পিটুনির আগে থানা থেকে লুট হওয়া পিস্তল দিয়ে ছোড়া হয় গুলি
Published: 6th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় গণপিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ যে পিস্তলটি উদ্ধার করেছে, সেটি নগরের কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া। হত্যার আগে ওই পিস্তল দিয়ে গুলি ছুড়েছিলেন নিহত ব্যক্তিদের একজন নেজাম উদ্দিন। চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) সাইফুল ইসলাম আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের উত্তরে এ কথা বলেন। রাউজানে এক ব্যবসায়ীকে গুলি করে খুনের মামলায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে জেলা পুলিশ।
গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নগরের আটটি থানা ও আটটি ফাঁড়িতে লুটপাট, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। ওই সময় ৮১৩টি অস্ত্র ও ৪৪ হাজার ৩২৪ গুলি লুট হয়। এসব অস্ত্র ও গুলির বেশির ভাগই এখনো উদ্ধার হয়নি বলে জানায় পুলিশ।
পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের অনেক অস্ত্র খোয়া গেছে। এ অস্ত্রগুলো কীভাবে কাদের কাছে গেল, সেগুলো অনেক প্রশ্নের জন্ম দেয়। অস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, আধিপত্য বিস্তার ও অভ্যন্তরীণ বিরোধের কারণে খুন হন নেজাম ও সালেক। ঘটনার দিন তাঁরা সাতটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা নিয়ে সেখানে গিয়ে ব্যবসায়ীদের অস্ত্র প্রদর্শন করেছিলেন। তাঁরা চাঁদার জন্য নিয়মিত সেখানে যেতেন বলে পুলিশ তথ্য–প্রমাণ পেয়েছে। চার থেকে পাঁচ দিন আগেও তাঁরা সেখানে গিয়ে এক ইউপি সদস্যের স্ত্রীকে থাপ্পড় মেরেছিলেন; যার কারণে জনগণের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।
পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘গণপিটুনির ঘটনায় অনেকে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কথা বলছেন। ঘটনার সময় বিশেষ একটি রাজনৈতিক দলের কোনো ব্যক্তি বা চেয়ারম্যানের উপস্থিতি ছিল কি না, প্রশ্ন তুলেছেন। আসলে আমরা কিন্তু এ ধরনের কারও উপস্থিতি খুঁজে পাইনি। এমনকি সেখানে তাঁদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের শক্ত অবস্থানও পাইনি।’
পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনার দিন নেজাম সেখানে গিয়ে অস্ত্র নিয়ে গুলি করেছিলেন। হত্যাকাণ্ডের পর সেখান থেকে যে অস্ত্রটি উদ্ধার করা হয়েছিল, সেটি সিএমপির কোতোয়ালি থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, ‘কোনো অবস্থায় ভাবার সুযোগ নেই, প্রশাসন নির্বিকার হয়ে গেছে। আমরা আমাদের মতো প্রকৃত সত্য ঘটনা উদ্ঘাটনের জন্য যা কিছু দরকার, সবকিছু করব। সে জন্য একটু সময় নিচ্ছি। প্রকৃত ঘটনা কী, সেটা আমাদের উদ্ঘাটন করা দরকার।’
পুলিশ জানায়, নিহত সালেকের বিরুদ্ধে দুটি হত্যা, বিস্ফোরকসহ পাঁচটি ও নেজামের বিরুদ্ধে একটি মামলা রয়েছে।
গত সোমবার রাতে উপজেলার এওচিয়া ইউনিয়নের ছনখোলা পশ্চিমপাড়া এলাকায় মসজিদের মাইকে ডাকাত এসেছে ঘোষণা দিয়ে দুই ব্যক্তিকে গণপিটুনি দেওয়া হয়। এতে ঘটনাস্থলেই ওই দুজন নিহত হন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের মধ্যম কাঞ্চনা এলাকার মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন (৪৫) ও একই ইউনিয়নের গুরগুরি এলাকার মোহাম্মদ সালেক (৩৫)। ঘটনায় স্থানীয় এক দোকানিসহ চার ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
জামায়াতে ইসলামীর সাতকানিয়া উপজেলার কাঞ্চনা ইউনিয়নের সেক্রেটারি জায়েদ হোছেন প্রথম আলোকে বলেন, নিহত দুজন জামায়াতের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। একটি সালিস বৈঠকের কথা বলে তাঁদের এওচিয়া এলাকায় ডেকে নিয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দুজনের মাথায় পর্যায়ক্রমে আঘাত করা হয়।
তবে জামায়াতের উপজেলা আমির মাওলানা কামাল উদ্দিন বলেন, নিহত ব্যক্তিরা জামায়াতের তালিকাভুক্ত কোনো কর্মী নন। তবে সাতকানিয়া–লোহাগাড়ায় যেহেতু জামায়াতের জনসমর্থন বেশি রয়েছে, সে হিসেবে হয়তো তাঁরাও জামায়াতকে ভালোবাসতেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক র ঘটন উপজ ল ঘটন য়
এছাড়াও পড়ুন:
মালয়েশিয়াকে উড়িয়ে সেমির লড়াইয়ে টিকে থাকল বাংলাদেশ
তেহরানে ষষ্ঠ এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় ম্যাচে আজ সন্ধ্যায় মালয়েশিয়াকে ৫২-১২ পয়েন্টে উড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। এর আগে আজই দুপুরে প্রথম ম্যাচে টুর্নামেন্টে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের কাছে বাংলাদেশ হেরেছিল ৬৪-২৩ পয়েন্টে।
মালয়েশিয়া তাদের প্রথম ম্যাচে থাইল্যান্ডের কাছে ৪৫-২৪ পয়েন্টে হেরেছে। টানা দুই হারে সেমিফাইনালের লড়াই থেকে অনেকটাই ছিটকে গেছে মালয়েশিয়া। অন্যদিকে দুই ম্যাচে এক জয়ে শেষ চারের লড়াইয়ে টিকে আছে লাল–সবুজের মেয়েরা। সাত বছর পর শুরু হওয়া এশিয়ান নারী কাবাডিতে ব্রোঞ্জ পদকের আশা নিয়ে তেহরান গেছে বাংলাদেশ।
মালয়েশিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের শুরু থেকেই নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। প্রথমার্ধে ২৭ পয়েন্ট ছিল বাংলাদেশের, মালয়েশিয়ার পাঁচ। দ্বিতীয়ার্ধেও একতরফা খেলেছে বাংলাদেশ। মালয়েশিয়া কোনোমতে দুই অঙ্কের ঘর ছুঁয়েছে।
আগামীকাল শুক্রবার গ্রুপ পর্বের তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে থাইল্যান্ডের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। বেলা দেড়টায় শুরু হবে ম্যাচটি। সাত দলের টুর্নামেন্টে ‘এ’ গ্রুপে বাংলাদেশ, ভারত, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া। ‘বি’ গ্রুপে স্বাগতিক ইরান, নেপাল ও ইরাক।
এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ পাঁচবার হয়েছে। চারবারই চ্যাম্পিয়ন ভারত। একবার দক্ষিণ কোরিয়া। ২০০৫ সালে প্রথম টুর্নামেন্ট আর ২০০৮ সালে তৃতীয় টুর্নামেন্টে খেলেছে বাংলাদেশ। প্রথমবার শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশ ব্রোঞ্জ পায়। ২০০৭, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে বাংলাদেশ অংশ নেয়নি।
ইরানের নিয়ম অনুযায়ী, নারীদের ম্যাচে কোনো পুরুষ থাকতে পারেন না। সে হিসেবে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার সুবিমল দাস (মূলত কোচ) ছিলেন অডিটরিয়ামের বাইরে। কোচ হিসেবে ডাগআউটে ছিলেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক ও বাংলাদেশের হয়ে দুটি এশিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ খেলা শাহনাজ পারভীন মালেকা।