গোমতীর চরে কৃষকের মুখে ‘মিষ্টি হাসি’ এনেছে মিষ্টিকুমড়া
Published: 6th, March 2025 GMT
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলায় গোমতী নদীর ভান্তির চরে চোখে পড়ে শুধু সবুজ আর সবুজ। এই সবুজের মধ্যে হাসছে মিষ্টিকুমড়া। হাত দিয়ে পাতা সরাতেই পাতার ফাঁকে লুকিয়ে থাকা মিষ্টিকুমড়া বেরিয়ে আসছে। পুরো চরের প্রায় সব কৃষিজমিতেই এ অবস্থা। এ বছর মিষ্টিকুমড়ার ভালো ফলনে খুশি কৃষক।
বুধবার সরেজমিনে ভান্তির চরের পাশাপাশি বালীখাড়া, কাহেতরা ও পূর্ব হুরা চরে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এসব মিষ্টিকুমড়া জমিতে একসঙ্গে দুই ফসলের একটি। গত নভেম্বরের শুরুতে এসব জমিতে একসঙ্গে আলু ও মিষ্টিকুমড়ার চারা রোপণ করা হয়। এরই মধ্যে ডিসেম্বরের শেষ দিকে এবং জানুয়ারির শুরুতে আলু তুলে নিয়েছেন কৃষকেরা। এখন প্রতিটি জমিতে শুধুই মিষ্টিকুমড়া। এ বছর মিষ্টিকুমড়ার ভালো ফলনের কারণে হাসির ঝিলিক লেগেছে কৃষকের মুখে।
জেলা কৃষি বিভাগ ও চরের কৃষকদের ভাষ্য, গত বছরের আগস্টে হওয়া ভয়াবহ বন্যায় গোমতী নদীর চর পুরোপুরি প্লাবিত হয়েছিল। বানের স্রোতে ভেসে যায় চরের সব কৃষিজমির ফসল। তবে বন্যার সময় চরের কৃষিজমিগুলোতে প্রচুর পলি জমেছিল। বন্যা–পরবর্তী সময়ে আবাদ করায় কৃষিজমির পলির কারণে মিষ্টিকুমড়ার বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধু মিষ্টিকুমড়াই নয়, এ বছর আলুরও ভালো ফলন হয়েছে গোমতীর চরে।
একেকটি মিষ্টিকুমড়া খেত থেকে ৪০–৬০ টাকায় বিক্রি করছেন কৃষক.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
আজ ঢাকা আসছে আইএমএফের প্রতিনিধিদল
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ঋণের বাকি ২৩৯ কোটি ডলার বাংলাদেশ পাবে কিনা তা নিশ্চিত করতে শনিবার (৫ এপ্রিল) ঢাকায় আসছে সংস্থাটির প্রতিনিধিদল।
সফরে ভর্তুকি কমানো, বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করাসহ বিভিন্ন শর্ত নিয়ে সরকারের সঙ্গে বৈঠক করবে তারা।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, আইএমএফের কিস্তি আটকে গেলে ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে রক্ষণশীল হতে পারে বিশ্বব্যাংক, এডিবির মতো উন্নয়ন সহযোগীরা।
তবে অর্থ উপদেষ্টা বলছেন, অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ধরে রাখতে এই মুহূর্তে আইএমএফের সব শর্ত বাস্তবায়ন করা যাবে না।
অর্থপাচার, খেলাপি ঋণসহ নানা কারণে বাংলাদেশের বিপর্যস্ত অর্থনীতির সহায়তায় ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি ৪৭০ কোটি ডলারের ঋণ দেওয়া শুরু করে আইএমএফ। এ পর্যন্ত তিন কিস্তিতে ২৩১ কোটি ডলার পাওয়া গেছে। বাকি দুই কিস্তির ২৩৯ কোটি ডলার বাজেট সহায়তার জন্য একসঙ্গে চায় সরকার। যা মিলতে পারে জুনে।
চতুর্থ ও পঞ্চম কিস্তি একসঙ্গে ছাড়ের আগে বিভিন্ন শর্ত পালনের অগ্রগতি দেখতে ঢাকায় আসছে আইএমএফের একটি দল। ঋণ পেতে মুদ্রা বিনিময় হার বাজারভিত্তিক করা, জিডিপির দশমিক পাঁচ শতাংশ হারে বাড়তি রাজস্ব আদায়, বিদ্যুতের দাম বাড়ানোসহ বেশ কিছু শর্ত রয়েছে। যা নিয়ে ৬ এপ্রিল থেকে টানা দুই সপ্তাহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরের সঙ্গে বৈঠক করবেন তারা।
২০২২ সালে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকে ঊর্ধ্বমুখী মূল্যস্থিতি নানা উদ্যোগেও আটকে আছে ৯ শতাংশে। এ অবস্থায় বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি জনমনে অসন্তোষ বাড়াবে। অর্থনীতিবিদ মাহফুজ কবীর বলেন, “বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হলে বা এ খাতে ভর্তুকি তুলে নেওয়া হলে নতুন করে মূল্যস্ফীতির চাপ তৈরি হবে। তার দায় কে নেবে?”
আইএমএফের শর্ত মেনে অন্তত ৫৭ হাজার কোটি টাকা বাড়তি রাজস্ব আদায় করতে হবে। কমাতে হবে কর অব্যাহতি। সিপিডির সম্মানীয় ফেলো ড. মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, “ট্যাক্সের ক্ষেত্রে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। এগুলো বিভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর জন্য দেওয়া হয়। এটি যৌক্তিকরণের একটি পরিকল্পনা করতে হবে।”
ক্রলিং পেগ পদ্ধতিতে বিনিময় হার নির্ধারণ করায় হু হু করে বাড়তে থাকা ডলারের দাম আপাতত ১২২ টাকায় স্থিতিশীল। এবার আইএমএফই চায় এই পদ্ধতি থেকে বের হোক বাংলাদেশ। যার সঙ্গে একমত নন খোদ অর্থ উপদেষ্টা।
অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “হঠাৎ করে কোনো সিদ্ধান্ত নিলে পরিস্থিতি পাকিস্তান বা শ্রীলঙ্কার মতো হতে পারে। বিপদে পড়তে হবে। এই সিদ্ধান্ত নিতে কিছুটা সময় লাগবে।”
তবে আইএমএফের শর্ত মেনে এনবিআরের রাজস্ব নীতি থেকে রাজস্ব প্রশাসনকে আলাদা করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ঢাকা/হাসান/ইভা