চলতি ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা ৩৮ হাজার কোটি টাকা। প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) এ লক্ষ্যমাত্রার অর্ধেকের বেশি বা ৫০ দশমিক ৫৭ শতাংশ বিতরণ করেছে ব্যাংকগুলো। আলোচ্য সময়ে কৃষি ঋণ বিতরণের পরিমাণ ১৯ হাজার ২১৫ কোটি টাকা। 

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে সরকারি ব্যাংকগুলো কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করেছে ৮ হাজার ৯৩ কোটি টাকা। বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ১০ হাজার ৩৩৯ কোটি টাকা এবং বিদেশি ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে ৭৮৩ কোটি টাকা।

কৃষি খাতে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মোট ঋণের অন্তত ২ শতাংশ কৃষি খাতে বিতরণ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। যেসব ব্যাংক লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কৃষিঋণ বিতরণ করবে না, তাদের জরিমানার ব্যবস্থা করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যেসব ব্যাংক কৃষি ঋণ লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী বিতরণে ব্যর্থ হবে, সেসব ব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট তহবিলে ওই অর্থ জমা দিতে হবে। 

যেসব ব্যাংকের পল্লী অঞ্চলে শাখা নেই, তারা এনজিওর মাধ্যমে ঋণ বিতরণ করতে পারবে বলে নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। তবে, সুদের হার ঠিক থাকবে। ফলে, প্রতি বছর কৃষিঋণ বিতরণ বাড়ছে।

কৃষি ঋণের তথ্য পর্যালোচনায় দেখা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রথম সাত মাসে (জুলাই-জানুয়ারি) বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি) কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে ৪ হাজার ৯১২ কোটি টাকা। আলোচ্য সময়ে কৃষি ঋণ বিতরণে শীর্ষে আছে কৃষি ব্যাংক। এর পরেই আছে ইসলামী ব্যাংক। ব্যাংকটি আলোচ্য সময়ে কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে ১ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা। এছাড়া, রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক ১ হাজার ৪১৪ কোটি, সোনালী ব্যাংক ৮৮৩ কোটি, ব্র্যাক ব্যাংক ৬৫১ কোটি, এক্সিম ব্যাংক ৬১৭ কোটি এবং পূবালী ব্যাংক ৬০৭ কোটি টাকা কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। 

বিদেশি ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোও কৃষি ঋণ বিতরণ করেছে। তবে, বেসরকারি খাতের পদ্মা ব্যাংক এবং বিদেশি উরি ব্যাংক কৃষি ঋণ বিতরণ করতে পারেনি।

ঢাকা/এনএফ/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সব ব য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

এডিপি কমলাে ৪৯ হাজার কোটি টাকা

বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) আকার রেকর্ড পরিমাণ ছোট করা হয়েছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের মূল এডিপি থেকে ব্যয় কমানো হয়েছে ১৮ শতাংশ। পরিমাণে কমানো হয়েছে ৪৯ হাজার কোটি টাকা। এতে সংশোধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (আরএডিপি) আকার দাঁড়িয়েছে ২ লাখ ১৬ হাজার কোটি টাকা। মূল এডিপি ছিল ২ লাখ ৬৫ হাজার কােটি টাকার। ইতোপূর্বে কখনও এত বেশি হারে এডিপি কাটছাঁট হয়নি।

গতকাল সোমবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের (এনইসি) বৈঠকে আরএডিপি অনুমোদন দেওয়া হয়। রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। উপদেষ্টা পরিষদের সব সদস্য এবং সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। 
বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে আরএডিপির বিস্তারিত তুলে ধরেন পরিকল্পনা ও শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। এনইসি বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার নির্দেশনা প্রসঙ্গে তিনি জানান, সব প্রকল্প ইএমআইএস সফটওয়্যারে অন্তর্ভুক্তির নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। এতে কোন প্রকল্পের বাস্তবায়ন অগ্রগতির কী অবস্থা, তার সর্বশেষ পরিস্থিতি জানা যাবে। যদি কোনো প্রকল্পের হালনাগাদ তথ্য না থাকে তাহলে অর্থ মন্ত্রণালয় অর্থ ছাড় করবে না। এ ছাড়া প্রকল্প গ্রহণের পরিবেশের ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা। 
এ প্রসঙ্গে পরিকল্পনা উপদেষ্টা বলেন, ‘আগে কীভাবে পরিবেশ অধিদপ্তরের না মতকে হ্যাঁ করা হতো, সেটি আমরা সবাই জানি। এমনকি বাড়ি করতেও পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র দিতে অনিয়ম হয়েছে। সেগুলো এখন কঠোরভাবে দেখা হবে।’ 

এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের পেনশনের ৭ থেকে ৮ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে জানিয়ে শিক্ষা ও পরিকল্পনা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, বিষয়টির একটা সুরাহার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে ডিও লেটার (আধা সরকারিপত্র) দেওয়া হয়েছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, দুর্নীতির কারণে এ মন্ত্রণালয়ের অনেক প্রকল্প বন্ধও করা হয়েছে।
আরএডিপির এত বড় কাটছাঁটের ব্যাখ্যায় ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘চলতি অর্থবছর আমরা চাইছি আরএডিপি ছোট থাকুক। কারণ অনেক বড় বরাদ্দ দিয়ে ব্যয় করতে না পারলে সেটি ভালো দেখায় না। সেই সঙ্গে আগামী অর্থবছরের বাজেট ব্যবস্থাপনায় বড় পরিবর্তন আনা হচ্ছে। আগে থেকেই রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় ঘাটতি বেশি রেখে বরাদ্দ দেওয়া হবে না।’ 
ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, অনুমোদিত আরএডিপি বরাদ্দের মধ্যে রয়েছে সরকারের নিজস্ব তহবিলের অংশ ১ লাখ ৩৫ হাজার কোটি এবং উন্নয়ন সহযোগী সংস্থা ও দেশের ঋণ থেকে ৮১ হাজার কোটি টাকা। মূল এডিপিতে প্রকল্প ছিল ১ হাজার ৩৫২টি। সংশোধিত এডিপিতে প্রকল্প সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৪৩৭টি। এ ছাড়া অননুমোদিত নতুন প্রকল্প কমে হয়েছে ৭৭০টি, যা মূল এডিপিতে ছিল ৯১০টি।  
সংশোধিত এডিপিতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাওয়া পাঁচটি খাতের মধ্যে পরিবহন ও যোগাযোগে ৪৮ হাজার ২৫৩ কোটি টাকা, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে ৩১ হাজার ৮৯৭ কোটি, শিক্ষায় ২০ হাজার ৩৪৯ হাজার কোটি, গৃহায়ন ও কমিউনিটি সুবিধায় ১৯ হাজার ৬৫৩ কোটি এবং স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন খাতে ১৬ হাজার ৯০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। 
মন্ত্রণালয়ভিত্তিক সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেয়েছে স্থানীয় সরকার বিভাগ (৩৬ হাজার ১৫৮ কোটি  টাকা)। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ বিভাগ (২১ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা)। তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগে (১৮ হাজার ৬২৪ কোটি টাকা)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষার উন্নয়নে বরাদ্দ কমল ১১ হাজার কোটি টাকা
  • মুনাফা কমলেও লভ্যাংশ বেশি দেবে ইউনিলিভার কনজ্যুমার
  • চ্যালেঞ্জের মধ্যেও বাড়ছে রপ্তানি
  • অনলাইন: ফেব্রুয়ারিতে পণ্য রপ্তানি বেড়েছে পৌনে ৩ শতাংশ
  • সাত মাসে বাংলাদেশে রেমিট্যান্স পাঠানোতে শীর্ষে যে ১০ দেশ  
  • ২০৪৭ সালে উন্নত অর্থনীতি হতে চায় ভারত, দরকার ৭.৯% গড় প্রবৃদ্ধি
  • এডিপি কমলাে ৪৯ হাজার কোটি টাকা
  • সংশোধিত এডিপি ৪৯ হাজার কোটি টাকা কমল