বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় আশুলিয়ায় রিয়াজুল ইসলামকে হত্যার মামলায় ঢাকা-২০ (ধামরাই) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মালেকের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. তাজুল ইসলাম সোহাগ শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।

এম এ মালেকের সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক ওমর ফারুক।

রাষ্ট্রপক্ষে এম এ কালাম খান রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। তিনি বলেন, “এটা হত্যা মামলা। হত্যাকাণ্ডে তার প্রত্যক্ষ মদদ ছিল। তিনি ফ্যাসিস্টের সহযোগী। তিনি হত্যা ও নির্যাতনের সাথে সরাসরি জড়িত। তার সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করছি।”

এম এ মালেকের পক্ষে ফিরোজ আলম রিমান্ড বাতিল ও জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানিতে তিনি বলেন, “তিনি বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষ। এজাহারে তার নাম নেই। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের প্রয়োজন হলে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করা হোক।” শুনানি শেষে আদালত এম এ মালেকের চার দিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

রিমান্ড মঞ্জুরের পর হাজতখানায় নিয়ে যাওয়ার সময় এম এ মালেক বলেন, “মহামান্য হাইকোর্ট আমাকে ২০ এপ্রিল পর্যন্ত জামিন দিয়েছেন। হঠাৎ করে আমার বাসায় পুলিশ গিয়ে আমাকে মিথ্যা মামলায় অ্যারেস্ট করেছে।” 

গতকাল বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুর-১ থেকে এম এ মালেককে গ্রেপ্তার করা হয়।

বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের শেষ দিন ৫ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে রিয়াজুল ইসলাম আশুলিয়া থানাধীন আশুলিয়া-চন্দ্র মহাসড়কের পাশে গুলিবিদ্ধ হন। চিকিৎসার জন্য সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় রিয়াজুলের ভাই আশুলিয়া থানায় মামলা করেন।

ঢাকা/মামুন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এম এ ম ল ক র

এছাড়াও পড়ুন:

টিসিবির চালের বস্তায় ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ’ স্লোগান

নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) বিতরণকৃত চালের বস্তায় এখনো পতিত সরকারের নাম ও স্লোগান বিদ্যমান রয়েছে। বস্তাগুলোর গায়ে স্পষ্টভাবে লেখা ‘শেখ হাসিনার বাংলাদেশ, ক্ষুধা হবে নিরুদ্দেশ’। অথচ ৫ আগস্টের ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর সরকারের পক্ষ থেকে এই নাম ও স্লোগান মুছে ফেলার নির্দেশনা দেওয়া হলেও তা মানা হচ্ছে না স্থানীয় খাদ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে। 

উপজেলার বিভিন্ন টিসিবি ডিলার পয়েন্ট ঘুরে দেখা গেছে, পুরনো সরকারের নাম ও স্লোগানসহ চালের বস্তা খোলামেলাভাবেই ডিলারদের বিতরণ করা হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা ও শ্রমিকরা এ ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।

শুটিবাড়ী বাজারের শ্রমিক মো. মশিয়ার রহমান (৪০) জানান, ৫ আগস্টের পর বস্তায় শেখ হাসিনার নাম মুছে দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু এখন আবার সেই নাম লেখা বস্তা আসছে।

আরো পড়ুন:

রিমান্ডে শেখ হাসিনার সাবেক সামরিক সচিব মিয়াজী

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়
শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে ভারতকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাঠিয়েছে ঢাকা

ডিলারদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আশপাশের কয়েকটি উপজেলায় পুরনো স্লোগান মুছে দেওয়ার কাজ শুরু হলেও ডিমলায় তেমন উদ্যোগ চোখে পড়েনি।

বিষয়টি নিয়ে উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. রুহুল মোছাদ্দেক বলেন, ‘‘শেখ হাসিনার নাম ও স্লোগান থাকার কথা নয়। যদি এমন হয়ে থাকে, তবে এটা অন্যায়। বিষয়টি দেখার দায়িত্ব ওসি এলএসডির।’’ 

উপজেলা খাদ্য পরিদর্শক ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান মোহাম্মদ আজিজুল হাকিম বলেন, ‘‘নাম মুছে ফেলার কাজ চলমান। তবে অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছু বস্তা থেকে যেতে পারে। আমরা বিষয়টি দ্রুত সমাধান করছি।’’ 

গয়াবাড়ী ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান মাসুদ বলেন, ‘‘৫ আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে জনগণ ফ্যাসিবাদী শাসন প্রত্যাখ্যান করেছে। এখন যদি সরকারি চালের বস্তায় সেই রক্তচোষা শাসকের নাম দেখা যায়, তবে বুঝতে হবে, পুরনো শাসনের প্রেতাত্মারা এখনো লুকিয়ে আছে। বিষয়টি কষ্টের।’’ 

এ বিষয়ে নীলফামারী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দ আতিকুল হক বলেন, ‘‘বস্তা পরিবর্তন এই মুহূর্তে করা কঠিন। কারণ, এত বস্তা হুট করে সরবরাহ করা সম্ভব নয়। তবে নাম ও স্লোগান মুছে ফেলার কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। আমি নিজেই এলএসডিতে যাচ্ছি। নিশ্চিত করব, যেন পুরনো স্লোগান সম্বলিত বস্তা আর বিতরণ না হয়।’’ 

ডিমলা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মো. রাসেল মিয়া বলেন, ‘‘খাদ্য কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সম্পর্কে জেনে নিতে হবে। দায়ীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
 

ঢাকা/সিথুন/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ