অবৈধ সম্পদ: স্ত্রীসহ টিপু মুনশির বিরুদ্ধে দুদকের মামলা
Published: 6th, March 2025 GMT
৫ কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার ৬১২ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের পাশাপাশি ৩২ কোটি টাকার আয়ের উৎস আড়াল করেছেন সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।পাশাপাশি স্বামীর দুর্নীতিতে স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশি অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন ৪ কোটি ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৭৩০টাকা।
দুর্নীতি দমন কমিশনের অনুসন্ধানে চাঞ্চল্যকর এই তথ্য পাওয়া গেছে।
অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রাখা অপরাধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় টিপু মুনশি ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে পৃথক মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
টিপু মুনশির দুই কন্যার বিরুদ্ধেও অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুদক। বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুদকের মহাপরিচালক (অনুসন্ধান ও তদন্ত) আক্তার হোসেন এ তথ্য জানান।
প্রথম মামলায় বলা হয়, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির নামে মোট ১১,৯৫,৫৯,৪৫৬ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। উক্ত সময়ে তার সর্বমোট গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৬,০৫,৩১,৮৪৪ টাকা। এক্ষেত্রে তার জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৫,৯০,২৭,৬১২।
এছাড়া টিপু মুনশির নিজ নামে ১১টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে মোট ১৭,৫৫,৭৯,৬৩৩ টাকা জমা ও ১৪,৬২,৭৮,৮১৭ টাকা উত্তোলনসহ সর্বমোট ৩২,১৮,৫৮,৪৫০ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরপূর্বক আয়ের উৎস আড়াল করেছেন যা অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। ফলে অনুসন্ধান টিমের সুপারিশের আলোকে কমিশননের অভিযোগ সংশ্লিষ্ট টিপু মুনশির বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা তৎসহ মানিলন্ডারিং আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় একটি মামলার অনুমোদন করা হয়।
দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়, টিপু মুনশির স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশির এর নামে মোট ৬,২৫, ৬৮,৬২৭ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। উক্ত সময়ে তার সর্বমোট গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ২,০৭,৪৪,৮৯৭ টাকা। এক্ষেত্রে তার জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৪,১৮,২৩,৭৩০ টাকা।
অনুসন্ধান টিম টিপু মুনশির স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশির বিরুদ্ধে অসাধু উপায়ে জ্ঞাত আয়ের উৎসের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ ৪,১৮,২৩,৭৩০ টাকার সম্পদের মালিকানা অর্জন ও দখলে রাখা অপরাধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারায় মামলার সুপারিশ করেন।
এদিকে টিপু মুনশির দুই মেয়ে তানিয়া অনন্যা মুনশি এবং তৃষা মুনশির নামে কয়েকটি ব্যাংক হিসাব বিবরণী, তারা বিভিন্ন কোম্পানির পরিচালক ও তাদের নামে বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার থাকায় তাদের বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধানের জন্য অনুমোদন দিয়েছে কমিশন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর য় র উৎস দমন ক
এছাড়াও পড়ুন:
সাবেক মন্ত্রী গাজী ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকে দুটি মামলার অনুমো
সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী এবং নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী ও তার স্ত্রী তারাবো পৌরসভার সাবেক মেয়র হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে ২৮৮ কোটি টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের অভিযোগ পৃথক দুটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
বুধবার (৫ মার্চ) দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি জানান, গোলাম দস্তগীর গাজীর নামে মোট ৪৪৮ কোটি ৪২ লাখ ১৭ হাজার ৩২ টাকার সম্পদের তথ্য পাওয়া যায়। এই সময়ে তার সর্বমোট গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৪২৪ কোটি ৯০ লাখ ৮৩ হাজার ৪৫০ টাকা। এক্ষেত্রে তার জ্ঞাত আয়ের উৎস বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ২৩ কোটি ৫১ লাখ ৩৩ হাজার ৫৮২ টাকা।
এছাড়া তার নিজ ও প্রতিষ্ঠানের নামে ৬টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ২৫৭ কোটি ৭৫ হাজার ৪৮৯ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করে আয়ের উৎস আড়াল করেছেন বলে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
ফলে অনুসন্ধন টিমের সুপারিশের আলোকে কমিশন গোলাম দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা তৎসহ মানিলন্ডারিং আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় একটি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে।
এছাড়া গোলাম দস্তগীর গাজীর স্ত্রী হাসিনা গাজী তার নিজ নামে ১৫ কোটি ৬৯ লাখ ৫১ হাজার ৯৩১ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন করেছেন। তার সর্বমোট গ্রহণযোগ্য আয় পাওয়া যায় ৬ কোটি ২৭ হাজার ৩৭৬ টাকা। এক্ষেত্রে তার জ্ঞাত আয়ের উৎস-বহির্ভূত সম্পদের পরিমাণ ৯ কোটি ৬৯ লাখ ২৪ হাজার ৫৫৫ টাকা।
এছাড়া হাসিনা গাজীর নিজ নামে ৫টি ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে ৩১ কোটি ৬৯ লাখ ৩৮ হাজার ৫১৩ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তর করে আয়ের উৎস আড়াল করেছেন বলে অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে।
ফলে অনুসন্ধান টিমের সুপারিশের আলোকে কমিশন হাসিনা গাজীর বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭ এর ৫(২) ধারা তৎসহ মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় একটি মামলাসহ পৃথক ২টি মামলা দায়েরের অনুমোদন দিয়েছে।
উল্লেখ্য. ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার ক্ষমতাচ্যুত হয়। ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনা ওই দিনই ভারতে গিয়ে অবস্থান করলেও আত্মগোপনে চলে যান আওয়ামী লীগের সাবেক মন্ত্রী, সাবেক এমপি ও দলটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা-কর্মী।
আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় গত ২৫ আগস্ট রাজধানীর শান্তিনগর এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গোলাম দস্তগীর গাজীকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
পরে তাকে স্কুলছাত্র রোমান মিয়া হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখায় নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থানা-পুলিশ। সেই থেকে তিনি কারাবন্দি আছেন।