ফেসবুকে নিজের গলায় লুঙ্গি দিয়ে ফাঁস দেওয়ার ভঙ্গিমায় ছবি প্রকাশ করেছিলেন সৌরভ হাসান ওরফে দিপু (১৯)। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর নিজ ঘর থেকে তাঁর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের সিংগারদিঘী উত্তরপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। সৌরভ হাসান ওই গ্রামের শাহীন মিয়ার ছেলে। তিনি শ্রীপুরের পিয়ার আলী কলেজের একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন।

এর আগে আজ সকাল ১০টা ২৫ মিনিটে সৌরভ নিজের ফেসবুক নিউজফিডে লুঙ্গি দিয়ে ফাঁসের ভঙ্গিতে একটি ছবি প্রকাশ করেন। তবে এতে কোনো ক্যাপশন বা লেখা ছিল না। এর প্রায় এক ঘণ্টা পর তাঁর লাশ উদ্ধার হয়।

সৌরভের ফেসবুক আইডিতে দেখা যায়, এর আগে গতকাল বুধবার বিকেল ৪টা ২৫ মিনিটে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলেন তিনি। ৫৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও প্রকাশ করে ক্যাপশনে লিখেছিলেন, ‘সাদের (স্বাদ) জীবন নষ্ট করলাম শুধু তোর জন্য। তুই ভালো থাক, দোয়া করি আল্লাহ তরে অনেক ভালো রাখুক।’ এ ছাড়া একই দিন বেলা ২টা ৩৯ মিনিটে তিনি ফেসবুকের প্রোফাইল পিকচার পরিবর্তন করে ক্যাপশনে লেখেন, ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। শেষ পিক। হয়তো আর কোনো দিন প্রফাই (প্রোফাইল ছবি) চেঞ্জ করব না। ভালো থাকুক সবাই, আল্লাহ হাফেজ।’

সৌরভের নানা খুবসুর মিয়া জানান, বছরখানেক আগে গ্রামের এক মেয়ের সঙ্গে সৌরভের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মেয়েটিকে সৌরভ বিয়েও করেন। পরে মেয়ের বাড়ির লোকজনের চাপাচাপিতে দুজনের বিচ্ছেদ হয়। এর পর থেকে সৌরভ বিমর্ষ থাকতেন। সৌরভ কলেজে ভর্তি হলেও নিয়মিত ক্লাসে অংশ নিতেন না, বেশির ভাগ সময় বাড়িতেই থাকতেন। কিন্তু আজ কেন এ ঘটনা ঘটিয়েছেন, তা বুঝতে পারছেন না।

পাভেল নামের সৌরভের এক প্রতিবেশী জানান, ফেসবুকে সৌরভের গলায় ফাঁস নেওয়া স্ট্যাটাসটি দেখে লোকজন তাঁর বাড়িতে বিষয়টি জানান। এ সময় তাঁর ঘরের দরজাটি ভেতর থেকে বন্ধ পাওয়া যায়। সাড়া না পেয়ে পাশের কক্ষ থেকে টিনশেড বেড়া ডিঙিয়ে সৌরভের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পাওয়া যায়। পরে ঘরে প্রবেশ করে তাঁর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

এ খবর শুনে সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছে বলে জানান শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জয়নাল আবেদীন মণ্ডল। তিনি বলেন, এ ঘটনায় পরবর্তী আইনগত কার্যক্রম চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ সব ক মরদ হ

এছাড়াও পড়ুন:

ডিলারের ট্রলি থামিয়ে চাল লুট, বিএনপি নেতার পদ স্থগিত

যশোরের শার্শায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির এক ডিলারের ১৫৫ বস্তা চাল লুটের অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনার জন্য উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও কায়বা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস ও তার ভাই ইবাদুল ইসলাম কালুকে দায়ী করেন ভুক্তভোগী।

গতকাল বুধবার এ ঘটনার পর প্রশাসনের চাপে চাল ফেরত দেন তারা। তবে রাতেই যশোর জেলা বিএনপি রুহুল কুদ্দুসের দলীয় পদ স্থগিত করে।

অভিযোগকারী শাহজাহান কবির কায়বা ইউনিয়নের ১, ২ ও ৩ নম্বর ওয়ার্ডের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চালের ডিলার। তার ভাষ্য, বুধবার সকালে বাগআঁচড়া খাদ্যগুদাম থেকে চাল নিয়ে কয়েকটি ট্রলি তার ডিলার পয়েন্টের উদ্দেশে পাঠান। পথে বাগআঁচড়া বকুলতলায় পৌঁছালে বিএনপি নেতা ও সাবেক চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুসের নেতৃত্বে তার ভাই ইবাদুল ইসলাম কালু ট্রলিগুলোর গতিরোধ করেন। তারা চালককে জিম্মি করে ১৫৫ বস্তা চাল নিজেদের গুদামে নামিয়ে রাখেন। এ বিষয়ে জানতে তিনি রুহুল কুদ্দুসের নম্বরে কল দিলে তিনি (রুহুল) পাল্টা গালাগাল ও হুমকি-ধমকি দেন। বিষয়টি তিনি প্রশাসনকে জানান। তাদের চাপে দেড় ঘণ্টার পর চাল ফেরত পেয়েছেন।

ইবাদুল ইসলাম কালু দাবি করেন, তিনি ডিলার শাহজাহান কবিরের কাছে টাকা পাবেন। তাই ট্রলি আটকে চাল নামিয়ে রেখেছেন। তবে ডিলার শাহজাহান কবির বলেন, ইবাদুলের দাবির কোনো ভিত্তি নেই।

বিএনপি নেতা রুহুল কুদ্দুসের ভাষ্য, অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। আমি কোনো চাল লুট করিনি। আমার ভাই ডিলারের কাছে টাকা পাবে। তাই ট্রলি আটকে রেখেছিল। পরে চাল ফেরত দেওয়া হয়েছে।

শার্শা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম রবিউল ইসলাম বলেন, তাঁকে ইউএনও চাল উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে বলেন। এর পরপরই জানতে পারেন, চালের ট্রলিগুলো ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। থানায় লিখিত অভিযোগ করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শার্শার ইউএনও কাজী নাজিব হাসান জানান, বিষয়টি শুনেই তিনি শার্শা থানার ওসিকে চাল উদ্ধারে ব্যবস্থা নিতে বলেন।

এদিকে চাল লুটের অভিযোগ ওঠার পর রুহুল কুদ্দুসের দলীয় পদ স্থগিত করে বিএনপি। বুধবার রাতে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন খোকন সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ