বিয়ের দিনক্ষণ আগেই ঠিক করা ছিল। সে অনুযায়ী গতকাল বুধবার রাতে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার কথা। বরযাত্রী নিয়ে বিয়ের আসরে যাওয়ার পথে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন বর মুন্না গড়।

গতকাল রাতে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার মাধবপুর চা–বাগান এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। মুন্না গড় জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের রাজকী চা–বাগানের গড় লাইন এলাকার আসুক গড়ের ছেলে।

বরের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে প্রায় ৭০ জন বরযাত্রী নিয়ে রওনা হন মুন্না গড়। কমলগঞ্জ উপজেলার পাত্রখোলা চা–বাগানের নতুন লাইন এলাকার সম্পদ রাজগড়ের মেয়ে সুমি রাজগড়ের সঙ্গে তাঁর বিয়ের কথা ছিল। রাত সাড়ে আটটার দিকে মাধবপুর চা–বাগানে পৌঁছার পর অসুস্থ হয়ে পড়েন বর। তখন তাঁকে স্থানীয় চিকিৎসকদের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠান। চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

বরের এমন মৃত্যুর খবরে কনের বাড়িতেও কান্নার রোল পড়ে।

কমলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা সাজেদুল কবীর বলেন, ‘আমাদের কাছে আনার পর ছেলেটির পালস, শ্বাসপ্রশ্বাস সব বন্ধ পাই। তারপরও আমরা শিওর হওয়ার জন্য তাঁকে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে পাঠাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কমলগঞ জ উপজ ল

এছাড়াও পড়ুন:

মুগ্ধতা ছড়ানো মণিপুরিদের প্রাচীন উৎসব ‘লাই হারাওবা’

খোলা মাঠ পার হয়ে দমকা হাওয়া আছড়ে পড়ছে গাছে গাছে। হাওয়ায় ঝুমুর নাচে দুলে উঠছে গাছের শাখা-প্রশাখা। বাতাস বৈশাখের ভ্যাপসা গরমকে তেতে উঠতে দিচ্ছে না। একটা মনোরম, মন ভালো করা বিকেল তৈরি হয়েছে গ্রামে। মাঠের মধ্যে কিছু ভ্রাম্যমাণ দোকান বসেছে। খেলনা ও প্রসাধনীর দোকান। আছে পেঁয়াজু, বেগুনি, আলুভাজি, ঝালমুড়ি, চানাচুরসহ নানা রকম মুখরোচক খাবারের দোকানও।

বিকেলটা যত নুয়ে পড়ছে সন্ধ্যার দিকে, গ্রামের কাঁচা-পাকা পথ ধরে তত নারী-পুরুষ, তরুণ-তরুণীসহ নানা শ্রেণির মানুষের উপস্থিতি বাড়তে থাকে। শিশু, কিশোরী, তরুণী অনেকের খোঁপায় দুলছে ময়ূরের পেখমের মতো পালক। তারা অংশ নেবে নাচে, সে জন্য এ প্রস্তুতি। রঙিন হয়ে উঠেছে বিকেলটি। এই আয়োজন, ভিড় তৈরি হয়েছে একটি উৎসবকে ঘিরে। মণিপুরি জনগোষ্ঠীর একটি প্রাচীন ও তাৎপর্যপূর্ণ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ‘লাই হারাওবা’ বা ‘দেবতাদের আনন্দ’ উৎসব এখানে ডাক দিয়েছে সবাইকে।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের তেতইগাঁওয়ে অবস্থিত মণিপুরি সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে এমন ভিড় জমেছিল। আগের দিন তিন দিনের এই উৎসব শুরু হয়। এর পর থেকে চলছে নানা আচার-অনুষ্ঠান। শেষ হয় আজ শুক্রবার। এতে অর্থায়ন করেছে ইউনেসকো-আইসিএইচ, উৎসব বাস্তবায়নে ছিল বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর। সহযোগিতা ও পরিচালনায় ছিল আইসিএইচ পিডিয়া বাংলাদেশ (সিআইবি), সাধনা-দক্ষিণ এশীয় সংস্কৃতির অগ্রগতি কেন্দ্র।

বিকেলটা ঘনিয়ে আসতে থাকলে জমে ওঠে মণিপুরি সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণ। ক্রমে শ্রোতা-দর্শকে পূর্ণ হয়ে ওঠে শামিয়ানার নিচে পেতে রাখা খালি চেয়ারগুলো। আচার-অনুষ্ঠান, নাচে অংশ নিতে কুশীলবেরাও সক্রিয়, সচল হয়ে ওঠেন। ঢোল-খোল, বাঁশিসহ নানা বাদ্যযন্ত্রের সুর বেজে ওঠে, প্রাঙ্গণজুড়ে চলতে থাকে সুরের ঝংকার। বাইরে সন্ধ্যার আঁধার নামলে উন্মুক্ত মঞ্চে উপস্থিত হন সমবেত শিল্পীরা। ক্রমে নারী, তরুণী ও শিশু-কিশোরীরা নৃত্যে অংশ নিতে থাকেন। গান ও সুরের তালে, নানা মুদ্রায় দীর্ঘ সময় ধরে নাচ চলতে থাকে। একটা সময় অনেকজনের অংশগ্রহণে উন্মুক্ত মঞ্চটি জলতরঙ্গের মতো দুলতে থাকে, ভাসতে থাকে। একদিকে খোলা হাওয়া, অন্যদিকে গান ও সুরের মূর্ছনা সন্ধ্যাটিকে প্রার্থনার মতো স্নিগ্ধ মুগ্ধতায় ডুবিয়ে রাখে।

ঢেউতরঙ্গে চলছে নাচ। বৃহস্পতিবার বিকেলে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জের মণিপুরি সাংস্কৃতিক কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নিখোঁজের এক দিন পর রেললাইনের পাশে লাশ উদ্ধার, স্বজনদের অভিযোগ হত্যাকাণ্ড
  • মুগ্ধতা ছড়ানো মণিপুরিদের প্রাচীন উৎসব ‘লাই হারাওবা’