জ্ঞাত আয়বহির্ভূত প্রায় ১০ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ও তাঁর স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশির বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে পৃথক দুটি মামলা করা হয়।

ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে সংস্থাটির মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, জ্ঞাত আয়বহির্ভূত ৫ কোটি ৯০ লাখ ২৭ হাজার ৬১২ টাকার সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। তাঁর ১১টি ব্যাংক হিসাবে ৩২ কোটি ১৮ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ টাকার সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে।

দুদকের মহাপরিচালক মো.

আক্তার হোসেন আরও বলেন, ৪ কোটি ১৮ লাখ ২৩ হাজার ৭৩০ টাকার জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে টিপু মুনশির স্ত্রী আইরিন মালবিকা মুনশির বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তাঁর দুই মেয়ে তানিয়া অনন্যা মুনশি ও তৃষা মুনশির বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

টিপু মুনশিকে গত বছরের ২৯ আগস্ট রাজধানীর গুলশান এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মসূচি চলাকালে গুলিবিদ্ধ হয়ে শ্রমিক মুসলিম উদ্দিন মিলন নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গুলশান–১–এর একটি বাসা থেকে টিপু মুনশিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তৈরি পোশাক খাতের ব্যবসায়ী থেকে রাজনীতিতে নামা টিপু মুনশি রংপুর–৪ আসনের (পীরগাছা–কাউনিয়া) সাবেক সংসদ সদস্য। ২০১৮ সালে ওই আসন থেকে টানা তৃতীয় মেয়াদে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন তিনি। সেবার আওয়ামী লীগ টানা তৃতীয় মেয়াদে সরকার গঠন করলে বাণিজ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পান টিপু মুনশি।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা আমানের আপিলের ওপর রায় ৩০ এপ্রিল

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপি নেতা আমান উল্লাহ আমানের ১৩ বছরের কারাদণ্ড এবং তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানের ৩ বছরের কারাদণ্ডের বিরুদ্ধে করা আপিল ও লিভ টু আপিলের ওপর আগামী ৩০ এপ্রিল রায় দেবেন আপিল বিভাগ।

আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ শুনানি শেষে আজ মঙ্গলবার রায়ের এ দিন নির্ধারণ করেন।

আদালতে আমানের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম মাহবুব উদ্দিন খোকন, সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী নাজমুল হুদা। দুদকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী আসিফ হাসান।

পরে আইনজীবী নাজমুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, আমান উল্লাহ আমানের আপিল ও তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানের লিভ টু আপিলের ওপর রায়ের জন্য আগামী ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ।

সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলায় আপিলের ওপর পুনঃশুনানি শেষে ২০২৩ সালের ৩০ মে হাইকোর্ট আমান উল্লাহ আমানকে বিচারিক আদালতের দেওয়া ১৩ বছর এবং তাঁর স্ত্রী সাবেরা আমানকে দেওয়া ৩ বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে রায় দেন। হাইকোর্টের রায়ের অনুলিপি বিচারিক আদালত গ্রহণের ১৫ দিনের মধ্যে আমান উল্লাহ আমান ও সাবেরা আমানকে সংশ্লিষ্ট আদালতে আত্মসমর্পণ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। একই বছরের ৭ আগস্ট পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। ২০২৩ সালের ১০ সেপ্টেম্বের আত্মসমর্পণের পর আমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার বিশেষ জজ-১ আদালত।

এর আগে সাবেরা আমান একই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিন বছর কারাদণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে তিনি লিভ টু আপিল করেন এবং জামিন চান। ২০২৩ সালের ৪ সেপ্টেম্বর চেম্বার আদালত থেকে জামিন পান তিনি। অন্যদিকে আত্নসমর্পণের পর হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন আমান উল্লাহ আমান। ২০২৪ সালের ১৪ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানের লিভ টু আপিল মঞ্জুর করেন। এরপর তিনি নিয়মিত আপিল করে জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি নিয়ে গত বছরের ২০ জানুয়ারি আপিল বিভাগ আমানকে জামিন দেন।

দণ্ড বহাল রেখে হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে ২০২৪ সালে আমানের করা আপিলের সঙ্গে তাঁর স্ত্রীর ২০২৩ সালে করা লিভ টু আপিল একসঙ্গে শুনানির জন্য আপিল বিভাগের কার্যতালিকায় ওঠে। এর ধারাবাহিকতায় আজ শুনানি শেষে আপিল বিভাগ রায়ের জন্য ৩০ এপ্রিল দিন ধার্য করেন।

এর আগে সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছরের এবং সাবেরাকে ৩ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। এ রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা হাইকোর্টে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল মঞ্জুর করে তাঁদের খালাস দেন। এর বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় বাতিল ঘোষণা করেন। একই সঙ্গে হাইকোর্টে আপিল পুনঃশুনানির নির্দেশ দেওয়া হয়। আপিল বিভাগের এ রায় রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) চেয়ে আবেদন করেন আমান। পরে তা খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ। পুনঃশুনানি শেষে বিচারিক আদালতের দণ্ড বহাল রেখে ২০২৩ সালের ৩০ মে হাইকোর্ট রায় দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নজরুল ইসলাম মজুমদারের ছয় বাড়ি, আট প্লট জব্দের আদেশ
  • এক ইউপি চেয়ারম্যানের ৪৯ ব্যাংক হিসাব, লেনদেন ১৪,৩৭৬ কোটি টাকা
  • অবৈধ সম্পদ : স্ত্রীসহ সাবেক মন্ত্রী দস্তগীর গাজীর বিরুদ্ধে মামলা
  • দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতা আমানের আপিলের ওপর রায় ৩০ এপ্রিল