চলমান মৌসুমেই একবার মোনাকোর বিপক্ষে একটি লাল কার্ড দেখায় ম্যাচ হারতে হয়েছিল বার্সেলোনাকে। বুধবার (৫ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে একই শঙ্কায় পড়েছিল কাতালান জায়ান্টরা। পর্তুগিজ ক্লাব বেনফিকার বিপক্ষে যে ম্যাচের শুরুর দিকেই ১০ জনে পরিণত হয় হান্সি ফ্লিকের দল। তবে এই জার্মান ম্যানেজারের অধীনে এ যে এক বদলে যাওয়া দল। এক জন ফুটবলার কম নিয়েই তাই উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোতে জয় পেল বার্সা।

বুধবার চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর প্রথম লেগে বেনফিকাকে ১-০ ব্যবধানে পরাজিত করেছে বার্সেলোনা। দর্শনীয় এক গোল করে ম্যাচের ব্যবধান গড়েন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার রাফিনিয়া।

ঘরের মাঠ স্তাদিও দা লুজে প্রতিপক্ষের ১০ জনের বিপক্ষেও জয় ছিনিয়ে নিতে পারল না বেনফিকা। যদিও এই ম্যাচে বেনফিকা মূলত বার্সা গোলরক্ষক বয়েচেক শেজনির বিপক্ষে হেরেছে। চলমান মৌসুমের রবিন রাউন্ডে এই ঘরের মাঠেই এই দুদল এক মহারণ উপহার দিয়েছিল ফুটবল বিশ্বকে। দুই গোলে পিছিয়ে থেকেও ৫-৪ গোলের জয় নিয়ে ফিরেছিল কাতালানরা। সেই ম্যাচের যেন বার্সার আত্মবিশ্বাসের কারণ ছিল গত রাতের ম্যাচে।

আরো পড়ুন:

পয়েন্টে শীর্ষে বার্সা, গোলে লেভানডোফস্কি

রিয়ালের ‘ব্ল্যাঙ্ক চেক’ প্রত্যাখ্যান করেছিলেন নেইমার

ম্যাচের ২২তম মিনিটেই ধাক্কা খায় অতিথী দল। বেনফিকার গ্রীক ফরোয়ার্ড ভাঞ্জেলিস পাভদিলিসের আক্রমণ ঠেকাতে গিয়ে ফাউল করে বসেন বার্সা ডিফেন্ডার পাউ কুবারসি। ফলশ্রুতিতে সরাসরি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় কুবারসিকে। তবে এরপরও রক্ষণে বাস পার্ক করায় কোনো বিপদ হয়নি স্প্যানিশ জায়ান্টদের।

শেজনির ম্যাচের ২০ সেকেন্ডের মাথায় আক্তুরকোগলুর ক্রস শট দুর্দান্তভাবে কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান। বাঁচান নিশ্চিত একটি গোল। পরে কুবারসি লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়ার পর, বারেইরোর আরেকটি শটও দক্ষতার সঙ্গে প্রতিহত করেন শেজনি। বিরতির ঠিক আগে, অবিশ্বাস্য প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে আক্তুরকোগলুর একেবারে কাছ থেকে করা হেডও প্রতিহত করেন।

বিরতির পরও, দক্ষতা দেখিয়ে যান। বিশেষ করে, ম্যাচ শেষের দিকে বক্সের সীমানা থেকে রেনাতোর নেওয়া জোরালো শট ঠেকিয়ে বার্সার জয় নিশ্চিত করেন। বেনফিকার হতাশা তখন চরমে পৌঁছে যায়। শেজনির মোট ৭টি দুর্দান্ত সেভে ম্যাচের চিত্র বদলে দেয়।

দ্বিতীয়ার্ধে পাল্টা আক্রমণের পরিকল্পনায় লামিনের জায়গায় ফেরানকে নামান ফ্লিক এবং কৌশল সফল হয়। আন্তোনিও সিলভার ভুল পাস রাফিনিয়া ছিনিয়ে নিয়ে অসাধারণ শটে ৬১তম মিনিটে দলকে এগিয়ে দেন, যা শেষ পর্যন্ত জয়সূচক গোলে পরিণত হয়।

আগামী ১১ মার্চ ফিরতি লেগে এগিয়ে থেকেই ঘরের মাঠে বেনফিকাকে আতিথিয়তা দিবে বার্সা। 

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চ য ম প য়নস ল গ শ জন র

এছাড়াও পড়ুন:

স্বাধীনতা পুরস্কার পাচ্ছেন পপসম্রাট আজম খান

জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ‘স্বাধীনতা পুরস্কার-২০২৫’ ঘোষণা করা হয়েছে। এতে সংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য পুরস্কার পাচ্ছেন পপগুরু আজম খান।

বাংলা পপ গান গেয়ে এদেশের সাধারণ মানুষের মন জয় করেছিলেন আজ খান। শুধু তাই নয়, তিনি এ ঘরানার গান গেয়ে ‘পপ সম্রাট’ উপাধি পেয়েছিলেন। সবাই তাকে গুরু বলেও সম্বোধন করতেন। আজম খান ১৯৫০ সালে জন্মগ্রহণ করেন।

অসাধারণ প্রতিভাধর মানুষ ছিলেন আজম খান। একবার শোনার পর যে গান ভালো লাগতে সেটাই কয়েকবার শুনতেন। এভাবে প্রিয় গানগুলো পরে হুবহু গাইতে পারতেন।

আজম খান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। আজম খান ক্লাস নাইনের ছাত্রাবস্থায় অনুধাবন করতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি শাসকরা বিভিন্নভাবে দেশের মানুষকে অনেক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত করছে। এমন অনুভব শক্তি আজম খানকে বিপ্লবী চিন্তার মানুষে পরিণত করে। সেই সময় তিনি জানতে পারেন ক্রান্তি শিল্পীগোষ্ঠীর কথা। গণসংগীতের চর্চা করতেন এই শিল্পীগোষ্ঠীর সদস্যরা। বন্ধুদের সঙ্গে এই শিল্পীগোষ্ঠী সংগীত পরিবেশন করতে থাকেন আজম খান।

ধীরে ধীরে মানুষের প্রশংসা পাওয়ার পর এই শিল্পীগোষ্ঠী ঢাকার বাইরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়া শুরু করেন। তাদের সাধারণ মানুষের জীবনের অভাব ও বঞ্চনার কথা তুলে ধরা হতো গানে গানে। প্রতিবাদী গান গাওয়ার জন্য পুলিশের লাঠির বাড়িও খেয়েছেন আজম খান। গণ–আন্দোলনের সময়গুলোতেও গান করে গেছেন আজম খান।

আজম খানের গাওয়া অনেক জনপ্রিয় গান এখনো মানুষের মুখে মুখে ফেরে। তার গাওয়া জনপ্রিয় গানগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘এত সুন্দর দুনিয়ায়’, ‘অভিমানী’, ‘অনামিকা’, ‘পাপড়ি’, ‘আলাল ও দুলাল’, ‘আসি আসি বলে তুমি আর এলে না’, ‘আমি যারে চাইরে’, ‘রেললাইনের ওই বস্তিতে’, ‘হাইকোর্টের মাজারে’, ‘জ্বালা জ্বালা’, ‘ও চাঁদ সুন্দর’, ‘বাধা দিয়ো না’, ‘ও রে সালেকা ও রে মালেকা’ও ‘জীবনে কিছু পাব না রে’।

২০১১ সালের ৫ জুন এ গায়ক অসংখ্য ভক্ত-অনুরাগীকে শোক সাগরে ভাসিয়ে অনন্তের পথে পাড়ি জমান পপ সম্রাট।

আজ খান ছাড়া আরও যে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা পাচ্ছেন তারা হলেন, এম এ জি ওসমানী, বদরুদ্দীন উমর, ফজলে হাসান আবেদ, নভেরা আহমেদ, আল মাহমুদ ও আবরার ফাহাদ।

স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার। ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সরকার ১৯৭৭ সাল থেকে প্রতি বছর এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের বীর শহিদদের স্মরণে প্রতি বছর বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবসে এই পদক প্রদান করা হয়।

পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা, ১৮ ক্যারেটের ৫০ গ্রাম ওজনের স্বর্ণের পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা ও একটি সম্মাননাপত্র প্রদান হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ