গুরুত্বপূর্ণ বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানসংক্রান্ত প্ররক্ষা নির্দেশিকার বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে তলব করেছেন হাইকোর্ট। তাঁকে ১৮ মার্চ আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি শিকদার মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ বৃহস্পতিবার স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন। এর আগে গুরুত্বপূর্ণ বা বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বিশেষ নিরাপত্তা প্রদানবিষয়ক প্ররক্ষা নির্দেশিকা–২০২৫ জারি করা হয়।

ওই নির্দেশিকার বিষয়টি আদালতের নজরে এনে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো.

আব্দুল ওয়াহাব এবং সৈয়দা সাজিয়া শারমিন। শুনানি নিয়ে আদালত স্বতঃপ্রণোদিত রুল দিয়ে ওই নির্দেশিকার কার্যক্রম তিন মাসের জন্য স্থগিত করেন।

পরে আইনজীবী মোহাম্মদ শিশির মনির বলেন, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে নিরাপত্তা প্ররক্ষা নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে, এখানে বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতিকে রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশের মহাপরিদর্শকসহ অন্যদের সঙ্গে একই রকমভাবে তুলনা করা হয়েছে। হাইকোর্টের বিচারকদেরকে সিনিয়র সচিব ও সচিবদের সঙ্গে রাখা হয়েছে।…একই বিষয়ে আপিল বিভাগ একটি রায় দিয়েছিলেন, সে মামলায় আপিল বিভাগ যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স (রাষ্ট্রীয় পদক্রম) ফিক্স (নির্ধারণ) করে দেওয়া হয়েছে এবং সর্বশেষ ২০২০ সালের যে ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স আছে—সবকিছু লঙ্ঘন করে এটি জারি করা হয়েছে। এ জন্য ওই নোটিফিকেশন (নির্দেশিকাটি) আদালতের নজরে আনেন বলে জানান তিনি।

আদালতে ২০২০ সালের ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স দেখানো এবং আপিল বিভাগে নিষ্পত্তি হওয়া মামলার রায়ের কথা উল্লেখ করেছেন বলে জানান শিশির মনির। তিনি বলেন, ‘সেই মামলার রিভিউ আবেদন ২৭ এপ্রিল শুনানির জন্য রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে কী করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে এ ধরনের নিরাপত্তা প্ররক্ষা নীতিমালা জারি করা হলো—এটা একটা বিস্ময়কর বিষয়। আইনকানুন ও ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের তোয়াক্কা না করে এই ধরনের নীতিমালা জারি করে মূলত বাংলাদেশের সংবিধান এবং বিচার বিভাগের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করেছে। শুনানি নিয়ে আদালত সুয়োমোটো রুল ইস্যু করেছেন, কেন এই নির্দেশিকাকে অবৈধ ও অসাংবিধানিক ঘোষণা করা হবে না। সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে ১৮ মার্চ আদালতে সশরীর হাজির হয়ে তাঁর কন্ডাক্ট, কী কারণে পত্রজারি করেছেন, তাঁর আচরণ ব্যাখ্যার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।’

জানতে চাইলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আখতার হোসেন মো. আব্দুল ওয়াহাব প্রথম আলোকে বলেন, কিসের ভিত্তিতে নির্দেশিকাটি জারি করা হয়েছে, সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনিকে ১৮ মার্চ সকাল সাড়ে ১০টায় আদালতে হাজির হতে বলা হয়েছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

যেকোনো সময় ফাঁসির আদেশ এলে অবাক হব না 

যেকোনো সময় ফাঁসির আদেশ এলে অবাক হবেন না বলে জানিয়েছেন ঢাকা-৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য সোলাইমান সেলিম।

বুধবার (৫ মার্চ) সকালে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মনিরুল ইসলামের আদালত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকেন্দ্রিক লালবাগ থানার এক হত্যা মামলায় সোলাইমান সেলিমকে গ্রেপ্তার দেখানোর আবেদন মঞ্জুর করেন। সে সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এ কথা বলেন তিনি।

এদিন সকাল ১০টা ৮ মিনিটের দিকে সোলাইমান সেলিমসহ সাবেক আওয়ামী সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী ও সংসদ সদস্যকে আদালতে হাজির করা হয়।

তাদেরকে হাতকড়া, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও হেলমেট পরানো হয়। সবাইকে কাঠগড়ায় রাখা হয়। অন্যান্য দিনের মতো কাঠগড়ার পাশে পুলিশ সারি করে নিরাপত্তাবেস্টনী দিয়ে দাঁড়ান। প্রত্যেক আসামির আইনজীবীও কাছে চলে আসেন। আসামিরা ওকালতনামায় স্বাক্ষর করেন এবং আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলেন। 

সোলাইমান সেলিম এক আইনজীবীকে ডেকে তার সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলতে থাকেন। আইনজীবী সোলায়মান সেলিমের কাছে জানতে চান, কারাগারে কেমন জীবন কাটাচ্ছেন? সোলায়মান সেলিম বলেন,  “রোজা রাখছি। বই পড়ি। পরিবারের সাথে ফোনে কথা বলা যায়। সেহরি ও ইফতারে খাবার নরমাল দেয়। দেখছেন না সবার মুখ কেমন শুকনা।”

কিছুক্ষণ পরেই এজলাসে বিচারক আসেন। তাতে কর্ণপাত করেন না সোলাইমান সেলিম। সাংবাদিকদের উদ্দেশে সোলাইমান সেলিম বলেন, “অনেক সাংবাদিক ভুয়া নিউজ করে। তারা লিখেছে, শাহজাহান খানসহ অনেকে নাকি কারাগারে ভালো খাবার খাচ্ছে। এসব ভুয়া নিউজ করে আমাদের ১২টা বাজিয়ে দিচ্ছে।”

কাঠগড়ার পাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা সোলাইমান সেলিমকে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কথা বলতে বারণ করেন। তখন তিনি পুলিশ সদস্যদের উদ্দেশে বলেন, “জবাই তো দেবেন। একটু সময় দেন।”

ক্ষোভ প্রকাশ করে সোলাইমান সেলিম আইনজীবীকে বলেন, “যেকোনো সময় ফাঁসির আদেশ আসতে পারে। এতে আমি অবাক হব না। বঙ্গবন্ধুর বাড়ি যেভাবে ভাঙা হয়েছে! বোঝা শেষ।” 

শুনানি শেষে সোলাইমান সেলিমকে হাজতখানায় নেওয়া হচ্ছিল। এ সময় তিনি আরেক আইনজীবীকে ডেকে তার বাবা হাজী সেলিমের বিষয়ে খোঁজ নেন। 

হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় সোলাইমান সেলিমকে তার বক্তব্য ‘যেকোনো সময় ফাঁসির আদেশ’-এর বিষয়ে এক সাংবাদিক প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “তড়িঘড়ি করে বিচার হয় না।”

ঢাকা/মামুন/রফিক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বার কাউন্সিল পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা করার দাবি রাবির আইন অনুষদের শিক্ষার্থীদের
  • করোনার ৫ বছর: যে দেশগুলো কখনো লকডাউনে যায়নি
  • ম্যাজিস্ট্রেটের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ, আদালত বর্জন আইনজীবীদের
  • বিএনপি নেতা আইনজীবী মাসুদ তালুকদারের দলীয় সব পদ স্থগিত
  • ঢাবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সৈকতকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ 
  • পটুয়াখলীতে অনির্দিষ্টকালের জন্য আইনজীবীদের আদালত বর্জন
  • মশার কামড়ে ঘুম হচ্ছে না, আইনজীবীকে জানান ছাত্রলীগনেতা সৈকত 
  • যেকোনো সময় ফাঁসির আদেশ এলে অবাক হব না 
  • বাইডেনের সময় ২ কোটির বেশি অবৈধ অভিবাসী যুক্তরাষ্ট্রে ঢুকেছেন: ট্রাম্প