ইউআইইউর স্প্রিং–২০২৫ শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ
Published: 6th, March 2025 GMT
বেসরকারি ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (ইউআইইউ)–তে স্প্রিং–২০২৫–এর আন্ডারগ্র্যাজুয়েট ও পোস্টগ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে তিনটায় রাজধানীর ইউআইইউ খেলার মাঠে এই নবীনবরণ অনুষ্ঠিত হয়।
স্কুল অব বিজনেস অ্যান্ড ইকোনমিকস, স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, স্কুল অব হিউম্যানিটিজ অ্যান্ড সোশ্যাল সায়েন্সেস ও স্কুল অব লাইফ সায়েন্সেসের সদ্য ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা এতে অংশ নেন। নবীনবরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইউনাইটেড ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির উপাচার্য মো.
প্রধান অতিথি মো. আবুল কাশেম মিয়া বলেন, শিক্ষার্থীদের ক্লাসে নিয়মিত উপস্থিতি, পড়াশোনায় মনোযোগী হওয়া এবং নিজেকে সফল ও বিশ্বমানের দক্ষ মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে নানামুখী দক্ষতা অর্জন করতে হবে। এ ছাড়া শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পাশাপাশি গবেষণার দিকে বিশেষ নজর দেওয়ার আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. জুলফিকার রহমান বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক নিয়মাবলি তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইউআইইউর এক প্রাক্তন শিক্ষার্থী ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো বাংলাদেশের ট্রেড অ্যানালিটিকস এক্সিকিউটিভ ফাবিয়া শাহজাদী, এক অভিভাবক ও এক নবাগত শিক্ষার্থী। ইউআইইউ কালচারাল ক্লাবের একটি মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক পরিবেশনার মধ্য দিয়ে নবীনবরণ অনুষ্ঠান শেষ হয়।
আরও পড়ুন৪৮ জেলায় ফ্রিল্যান্সিং প্রশিক্ষণ, এইচএসসি পাস ১৮-৩৫ বয়সীর সুযোগ, ভাতা দৈনিক ২০০২ ঘণ্টা আগেনবীনবরণ অনুষ্ঠানে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের প্রধান, পরিচালক, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও অভিভাবকেরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রপতির সম্মতি, ওয়াক্ফ বিল আইনে পরিণত
ভারতের সংখ্যালঘু মুসলিমদের বিক্ষোভ এবং বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর তীব্র আপত্তির মধ্যেই ওয়াক্ফ (সংশোধনী) বিলে সম্মতি দিয়েছেন দেশটির রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। এর মধ্য দিয়ে বিতর্কিত বিলটি আইনে পরিণত হলো।
গত শনিবার আইন মন্ত্রণালয়ের নোটিশে বলা হয়, ওয়াক্ফ (সংশোধনী) বিল ২০২৫ এবং মুসলমান ওয়াক্ফ (রহিতকরণ) বিল ২০২৫ দুটি বিলেই সম্মতি দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি। পার্লামেন্টের বাজেট অধিবেশনে বিল দুটি পাস হয়।
গত বুধবার গভীর রাতে বিতর্কিত ওয়াক্ফ বিল পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ লোকসভায় পাস হয়। বিলের পক্ষে ২৮৮ আর বিপক্ষে ২৩২টি ভোট পড়ে। পরদিন উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় বিলটি ১২৮–৯৫ ভোটে পাস হয়।
দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস–এর প্রতিবেদনে বলা হয়, কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘুবিষয়ক মন্ত্রী কিরেণ রিজিজু ওয়াক্ফ (সংশোধনী) বিল উত্থাপনের পরপরই এ নিয়ে লোকসভা অধিবেশন উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এনডিএর নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকারের তীব্র সমালোচনা করেন লোকসভায় কংগ্রেসের উপনেতা গৌরব গগৈ। তিনি বলেন, এই বিল সংবিধানের মৌলিক কাঠামোর ওপরে আঘাত। এর মাধ্যমে সরকার সংবিধান দুর্বল, সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মর্যাদাহানি, ভারতীয় সমাজকে বিভক্ত ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে ভোটাধিকারবঞ্চিত করতে চায়।
তবে ওয়াক্ফ বিল পাসের ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে মন্তব্য করেন বিজেপি সরকারের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে তিনি বলেন, এটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উপকারে আসবে, যারা নিজেদের চাওয়া ও সুবিধা উভয় থেকেই বঞ্চিত।
এই বিলের সমালোচনা করে গত বৃহস্পতিবার সকালে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী সংসদীয় দলের বৈঠকে বলেন, দেশকে বিজেপি ক্রমেই এক গভীর খাদের কিনারে দাঁড় করাচ্ছে। বারবার তারা সংবিধানের অমর্যাদা করছে।
লক্ষ্য ওয়াক্ফ সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ
দৃশ্যত ওয়াক্ফ সম্পত্তির নিয়ন্ত্রণ নিতেই এই বিল পাস করা হয়েছে। ওয়াক্ফ বিলের সবচেয়ে বিতর্কিত ধারাগুলোর একটি হলো, এখানে একজন অমুসলিমকে ওয়াক্ফ বোর্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বিতর্কিত ধারা অনুযায়ী রাজ্যগুলোর ওয়াক্ফ বোর্ডে নিজ নিজ রাজ্য সরকার অন্তত দুজন অমুসলিমকে নিয়োগ দিতে পারবে। একজন জেলা প্রশাসক (ডিসি) বিতর্কিত সম্পত্তিকে ওয়াক্ফ হিসেবে নির্ধারণ বা সরকারের মালিকানায় হস্তান্তর করার ক্ষমতা পাবেন।
প্রসঙ্গত, ওয়াক্ফ সম্পত্তি হলো সেই স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি, যা আল্লাহর নামে নিবেদিত। পুরোনো আইন অনুযায়ী, কোনো সম্পত্তি ওয়াক্ফ ঘোষণার একমাত্র অধিকারী ছিল ওয়াক্ফ বোর্ড। নতুন বিলে সেই অধিকার দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক বা সমপদমর্যাদার কোনো সরকারি কর্মকর্তাকে।
ভারতে ওয়াক্ফ আইন প্রথম পাস করা হয় ১৯৫৪ সালে। ১৯৯৫ সালে সেটি সংশোধন করে ওয়াক্ফ বোর্ডের ক্ষমতা বৃদ্ধি করা হয়। সেই থেকে বিজেপির অভিযোগ, ওয়াক্ফর বিপুল সম্পত্তি একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠী ভোগ করছে।
তীব্র প্রতিক্রিয়া
এদিকে ওয়াক্ফ বিল পাস হতে না হতেই সুপ্রিম কোর্টে এর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি মুসলিম সংগঠন থেকে মামলা করা হয়। সেই সঙ্গে অল ইন্ডিয়া মুসলিম পারসোনাল ল বোর্ড জানিয়েছে, এই আইনের বিরুদ্ধে তারা দেশজুড়ে আন্দোলন শুরু করবে। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গসহ দেশটির বিভিন্ন রাজ্যে বিক্ষোভ হয়েছে।
পার্লামেন্টের উভয় কক্ষে বিলটি পাস হওয়ার পর গত শুক্রবার বিরোধী দল কংগ্রেস জানায়, তারা সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করবে। ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গেই লোকসভার দলীয় নেতা মুহাম্মদ জাভেদ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। একই দিনে মামলা করেন অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিনের (এআইএমআইএম) প্রধান ও লোকসভার সদস্য আসাউদ্দিন ওয়েইসি। তাঁরা দুজনেই ওয়াক্ফ বিল নিয়ে গঠিত সংসদের যৌথ কমিটির (জেডিসি) সদস্য ছিলেন।
জাভেদ তাঁর আবেদনে বলেন, হিন্দু ও শিখদের ধর্মীয় ট্রাস্ট স্বনিয়ন্ত্রিত, অথচ ওয়াক্ফে সরকার সরাসরি হস্তক্ষেপ করছে। অমুসলিমদের সদস্য করা হচ্ছে। এই রীতি অন্য ধর্মের ক্ষেত্রে কিন্তু নেই।
ওয়াক্ফ বিল সমর্থন করায় বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমারের দল জেডিইউতে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুই দিনে পাঁচ নেতা তাঁর দল ত্যাগ করেছেন। ওই পাঁচ নেতার মধ্যে চারজন মুসলিম হলেও একজন হিন্দু। রাজু নায়ার নামে ওই হিন্দু নেতা তাঁর পদত্যাগপত্রে লিখেছেন, ‘দলের ভূমিকায় আমি হতাশ। এটি আরেকটি কালা আইন। মুসলিমদের ওপর অত্যাচার ও অবিচার এতে আরও বাড়বে।’