মুঠোফোনে হুমকি দিয়ে ইউএনও কার্যালয়ের কর্মচারীকে মারধর, অভিযোগ যুবদল নেতার বিরুদ্ধে
Published: 6th, March 2025 GMT
যশোরের মনিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ের এক কর্মচারীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক মোতাহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীর দাবি, গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ইউএনও কার্যালয়–সংলগ্ন শহীদ মিনারের সামনে তাঁকে মারধর করা হয়।
ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির নাম শাহীন আলম। তিনি ইউএনও কার্যালয়ে অ্যাকাউন্ট্যান্ট ক্লার্ক হিসেবে কর্মরত।
শাহীন আলম বলেন, ‘গতকাল অফিস শেষে বিকেলে অফিসের সামনের শহীদ মিনারে দাঁড়িয়ে অফিস সহকারী ও সহকর্মী সাইফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এ সময় সাইফুলের মুঠোফোনে মোতাহারুল ইসলামের কল আসে। তাঁর সঙ্গে কথার একপর্যায়ে সাইফুল বলে ওঠেন, “শাহীন আমার সামনে আছে।” তখন মোতাহারুল আমার সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সাইফুল আমাকে মুঠোফোনটি ধরিয়ে দেন।’
শাহীন আরও বলেন, ‘মোতাহারুলের সঙ্গে আমার আগে কখনো কথা হয়নি। ফোন ধরতেই তিনি আমাকে গালমন্দ করতে থাকেন। আমি প্রতিবাদ করলে নানা হুমকি দিয়ে আমার অবস্থান জানতে চান। আমি অফিসের সামনে থাকার কথা বললে তিনি ফোন কেটে দেন। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিকভাবে আমি উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাইকে কল করি। কথা বলা শুরু করলে দেড় থেকে দুই মিনিটের মধ্যে মোতাহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১৫-২০ জন আমাদের কাছে আসেন। তখন তাঁর সঙ্গে থাকা এক ব্যক্তি আমার মাথায় থাপ্পড় মারেন। অন্যরা ধাক্কাধাক্কি ও টানাহেঁচড়া করতে থাকেন। আসাদুজ্জামান মিন্টু ভাই মুঠোফোনে কথা বলার পর তাঁরা সেখান থেকে চলে যান।’
এই অভিযোগ অস্বীকার করে মোতাহারুল ইসলাম বলেন, শাহীন আলমের সঙ্গে ওই ধরনের ঘটনা ঘটেনি। তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে কোনো কথাই হয়নি। অভিযোগটি মনগড়া।
তবে এ ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত ও দুঃখজনক হিসেবে উল্লেখ করে মনিরামপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমরা দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে যেন আর না ঘটে সে জন্য আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’
জানতে চাইলে মনিরামপুরের ইউএনও নিশাত তামান্না বলেন, উপজেলা চত্বরে শহীদ মিনারের সামনে অতর্কিত হামলা চালিয়ে এক সরকারি কর্মচারীকে মারধরের বিষয়টি জেলা প্রশাসককে জানানো হয়েছে। তিনি এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত দেবেন। উপজেলা পরিষদের কর্মচারীরা মানববন্ধন করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত তাঁদের মানববন্ধন না করতে বলা হয়েছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ত হ র ল ইসল ম ল ইসল ম র র স মন উপজ ল ম রধর
এছাড়াও পড়ুন:
ইউএনওর কক্ষে জামায়াত নেতাদের মারধর: পাবনায় বিএনপির চার নেতাকে নোটিশ
পাবনার সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কক্ষে জামায়াতের নেতাদের মারধরের ঘটনায় বিএনপির চার নেতাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ওই নোটিশ পেয়েছেন সুজানগর উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমান, পৌর যুবদলের যুগ্ম আহবায়ক বাবু খা, বিএনপির নেতা মোহাম্মদ মানিক খা ও সুজানগর এন এ কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি শাকিল খান।
নোটিশে চার নেতার নাম উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘পাবনা জেলাধীন সুজানগর উপজেলা ইউএনওর কার্যালয়ে প্রবেশ করে হাঙ্গামা, বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিসহ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতৃবৃন্দের সাথে অশোভন ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের অভিযোগে চারজনকে আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হলো।’
এ বিষয়ে সুজানগর উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এ বি এম তৌফিক হাসান বলেন, সরকারি অফিসে এ ধরনের ঘটনা দুঃখজনক। নোটিশ প্রাপ্তির পর দলের ওই চার নেতাকে দ্রুত জবাব দিতে বলা হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি খুবই কষ্টদায়ক। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুনইউএনওর কক্ষে জামায়াতের ৪ নেতাকে পেটানোর অভিযোগ বিএনপির বিরুদ্ধে২১ ঘণ্টা আগেগত সোমবার বিকেল উপজেলা জামায়াতের নায়েবে আমীর ফারুকী আজমসহ দলের চার নেতা ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামানের কার্যালয়ে যান। ইউএনও ব্যস্ত থাকায় তাঁরা অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় উপজেলা বিএনপির সাবেক যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক মজিবর রহমানের নেতৃত্বে কয়েকজন বিএনপির নেতা–কর্মী ওই কার্যালয়ে প্রবেশ করেন। তাঁরা কার্যালয়ে জামায়াত নেতাদের বসে থাকতে দেখে উত্তেজিত হয়ে ওঠেন। বিষয়টি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। এরপর বিএনপির নেতা মজিবর রহমান কক্ষ থেকে বেরিয়ে দলের অন্য নেতা-কর্মীদের ডাকেন। এরপর আবার কক্ষে ঢুকে ইউএনওর সামনেই জামায়াতের নেতাদের মারধর করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। পরে ইউএনও কার্যালয়ের কর্মীরা আহত চারজনকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
হামলার ঘটনায় আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত কোনো আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ইউএনও মীর রাশেদুজ্জামান বলেন, ঘটনাটি খুবই কষ্টদায়ক। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। নির্দেশনা পেলে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।