বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে ছাত্রলীগের মারপিটে নিহত আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বেলা ১১টায় কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের রায়ডাঙ্গা গ্রামের গোরস্থানে পৌঁছান উপদেষ্টা। পরে ১১টা ৫ মিনিটে তিনি আবরার ফাহাদের কবর জিয়ারত করেন। পরে তিনি আবরারের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর ১১টা ১০ মিনিটে আবরার ফাহাদ জামে মসজিদের সম্প্রসারণ কাজের ফলক উন্মোচন করেন।

এরপর উপদেষ্টা কুষ্টিয়া শহরের কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কের পাশে অবস্থিত স্টেডিয়াম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। তিনি এ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

আরো পড়ুন:

আবু সাঈদ হত্যা মামলা সর্বোচ্চ গুরুত্ব পাচ্ছে: আইজিপি

নরসিংদীতে জুয়ার টাকা সংগ্রহে সহকর্মীকে হত্যা, ২ বন্ধু গ্রেপ্তার

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অসম চুক্তি এবং পানি আগ্রাসন নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের জেরে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শেরে বাংলা হলের আবাসিক ছাত্র ও তড়িৎ কৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আবরারকে ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর রাতে ছাত্রলীগের এক নেতার কক্ষে নিয়ে নৃশংস কায়দায় পিটিয়ে হত্যা করে সংগঠনটির ক্যাডাররা। পরে রাত ৩টার দিকে শেরেবাংলা হলের সিঁড়ি থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় দেশজুড়ে নিন্দার ঝড় বয়ে যায়। দায়ের হয় হত্যা মামলা। ওই মামলায় সব মিলিয়ে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেয় ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এরপর ২০২০ সালের ১৫ সেপ্টেম্বর মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এর মধ্যে ২০ জনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

আবরার ফাহাদ ১৯৯৮ সালে ১২ ফেব্রুয়ারি কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রায়ডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম বরকত উল্লাহ এবং মায়ের নাম রোকেয়া খাতুন। আবরার কুষ্টিয়া মিশন প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা এবং পরে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলে পড়াশোনা করেন। নটরডেম কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে পড়াশোনা শেষে ২০১৮ সালের ৩১ মার্চ আবরার বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগে পড়াশোনা শুরু করেন। আবরারের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বর্তমান বুয়েটে মেকানিক্যাল বিভাগে অধ্যায়নরত রয়েছে।
 

ঢাকা/কাঞ্চন/বকুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর আবর র ফ হ দ র ব ব আবর র ফ হ দ উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি গাড়ি ভাঙচুর, ৮০০ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা

সরকার ও উচ্চ আদালতের নির্দেশে অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছে জেলা পরিবেশ অধিদপ্তর। গত ৭ জানুয়ারি থেকে চলছে এ অভিযান। ওইদিন অভিযান শুরু করেন পরিবেশ অধিদপ্তরের মনিটরিং অ্যান্ড এনফোর্সসেন্ট উইংয়ের নির্বার্হী ম্যাজিস্ট্রেট ও সিনিয়র সহকারী সচিব আবদুল্লাহ আল মামুন।

সেদিন নকলা উপজেলার ৮ ও শেরপুর সদর উপজেলার ৩ ইটভাটাকে ৬৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে ৫ ভাটার কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু কয়েক দিন পর থেকে ফের ভাটাগুলো চালু করেন মালিকরা। এরপর গত ৬ ফেব্রুয়ারি জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর ফের অভিযান শুরু করে। এ সময় শেরপুর সদর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, যোগিনীমুরা ও পশ্চিম ঝিনিয়া এলাকার কৃষি জমিতে গড়ে ওঠা ৩টি অবৈধ ভাটাকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। সেই সঙ্গে কাঁচা ইট নষ্ট ও কিলিং গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ সময় ভাটার কার্যক্রমও বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়। সবশেষ ২ মার্চ পৌর শহরের মোবারকপুর এলাকার দুই ভাটাকে ৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয় এবং ভাটার চিমনি ভেঙে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় ক্ষুব্ধ ছিলেন ইটভাটা মালিকরা। এ অবস্থায় গত মঙ্গলবার পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, একেকটি ইট ভাটায় প্রতিদিন শতাধিক শ্রমিক কাজ করেন। ভাটার বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করায় মালিকদের ক্ষোভের পাশাপাশি কিছুদিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষও তৈরি হয়। কারণ, দিনমজুরি করে যারা জীবিকা নির্বাহ করতেন তাদের আয় বন্ধ হয়ে গেছে। এ সুযোগ কাজে লাগায় কিছু ভাটা মালিক। তারা নিজেদের স্বার্থে শ্রমিক অসন্তোষকে উস্কে দেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার জেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তরের তরফ থেকে ইটভাটায় অভিযানের প্রস্তুতি নেওয়া হয়। এ খবর চাউর হলে কয়েকটি ভাটার শ্রমিকরা জড়ো হন শহরের খোয়ারপাড় শাপলা চত্বর এলাকায়। সেখান দিয়ে শেরপুরের তিন উপজেলা, রৌমারী, রাজিবপুর ও বকশীগঞ্জ উপজেলার লোকজন যাতায়াত করেন। সেখানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন ইটভাটার শ্রমিকরা। বিক্ষোভ চলাকালীন পরিবেশ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি গাড়ি খোয়ারপাড় মোড় দিয়ে যাচ্ছিল। হঠাৎ এ গাড়িতে হামলা ভাঙচুর চালান উত্তেজিত শ্রমিকরা। এরপর মিছিল নিয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে স্মারকলিপি দেন তারা।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাটি নিয়ে জেলায় তোলপাড় শুরু হয়। গতকাল বুধবার সকালে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে সরকারি কাজে বাধা দেওয়া এবং সরকারি গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করা হয়েছে। আসামি করা হয়েছে ১২ ইটভাটার মালিককে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে ৭০০-৮০০ জনকে।

মামলার সত্যতা নিশ্চিত করে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সুশীল কুমার দাস জানান, ভ্রাম্যমাণ আদালতের গাড়ি ভাঙচুর এবং সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার ঘটনায় এ মামলা হয়েছে।

তবে ইটভাটা মালিক সমিতির সভাপতি আব্দুল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক শাকিল আহমেদ বলেন, ‘গাড়ি ভাঙচুরের ঘটনাটি দুঃখজনক। শ্রমিকরা কিছু না বুঝেই এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এর সঙ্গে মালিকরা জড়িত নন; বরং আমরা শ্রমিকদের শান্ত করতে তাদের সঙ্গে ছিলাম। এটা সবাই জানেন।’

পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, সরকারি কাজে বাধাদান এবং গাড়ি ভাঙচুরে জড়িতদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। কেউ আইন অমান্য করলে তাকে শাস্তি পেতে হবে।

জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমানের ভাষ্য, ভ্রাম্যমাণ আদালতের ওপর হামলা ন্যক্কারজনক ঘটনা। মামলার গতিতে মামলা চলবে। সেই সঙ্গে হাইকোর্টের নির্দেশনা পালনে অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • অস্ত্র ঠেকিয়ে তিন অটোরিকশাচালক ও শ্রমজীবীর ঘরে ডাকাতি
  • নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়ক থেকে ট্রাক ঢুকে গেল দুই দোকানে, এরপর যা হলো
  • ঋণখেলাপি মামলায় আহসান গ্রুপের চেয়ারম্যান শহিদুল আহসানের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি
  • তারা কেন দুটো করে ঘড়ি পরেন?
  • বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ৫৬ জেলেকে ধরে গিয়ে গেছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী
  • সরকারি গাড়ি ভাঙচুর, ৮০০ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা
  • এনআইডির তথ্য বিক্রির মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব জিয়াউল গ্রেপ্তার
  • আলাদাভাবে ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষা চান ১৫০০ মেডিকেল শিক্ষার্থী
  • নকল করায় নোবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার