জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৬ সালে ওয়ানডে অভিষেক হয় মুশফিকুর রহিমের। বুধবার ১৯ বছরের ওই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ইতি টেনেছেন ডানহাতি ৩৮ বছর বয়সী এই ব্যাটার। ২৭৪ ওয়ানডে ক্যারিয়ারে দারুণ কিছু মূহুর্ত ভক্তদের উপহার দিয়েছেন তিনি। যার কিছু তুলে ধরা হলো-
শচীনের শততম সেঞ্চুরি পণ্ড: বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত ২০১২ সালের এশিয়া কাপে বাংলাদেশের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের শততম সেঞ্চুরি করেন শচীন টেন্ডুলকার। কিন্তু উৎসব করতে পারেনি তার দল। কারণ ২৯০ রান তাড়া করতে নেমে তামিম, জহুরুল ও নাসির হোসেনের ফিফটি এবং মুশফিক ও সাকিবের ফিফটি ছোঁয়া ইনিংসে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। সাকিব ৩১ বলে ৪৯ করে ফিরে যাওয়ার পর হাল ধরেন মুশফিক। তিনি ২৫ বলে ৪৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন। তার তিন ছক্কা তিন চারে শেষ ৮ ওভারে ৬৬ রানের সমীকরণ মিলিয়ে ফেলে বাংলাদেশ।
পাঁজরের ব্যথা নিয়ে দুর্দান্ত সেঞ্চুরি: দুবাইতে ২০১৮ এশিয়া কাপে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৪৪ রানের ইনিংস খেলেছিলেন মুশফিক। তিনি নিজেও হয়তো ওয়ানডে ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংস বলবেন ওটাকে। ইনিংসের প্রথম ওভারেই লিটন ও সাকিব আউট হয়ে যান। খানিক বাদেই কব্জির ইনজুরি নিয়ে মাঠ ছাড়েন তামিম। সেখান থেকে মুশফিক দুর্দান্ত ওই ইনিংস খেলেন। মিঠুনের সঙ্গে তার ১৩২ রানের জুটি হয়। শেষ ওভারে শেষ ব্যাটার হিসেবে আউট হওয়ার আগে তিনি ১১টি চার ও চারটি ছক্কা মারেন। ২৬১ রান তুলে বাংলাদেশ ১৩৭ রানের জয় তুলে নেয়।
১৯ বছরে কাঁধে গুরুভার: তরুণ মুশফিকের লর্ডসে ২০০৫ সালে টেস্ট অভিষেক হয়। প্রথম ইনিংসে ৫৬ বল খেলে ১৯ রনা করে তখনই নতুন কিছুর বার্তা দিয়েছিলেন মুশফিক। ২০০৭ বিশ্বকাপে তিনি ছিলেন ১৯ বছরের তরুণ। মিডল অর্ডারে ব্যাটিংয়ের সঙ্গে উইকেটকিপিংয়ের গুরুভার ছিল তার কাঁধে। ভারতের বিপক্ষে তিনে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তিনি। নির্ভার ফিফটি করেছিলেন, জয়সূচক রান নিয়েছিলেন। কিপিংয়েও ছিলেন সাবলীল।
দেশের দ্রুততম ওয়ানডে সেঞ্চুরি: সাকিবকে হটিয়ে ২০২৩ সালে দেশের পক্ষে ওয়ানডের দ্রুততম সেঞ্চুরি করেন মুশফিক। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে বৃষ্টিতে ভেসে যাওয়া ম্যাচে ৬০ বলে ঠিক ১০০ রান করেছিলেন তিনি। ভাঙেন সাকিবের ৬৩ বলে সেঞ্চুরির রেকর্ড।
বিশেষ সিরিজ: ২০১৫ বিশ্বকাপে কোয়ার্টার ফাইনালে খেলেছিল বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের পরেই পাকিস্তানের বিপক্ষে দুর্দান্ত এক ওয়ানডে সিরিজ কাটায় বাংলাদেশ। ১৬ বছর পর পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডে জেতে। ওই সিরিজে পাকিস্তানকে ৩-০ ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ। প্রথম ওয়ানডে ম্যাচে তিনি ৭৭ বলে ১০৬ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। ওই ম্যাচে তামিম ১৩২ কররেও ম্যাচ সেরা হয়েছিলেন মুশফিক। পরের ম্যাচে মুশি ৭০ বলে ৬৫ করেছিলেন। তামিম খেলেছিলেন ১১৬ রানের ইনিংস। পরের ম্যাচে মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছিল ৪৩ বলে ৪৯ রানের ইনিংস। তামিম ৬৪ ও সৌম্য ওই ম্যাচে করেছিলেন ১২৭ রান।
ভাইরা জুটি: ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারায় বাংলাদেশ। ওই ম্যাচের নায়ক ছিলেন মাহমুদউল্লাহ। পার্শ্বনায়ক ছিলেন মুশফিক। দল দ্রুত ২ উইকেট হারালে ওই ম্যাচে মুশফিক-মাহমুদউল্লাহ জুটি গড়েন। মাহমুদউল্লাহ দেশের হয়ে আইসিসির টুর্নামেন্টে প্রথম সেঞ্চুরি করেন। মুশফিক তার সঙ্গে ১৪১ রানের জুটি গড়েছিলেন। তার ব্যাট থেকে ৭৭ বলে ৮৯ রানের ঝকঝকে ইনিংস আসে। ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বরে মাহমুদউল্লাহর শ্যালিকা জান্নাতুল কেয়ায়েত মন্ডিকে বিয়ে করে ভাইরা হন তারা। বিশ্বকাপে দেখান ভাইরা জুটি।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: র ন র ইন কর ছ ল ন ওই ম য চ প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম নিয়ে পরবর্তী রিভিউ শুনানি ১৮ মে
রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের পদমর্যাদাক্রম (ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স) নির্ধারণ সংক্রান্ত আপিল বিভাগের রায় রিভিউ আবেদনের শুনানি শুরু হয়েছে। প্রথম দিনের শুনানি শেষে ১৮ মে পরবর্তী দিন ধার্য করেছেন আপিল বিভাগ। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ৬ বিচারপতির বেঞ্চ রোববার শুনানির এদিন ধার্য করেন।
এর আগে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আইনজীবী ব্যারিস্টার সালাহউদ্দীন দোলন শুনানির জন্য সময় চেয়ে আবেদন করেন। তখন আপিল বিভাগ বলেন, এর আগে অনেকবার শুনানির জন্য সময় দেওয়া হয়েছে। আর সময় দেওয়া হবে না। আপনারা শুনানি শুরু করুন। পরে শুনানিতে ব্যারিস্টার সালাহউদ্দীন দোলন আপিল বিভাগের রায়ের মূল অংশবিশেষ তুলে ধরেন। এরপর শুনানি মূলতবি করে ১৮ মে ফের দিন ধার্য করা হয়েছে। এ সময় আদালতে রায় রিভিউ (পুনবিবেচনা) চেয়ে আবেদনকারী বিচারকদের সংগঠন জুডিসিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষে শুনানিতে উপস্থিত ছিলেন ব্যারিস্টার নিহাদ কবীর।
২০১৫ সালের ১১ জানুয়ারি রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম ঠিক করে রায় দেন আপিল বিভাগ। এরপর ২০১৬ সালের ১০ নভেম্বর পুর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, সংবিধান যেহেতু রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আইন, সেহেতু রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের শুরুতেই সাংবিধানিক পদাধিকারীদের গুরুত্ব অনুসারে রাখতে হবে। রায়ে জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যরা রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমের ২৪ নম্বর থেকে ১৬ নম্বরে সরকারের সচিবদের সমমর্যাদায় উন্নীত করা হয়। অতিরিক্ত জেলা জজ ও সমমর্যাদার বিচার বিভাগীয় সদস্যদের অবস্থান হবে জেলা জজদের ঠিক পরেই, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রমে তাদের অবস্থান হবে ১৭ নম্বরে।
রায়ে আরও বলা হয়েছে, রাষ্ট্রীয় পদমর্যাদাক্রম কেবল রাষ্ট্রীয় আচার-অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে। নীতি নির্ধারণী ক্ষেত্র বা অন্য কোনো কার্যক্রমে যেন এর ব্যবহার না হয়।
প্রসঙ্গত, রুলস অব বিজনেস অনুযায়ী ১৯৮৬ সালের ১১ সেপ্টেম্বর ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স তৈরি করে তা প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশ করা হয়। ২০০০ সালে এটি সংশোধন করা হয়। সংশোধিত এ ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্সের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব আতাউর রহমান। ওই রিটের ওপর ২০১০ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট রায় দেন। রায়ে ওই ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স বাতিল করে আট দফা নির্দেশনা দেওয়া হয়। পরে এর বিরুদ্ধে করা আপিলের শুনানি নিয়ে ২০১৫ সালে রায় দেন আপিল বিভাগ।