্বে ছিলেন অনেক বছর হলো। রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে দুর্জয় নিজেকে গুটিয়ে নিলেও দেবব্রত সাধারণ সম্পাদক আছেন এখনও। জাতীয় দলের সাবেক এবং বর্তমান ক্রিকেটাররা কোয়াবেও পরিবর্তন চান।

বুধবার ঢাকার একটি রেস্তোরাঁয় ৩০ থেকে ৩৫ ক্রিকেটার মিলিত হয়েছিলেন কোয়াবের নির্বাচনের দাবিতে। বিসিবি পরিচালক ও জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আকরাম খান জানান, নাজমুল হোসেন শান্ত, নুরুল হাসান সোহানরা মিটিংয়ে উপস্থিত ছিলেন।

আকরাম বলেন, ‘দেবুরা তো অনেক বছর চালাল। সবাই চায় কোয়াব কার্যকর হোক এবং নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দায়িত্ব নিক। শিগগিরই নির্বাচন হবে আশা করি।’ 

খালেদ মাসুদ পাইলসহ জাতীয় দলের বেশ কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটার উপস্থিত ছিলেন বুধবারের সভায়। মূলত এক দশকের বেশি সময় ধরে দুর্জয়-দেবব্রত পালের নিয়ন্ত্রণে কোয়াব। বিসিবির নির্বাচনে তিন নম্বর ক্যাটেগরিতে প্রভাব ছিল তাদের। 

বোর্ডের পরবর্তী নির্বাচনের আগে কোয়াবের নির্বাচন হলে পরিচালক পদে প্রার্থী মনোনীত করতে পারবে নতুন কমিটি। এ ছাড় কোয়াব কার্যকর করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে ক্রিকেটারদের স্বার্থ রক্ষায়। 
 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

হৃদয়ের কথা বলতে পারছেন না হৃদয়

এপ্রিলজুড়ে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে আলোচিত নাম তাওহিদ হৃদয়। ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে ১২ এপ্রিল আবাহনীর বিপক্ষে ম্যাচে আম্পায়ারের সঙ্গে অশোভন আচরণ করে মোহামেডানের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক যে বিতর্কের জন্ম দেন, তা আক্ষরিক অর্থেই তোলপাড় সৃষ্টি করে।

এর জেরে জল গড়ায় অনেক দূর। একবার হৃদয়কে নিষেধাজ্ঞার শাস্তি দেওয়ার পর পরবর্তী সময়ে তা কমিয়ে আবার বাড়ানো হয়। ২৬ এপ্রিল গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে ম্যাচে আরেক কাণ্ড করে বসেন জাতীয় দলের এই ক্রিকেটার। আউট হওয়ার পর তাঁকে অসন্তোষ প্রকাশ করে কিছু একটা বলতে শোনা যায়। ম্যাচ শেষে হৃদয়কে শুনানির জন্য ডাকা হলেও তিনি যাননি। ফলে ম্যাচ রেফারি তাঁকে ১টি ডিমেরিট পয়েন্ট দেন ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

মোট ডিমেরিট পয়েন্ট ৮ হওয়ায় বিসিবির আচরণবিধি অনুসারে হৃদয়কে নতুন করে ৪ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়, যা তাৎক্ষণিকভাবে কার্যকর করা হয়। এর সঙ্গে আগের ১ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞা তো ছিলই।

নিষিদ্ধ হৃদয় ২৬ এপ্রিলের পর তাই আর মাঠে নামতে পারেননি। তাঁর দল মোহামেডানও শিরোপা জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়ে শেষ পর্যন্ত পারেনি। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ সুপার লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহামেডানকে হারিয়েই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আবাহনী।

রানার্সআপ হয়ে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ শেষ করার পর গত কয়েক দিনের ঘটনাবহুল সময় নিয়ে আজ ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন হৃদয়। ২৪ বছর বয়সী এই ব্যাটসম্যান জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে তিনি নাকি অনেক কিছু লিখতে চেয়েও পারছেন না।

স্ট্যাটাসে হৃদয় লিখেছেন, ‘প্রতিটি গল্পের দুটি দিক থাকে। হয়তো একপক্ষের চাপে অপরপক্ষকে আমাদের কখনো জানার সুযোগ হয় না। তাই ঢালাওভাবে সবটা না জেনেই আমরা কিছু করে বসি বা বলে ফেলি। একদম শুরু থেকে যদি সবটাই বলতে পারতাম, তাহলে কাহিনি হতো ভিন্ন। যেটা বলতে পারছি না, কেন পারছি না, তা না হয় পরেই বলব!’

সব শাস্তি কীভাবে মেনে নিয়েছেন, সেই সম্পর্কে হৃদয় লিখেছেন, ‘নিজেদের ভেতর অনেক কিছুই হয়। বড়-ছোট সবাই ভুল করে, পরিবারের অপর মানুষটা যেন ছোট বা অপমানিত না হয়, সে জন‍্য অনেক কিছু নিজের ঘাড়ে নিতে হয়, আবার সহ‍্য করতে হয়—হোক সেটা অপমান কিংবা ভালোবাসা। এগুলো মিলেই জীবন। আপাতত এটাই বুঝিয়েছি নিজেকে।’

টুর্নামেন্টের এই মৌসুমে মোহামেডানকেই সবচেয়ে বড় পরীক্ষা দিতে হয়েছে বলে মত হৃদয়ের, ‘এবারের প্রিমিয়ার লিগে ২২ গজের বাইরেও এক প্রকার অলিখিত যুদ্ধ করে গেল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। আর কোনো দলকে এতটা মানসিক যুদ্ধ করতে হয়নি, যতটা মোহামেডান করেছে।’

ফেসবুক স্ট্যাটাসের শেষ ভাগে সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন হৃদয়, ‘মোহামেডান কর্তৃপক্ষ প্রত‍িটি ম‍্যাচে আমাকে উপস্থিত রাখার জন‍্য যে চেষ্টা করেছেন, তার জন‍্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার সতীর্থ খেলোয়াড়, শ্রদ্ধেয় কোচ ও সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি ভালোবাসা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ