ঢাকা থেকে বরিশালগামী একটি চলন্ত বাসে হঠাৎ আগুন লেগে যানটি পুড়ে গেছে। অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচেছেন ১৯ যাত্রী। তবে এক যাত্রী সামান্য দগ্ধ হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বরিশালের উজিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বামরাইল বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন সানুহার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।

গ্রিনলাইন পরিবহনের ওই বাসে লাগা আগুনের কারণে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় ধরে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় মহাসড়কের দুই পাশে দুর্ভোগ পোহান অসংখ্য যাত্রী, চালক ও সংশ্লিষ্টরা।

ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ের পুলিশ জানায়, আজ সকালে গ্রিনলাইন পরিবহনের বাসটি ঢাকা থেকে বরিশালের উদ্দেশে যাচ্ছিল। গৌরনদী পর্যন্ত বাসটিতে ২৩ জন যাত্রী ছিলেন। এরপর পথে ৪ যাত্রী নেমে গেলে মোট ১৯ জন যাত্রী ছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছালে চলন্ত যানটিতে আগুন ধরে যায়। পড়ে বাসটি থামানো হলে ১ মিনিটের মধ্যে যাত্রীরা বাইরে নেমে পড়েন। মুহূর্তেই বাসটিতে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। খবর পেয়ে গৌরনদী ও উজিরপুর দুই উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের চারটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক ঘণ্টা চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তবে দেড় ঘণ্টা পর দুপুর ১২টার দিকে যান চলাচল আবার স্বাভাবিক হয়।

গৌরনদী হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আমিনুর রহমান বলেন, শর্টসার্কিট বা ইঞ্জিনের ত্রুটি থেকে আগুন লাগতে পারে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।

তিন যাত্রী ঘটনার বর্ণনায় বলেন, শীতাতপনিয়ন্ত্রিত বাসটি গৌরনদীর বাটাজোর এলাকা পার হওয়ার পর থেকেই ভেতরে পোড়া গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। বিষয়টি চালক ও পরিদর্শককে জানানো হলে বাসের ভেতর সুগন্ধি স্প্রে করে দেন পরিদর্শক। কিন্তু পোড়া গন্ধ আরও তীব্র হলে যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে বাসের ভেতরে ছোটাছুটি শুরু করেন। পরে চালক দ্রুত বাসটি থামালে যাত্রীরা বাইরে বেরিয়ে পড়েন। এ সময় এক নারী যাত্রীর হাত সামান্য দগ্ধ হলেও অন্যরা অক্ষত আছেন। তবে অধিকাংশ যাত্রীর লাগেজ পুড়ে গেছে।

গৌরনদী ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন কর্মকর্তা বিপুল হোসেন জানান, বাসটি সম্পূর্ণভাবে পুড়ে গেছে এবং যাত্রীদের মালপত্র আগুনে নষ্ট হয়ে গেছে। আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হলো, তা অনুসন্ধান না করে নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
দুর্ঘটনার পর তাৎক্ষণিকভাবে গ্রিনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বর শ ল গ রনদ

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন পপসম্রাট আজম খান

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য চলতি বছর আট বিশিষ্টজনকে স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করেছে সরকার। এ তালিকায় রয়েছেন ‘পপসম্রাট’ আজম খান। সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য তাকে মরণোত্তর স্বাধীনতা পুরস্কারের জন্য মনোনীত করা হয়েছে।  

বাংলা পপ গান গেয়ে এ দেশের সাধারণ মানুষের মন জয় করেন আজম খান। শুধু তাই নয়, এ ঘরানার গান গেয়ে ‘পপ সম্রাট’ উপাধি লাভ করেন। সবাই তাকে গুরু বলেও সম্বোধন করতেন। আজম খান ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

আজম খান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আজম খান ক্লাস নাইনে পড়াকালীন অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি শাসকরা বিভিন্নভাবে দেশের মানুষকে অনেক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এমন অনুভব শক্তি আজম খানকে বিপ্লবী চিন্তার মানুষে পরিণত করে। সেই সময় তিনি জানতে পারেন ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর কথা। গণসংগীতের চর্চা করতেন এই শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা। বন্ধুদের সঙ্গে এই শিল্পীগোষ্ঠী সংগীত পরিবেশন করতে থাকেন আজম খান।

আরো পড়ুন:

ইসলামি রীতিতে দাফন চান কবীর সুমন

‘শয়তানের খপ্পর থেকে পাসপোর্ট উদ্ধার হয়েছে’

ধীরে ধীরে মানুষের প্রশংসা পাওয়ার পর এই শিল্পীগোষ্ঠী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন। তাদের সাধারণ মানুষের জীবনের অভাব ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হতো গানে গানে। প্রতিবাদী গান গাওয়ার জন্য পুলিশের লাঠির বাড়িও খেয়েছেন আজম খান। গণ–আন্দোলনের সময়গুলোতেও গান করে গেছেন বরেণ্য এই শিল্পী।

আজম খানের গাওয়া অনেক জনপ্রিয় গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এত সুন্দর দুনিয়ায়’, ‘অভিমানী’, ‘অনামিকা’, ‘পাপড়ি’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘আমি যারে চাইরে’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ও চাঁদ সুন্দর’, ‘বাধা দিয়ো না’, ‘ও রে সালেকা ও রে মালেকা’ ও ‘জীবনে কিছু পাব না রে’।

২০১১ সালের ৫ জুন অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে অনন্তের পথে পাড়ি জমান পপ সম্রাট।

স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে প্রদান করে আসছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহীদদের স্মরণে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই পদক প্রদান করা হয়। পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র প্রদান হয়।

ঢাকা/রাহাত/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ