অস্থিরতার কারণে চলতি বছর নির্বাচন অনুষ্ঠান কঠিন হবে: নাহিদ
Published: 6th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জননিরাপত্তা পুরোপুরি নিশ্চিত করতে পারেনি এবং চলতি বছর সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠান করা কঠিন হবে। নতুন প্রতিষ্ঠিত রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন। বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশিত হয়েছে।
গত বছরের আগস্টে ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণবিক্ষোভে ক্ষমতাচ্যুত হন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। নোবেল বিজয়ী ড.
নাহিদ ইসলাম বলেন, “স্বল্পমেয়াদী সংস্কার কিছুটা হলেও ঘটেছে, কিন্তু আমাদের প্রত্যাশা অনুযায়ী নয়। বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং পুলিশিং ব্যবস্থায়, আমি মনে করি না যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।”
সম্প্রতি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে সরে দাঁড়িয়েছিলেন নাহিদ ইসলাম। তিনিই প্রথম গুরুত্বপূর্ণ রাজনীতিবিদ যিনি ড. ইউনূসের নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বলে মন্তব্য করেছে রয়টার্স।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে, তার যুব নেতৃত্বাধীন দলটি জাতীয় রাজনীতিকে উল্লেখযোগ্যভাবে পুনর্গঠন করতে পারে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে কয়েক দশক ধরে হাসিনার আওয়ামী লীগ এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল আধিপত্য বিস্তার করেছিল। এই দলগুলো আগাম নির্বাচনের দাবি জানিয়েছে। তাদের যুক্তি হচ্ছে, ক্ষমতা গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া উচিত।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর অস্থিরতার ঘটনাগুলোর মধ্যে রয়েছে হাসিনার সরকারের প্রতীকগুলোতে আক্রমণ এবং ছাত্র গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে সংঘর্ষ। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটিতে হিন্দু এবং অন্যান্য সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং মন্দিরে হামলার খবরও পাওয়া গেছে, যদিও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বলেছে যে এই প্রতিবেদনগুলো অতিরঞ্জিত।
নাহিদ ইসলাম জানান, গত সপ্তাহে গঠিত এনসিপি যেকোনো সময় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত রয়েছে।
তবে তিনি জানান, নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার আগে, ‘জুলাই বিপ্লবের ঘোষণাপত্র’ - যা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার রাজনৈতিক দল এবং ছাত্রকর্মীদের সাথে পরামর্শ করে প্রস্তুত করার পরিকল্পনা করছে - এর উপর ঐকমত্য অর্জন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
এই নথিটি বাংলাদেশের জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন এবং গত বছরের সহিংসতায় নিহত এক হাজার জনের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তৈরি করা হয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঘোষণাপত্র প্রস্তুত করার কথা বলার পর, ছাত্র বিক্ষোভকারীরা সংবিধান পরিবর্তনের আহ্বান প্রত্যাহার করে নেয়।
নাহিদ বলেন, “যদি আমরা এক মাসের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারি, তাহলে আমরা অবিলম্বে নির্বাচনের ডাক দিতে পারি। কিন্তু যদি আরো সময় লাগে, তাহলে নির্বাচন স্থগিত করা উচিত।”
এনসিপি প্রধান জানান, বাংলাদেশের অনেক ধনী ব্যক্তি তার দলের অর্থায়নে সহায়তা করছেন। শিগগিরই তারা একটি নতুন অফিসের জন্য এবং নির্বাচনের জন্য তহবিল তৈরির চেষ্টা করবেন।
ঢাকা/শাহেদ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন হ দ ইসল ম র জন ত ক সরক র র
এছাড়াও পড়ুন:
তিন মাসে ২ লাখ কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণ কর্মসূচির শর্ত অনুযায়ী চলতি অর্থবছরে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে (এনবিআর) ৪ লাখ ৫৫ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে। গত মার্চ পর্যন্ত ৯ মাসে ২ লাখ ৫২ হাজার কোটি টাকা আহরণ হয়েছে। অর্থাৎ বাকি প্রায় তিন মাসে ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করতে হবে। একই সঙ্গে ২০২৫-২৬ অর্থবছরে সংস্থাটিকে অতিরিক্ত ৫৭ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা দেওয়া হয়েছে।
এসব বিষয় নিয়ে গতকাল সোমবার এনবিআর কার্যালয়ে সংস্থাটির চেয়ারম্যানসহ আলাদাভাবে কাস্টমস, আয়কর ও ভ্যাট অনুবিভাগের সঙ্গে বৈঠক করেন সফররত আইএমএফ প্রতিনিধি দলের সদস্যরা। বৈঠকে দেশের বর্তমান বাস্তবতায় তিন মাসে ২ লাখ ৩ হাজার কোটি টাকা আদায় করা ‘অসম্ভব’ বলে জানিয়ে এনবিআরের পক্ষ থেকে লক্ষ্যমাত্রা কমানোর প্রস্তাব করা হলেও আইএমএফ প্রতিনিধি দল তা নাকচ করে দিয়েছে। এনবিআরের এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, এসব বিষয়ে আবার বুধবার এনবিআরের তিন অনুবিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসবে প্রতিনিধি দল। শর্ত পূরণ ছাড়া এবং তাদের সঙ্গে সঠিকভাবে দরকষাকষি না করা গেলে ঋণের বাকি অর্থ ছাড় বন্ধ করে দেওয়ার শঙ্কা রয়েছে। তাই এনবিআরের পক্ষ থেকে শর্ত শিথিলের সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
রাজস্ব আদায়ে আইএমএফের প্রস্তাবনার মধ্যে রয়েছে– বিলাসী পণ্যে সম্পূরক শুল্ক বাড়ানো, বিভিন্ন খাতে যেসব কর অব্যাহতি রয়েছে, তা বাদ দেওয়া এবং সব পণ্য ও সেবায় ১৫ শতাংশ একক ভ্যাট আরোপ করা।
আইএমএফের সঙ্গে চলমান ঋণচুক্তির চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি ছাড়ের আগে বাংলাদেশ কতটা শর্ত পূরণ করেছে, তা পর্যালোচনায় ঢাকা সফর করছে প্রতিনিধি দলটি। এ দুই কিস্তির জন্য গত ডিসেম্বর পর্যন্ত কর রাজস্বের যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল, তার চেয়ে অনেক পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ।