থানার ভিতরে ‘গ্যাং স্টার’ স্টাইলে ছবি কিশোর গ্যাংয়ের
Published: 6th, March 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরা থানার ভিতরে ফিল্মি কায়দায় মাফিয়া গ্যাং স্টাইলে কয়েকজন যুবকের বেপরোয়া আচরণের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়েছে।
বুধবার (৫ মার্চ) প্রকাশিত ছবিগুলোতে দেখা যায়, কয়েকজন যুবক রাতে একটি মাইক্রোবাসের সামনে ও ছাদে উঠে বিভিন্ন অঙ্গভঙ্গি করে ছবি তুলেছে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ মাইক্রোবাসের দরজা খুলে, কেউবা ছাদে দাঁড়িয়ে, আবার কেউ গুণ্ডা-বখাটে ধাচের ভঙ্গিতে পোজ দিয়েছে।
এ ঘটনা সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করেছে। অনেকে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্তব্য করেছেন। তারা মন্তব্য করেছেন- “রায়পুরা থানা কি কিশোর গ্যাংয়ের দখলে?” আবার কেউ কেউ এটিকে চরম বেপরোয়া মনোভাবের প্রতিফলন বলে উল্লেখ করেছেন।
জানা গেছে, রমজানের প্রথম দিন রোববার (২ মার্চ) সন্ধ্যায় রায়পুরা উপজেলার মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো.
ছবিতে ৭ জন যুবককে লক্ষ্য করা যায়। তাদের বয়স আনুমানিক ১৭ থেকে ২০ বছর হবে। বুধবার (৫ মার্চ) মাফিয়া ভঙ্গিমায় তোলা ছবিগুলো টিকটিকে আপলোড করে তারা। পরে এটি নেটিজেনদের নজরে এলে ফেসবুক জুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে।
মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. আরমান মিয়া বলেন, “প্রথম রমজানের দিন ইফতারের পরে আমি রায়পুরা থানাতে যাই একটি বিষয় নিয়ে। আমি থানাতে যাওয়ার পর তারা এই মাইক্রোবাস নিয়ে থানায় আসে ফুটবল খেলার অতিথি করার বিষয়ে আলোচনা করার জন্য। আমি তখন তাদের সাথে এই ব্যাপারে কথা বলি কিন্তু কোন সময় তারা এই অঙ্গভঙ্গি দিয়ে ছবি তুলেছে তা আমি দেখিনি। তারা এসব ছবি তুলেছে টিকটকে দেওয়ার জন্য।”
তিনি আরও বলেন, “ছেলেগুলো খুব ভালো। কেউ কেউ ব্যবসা করে। আর কেউ কেউ ছাত্রদলের রাজনীতির সাথে জড়িত। উপজেলার অলিপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আল-আমিন ভূইয়া মাসুদের সাথে আমার ব্যবসায়িক কিছু লেনদেন আছে এবং আমি তাদের কিছু অনিয়মের কাজে বাধা প্রদান করায়, তাদের কিছু আওয়ামী মাইন্ডের লোকেরা কারসাজি করে ফাঁসানোর জন্য এই কাজগুলো করেছে। তবে ছেলেগুলো খুবই ভালো, তারা কোনো অবৈধ কাজের সাথে জড়িত নয়।”
রায়পুরা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আদিল মাহমুদ বলেন, “বিষয়টি আমরাও আজকে সাংবাদিকদের মাধ্যমেই জানতে পেরেছি। ওই দিন মরজাল ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান আরমান মিয়া থানায় একটি আইনি কাজে এসেছিলেন। উনার কাছেই ছেলেগুলো এসেছিল। উনাকে ডেকে এনে কথা বলার পর উনার মাধ্যমেই দুই একজনের পরিচয় সনাক্ত করতে পেরেছি। পরে তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে, তারা এগুলো টিকটকের জন্য করা হয়েছে বলে জানায়।”
তিনি আরো বলেন, “এটা আমরা নিজেরাও তদন্ত করছি, কীভাবে তুলল, এই সুযোগটাই কীভাবে পেলো? আমাদের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখছি, প্রযুক্তির সকল টেকনোলজি ব্যবহার করে আমরা হার্ডলাইনে কাজ করছি। পরবর্তীতে যেন এই ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে।”
ঢাকা/হৃদয়/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইউন য ন র আরম ন ম য র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারো অভিযান চালানোর অধিকার নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
ঈদে সড়কে চাঁদাবাজি, ছিনতাই রোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়া কারো অভিযান চালানোর কোনো অধিকার নেই। মব জাস্টিসের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টি জরুরি। কোথাও এ ধরনের ঘটনা ঘটলে, সঙ্গে সঙ্গে তাদের আইনের আওতায় নিয়ে আসা হচ্ছে।’’
বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর তোপখানা রোডে ট্যুরিস্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘‘মব জাস্টিসের বিষয়ে জনসচেতনতা সৃষ্টিতে গণমাধ্যমেরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ঈদ উপলক্ষে যেন সড়কে চাঁদাবাজি, ছিনতাই না হয় সেজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’’
জনবল ঘাটতিসহ ট্যুরিস্ট পুলিশের সমস্যাসমূহ সমাধানের মাধ্যমে এটিকে আরো সক্রিয় করা গেলে পর্যটন খাত তথা দেশের সার্বিক অর্থনীতিতে এটি বড় অবদান রাখবে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, ‘‘ট্যুরিস্ট পুলিশ ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও তাদের জনবলের অনেক ঘাটতি রয়েছে। তাদের নিজস্ব কোনো থাকার জায়গা নেই। যানবাহনের সমস্যাসহ আরো কিছু সমস্যা রয়েছে।’’
তিনি বলেন, ‘‘ট্যুরিস্ট পুলিশ সদর দপ্তর একটা ভাড়া ভবনে অফিস পরিচালনা করছে। তাদের নিজস্ব ভবন দরকার। তা সত্ত্বেও তারা কিছু ভালো কাজ করছে। সমস্যাগুলোর সমাধানের মাধ্যমে ট্যুরিস্ট পুলিশকে আরো সক্রিয় করা গেলে অনেক বেশি বিদেশি পর্যটক আমাদের দেশে আসবে।’’
‘‘ট্যুরিস্ট পুলিশের সংখ্যা অনেক কম হলেও ট্যুরিস্ট স্পটের সংখ্যা অনেক বেশি। তাই তাদের জনবল বাড়ানো দরকার’’ বলেও মনে করেন তিনি।
এর আগে, উপদেষ্টা ট্যুরিস্ট পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং প্রয়োজনীয় দিকনির্দেশনা প্রদান করেন।
এতে সভাপতিত্ব করেন ট্যুরিস্ট পুলিশ প্রধান ও অতিরিক্ত আইজিপি মাইনুল হাসান। সভায় ট্যুরিস্ট পুলিশের কার্যক্রমের ওপর একটি পাওয়ার-পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করা হয়।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এনএইচ