বগুড়ায় ইফতারের ঐতিহ্য টক দইয়ের সুস্বাদু ঘোল। ছয় দশকের বেশি সময় ধরে ইফতার আয়োজনে রোজাদারদের প্রশান্তি মেটাচ্ছে প্রসিদ্ধ এই ঘোল। এবার গরমে রোজা শুরু হওয়ায় অন্যবারের তুলনায় ইফতারে টক দইয়ের সুস্বাদু ঘোলের কদর বেড়েছে।

ফুটপাত থেকে শুরু করে শহরের নামীদামি হোটেল-রেস্তোরাঁয় বাহারি ইফতারের সঙ্গে টক দইয়ের ঘোল পরিবেশন করা হচ্ছে। শহরের সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, ফতেহ আলী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার অভিজাত দোকানে ঘোল তৈরির জন্য ব্যবহৃত টক দই বিক্রি হয়।

সকাল থেকে ইফতারের আগপর্যন্ত চলে বেচাকেনা। দোকান থেকে টক দই কিনে বাড়িতে ঘোল তৈরি করেন অনেকে। আবার দোকানে বোতলজাত ঘোলও বিক্রি হচ্ছে। দোকানে প্রতি হাঁড়ি (৫০০ গ্রাম) টক দইয়ের ঘোল ১৮০ থেকে ২০০ টাকা আর ফুটপাতে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বোতলজাত ঘোল বিক্রি হচ্ছে ১ লিটার ২০০ টাকা।

ঘোলের কারিগর সুমন মিয়া জানান, দুই লিটার ঘোল তৈরি করতে এক কেজি টক দই, এক লিটার পানি, চারটি কাগজি লেবুর রস, বিট লবণ, খাওয়ার লবণ ও চিনি পরিমাণমতো প্রয়োজন হয়। এরপর পানি আর টক দই ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে পরিষ্কার সুতি কাপড় বা ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে নিতে হবে। অন্য আরেকটি গ্লাসে সামান্য পানিতে বিট লবণ মিশিয়ে ভালোভাবে ছেঁকে বিট লবণ মেশানো পানি ব্লেন্ড করা দইয়ে ঢেলে নাড়তে হবে। এরপর লেবুর রস, লবণ ও চিনি ভালোভাবে মিশিয়ে পরিষ্কার বোতলে ভরে ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। ঘণ্টাখানেক পর গ্লাসে ঢেলে পরিবেশন করা যায়।

শহরের প্রবীণ বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একসময় বড় হাঁড়িতে করে হোটেলে বা ফুটপাতে টক দইয়ের সুস্বাদু ঘোল বিক্রি হতো। এখন বোতলজাত করে ঘোল বিক্রি হচ্ছে। ইফতারে সেই ঘোল রোজাদারদের প্রাণ জুড়াচ্ছে। কেউ কেউ টক দই কিনে বাড়িতে নিয়ে ইফতার আয়োজনে ঘোল তৈরি করছেন।

গত শনিবার সরেজমিনে দেখা যায়, শহরের কাঁঠালতলা, বড় মসজিদ লেন, ফতেহ আলী বাজার থেকে শুরু করে অলিগলিতে দইওয়ালারা ভাঁড়ে করে টক দই বিক্রি করছেন। ফুটপাত ছাড়াও শহরের সাতমাথা, কবি নজরুল ইসলাম সড়ক, ফতেহ আলী বাজারসহ বিভিন্ন এলাকার অভিজাত দোকানে বোতলজাত ঘোল বিক্রি হচ্ছে। প্রসিদ্ধ এই ঘোল কিনতে ক্রেতারা দোকানে দোকানে ভিড় করছেন। ২৫০ মিলিলিটার ঘোল ৫০ টাকা, আধা লিটার ১০০ টাকা এবং এক লিটার ঘোল ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বগুড়ার বাইতুর রহমান সেন্ট্রাল মসজিদে ইফতারে মিলিত হয়েছেন ধর্মপ্রাণ রোজাদার ব্যক্তিরা। গত রোববার সন্ধ্যায়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: টক দইয় র ব তলজ ত ইফত র র শহর র

এছাড়াও পড়ুন:

মানবাধিকার সুরক্ষায় কাজ করবে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’

ক্যাম্পাসে মানবাধিকার সুরক্ষা ও সচেতনতা তৈরির লক্ষ্য নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’। রোববার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতিতে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটির আনুষ্ঠানিক যাত্রার কথা জানানো হয়।

‘রাইজ ফর রাইটস (অধিকারের জন্য জাগো)’ স্লোগানকে সামনে রেখে গত বৃহস্পতিবার সংগঠনটির ২৫ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। রোববার সংবাদ সম্মেলনে ওই কমিটি ঘোষণা করা হয়।

নতুন এই সংগঠনের আহ্বায়ক হয়েছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী তাহমিদ সাকিব। সদস্যসচিব করা হয়েছে ফ্রেঞ্চ ল্যাঙ্গুয়েজ অ্যান্ড কালচার বিভাগের শিক্ষার্থী পত্র নন্দিতাকে। এ ছাড়া ইসমাঈল নাহিদ যুগ্ম আহ্বায়ক আর রুকাইয়া রচনা যুগ্ম সদস্যসচিব হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে গণরুম, গেস্টরুম সংস্কৃতির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে আর কখনো এই সংস্কৃতি যেন ফেরত না আসে, সেই লক্ষ্যে কাজ করবে সংগঠনটি।

সংগঠনের আহ্বায়ক তাহমিদ সাকিব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নারীর প্রতি সহিংসতা রোধ, সংখ্যালঘু অধিকারও জাতিগত সম্প্রীতি রক্ষা, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও প্রয়োজনে আইনি পরামর্শ প্রদানসহ ক্যাম্পাসে মানবাধিকার বিষয়ে শিক্ষার্থীদের মাঝে সচেতনতা তৈরিতে কাজ করবে ‘ঢাকা ইউনিভার্সিটি হিউম্যান রাইটস অ্যাসোসিয়েশন’। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের কোনো ঘটনা ঘটলে সংগঠনটি শিক্ষার্থীদের পক্ষে কাজ করবে বলেও জানান তিনি।

তাহমিদ সাকিব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে শিক্ষার্থী নিপীড়নের ঘটনাগুলো আমরা দেখেছি। বিভিন্ন সময় যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে কিছু শিক্ষকের বিরুদ্ধে। কিন্তু সেগুলোর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জোরালো ভূমিকা আমরা দেখিনি। নারী শিক্ষার্থীরা এখনো ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। অসংখ্য নারী নিপীড়নের ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্তের ঘটনা আমরা দেখি না। এই সংগঠনটি এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করবে।’

সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের সদস্যসচিব পত্র নন্দিতা বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা কম নয়, বরং অহরহ ঘটে। বিশেষ করে রাজনৈতিক পরিসরে। এর বাইরে প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতেও এটা বিদ্যমান। এ বিষয়ে সচেতনতা তৈরি, ডকুমেন্টেশন এবং অধিকার আদায়ে কাজ করবে তাঁদের এই সংগঠন।

আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে আরও আছেন তাপসী রাবেয়া, হুরে জান্নাত, তাজফিহা উখরোজ, সামিয়া মাসুদ, সুরমি চাকমা, নাফিসা নুজহাত, ইসরাত জাহান, আবদুল্লাহ আজিমসহ আরও অনেকে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ