ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধে অংশ নেওয়ায় ব্রিটিশ যুবককে কারাদণ্ড দিল রাশিয়া
Published: 6th, March 2025 GMT
যুক্তরাজ্যের এক নাগরিককে ১৯ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন রাশিয়ার একটি আদালত। তাঁকে ইউক্রেনের হয়ে যুদ্ধ করা অবস্থায় রুশ বাহিনী আটক করেছিল।
তাঁর নাম জেমস স্কট রায়েস অ্যান্ডারসন। বয়স ২২ বছর। রাশিয়ার কুরস্ক অঞ্চলের সামরিক আদালতে তিন দিনের রুদ্ধদ্বার বিচার শেষে জেমসকে এ সাজা দেওয়া হয়েছে।
গতকাল বুধবার কুরস্ক অঞ্চলের সামরিক আদালতের প্রেস সার্ভিস জানায়, জেমসকে ‘ভাড়াটে সেনার কর্মকাণ্ড’ ও ‘সন্ত্রাসী কার্যকলাপের’ জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
গত নভেম্বরে জেমসকে আটক করার কথা জানা যায়। কুরস্ক অঞ্চলে ইউক্রেনের হয়ে রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে অংশ নেন তিনি। আটকের পর তাঁর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হলে দোষ স্বীকার করে নেন জেমস।
দণ্ডের শর্ত অনুযায়ী, জেমসকে প্রথম পাঁচ বছর কারাগারে কাটাতে হবে। এরপর তাঁকে একটি পেনাল কলোনিতে নির্বাসনে পাঠানো হবে। এটা এমন একটি দুর্গম জায়গা, যেখানে বন্দীদের সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে ও পৃথকভাবে রাখা হয়। সাজার বাকি সময়টা জেমসকে সেখানে কাটাতে হবে বলে জানিয়েছে প্রেস সার্ভিস।
আদালতের একটি ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, সাজার রায় অনুবাদ করে শোনানোর পর জেমস নীরবে মাথা নাড়াচ্ছেন।
যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্র ও কমনওয়েলথ-বিষয়ক দপ্তর বলছে, মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে জেমসকে সাজা দেওয়া হয়েছে।
দপ্তরের মুখপাত্র বলেন, ‘আন্তর্জাতিক আইন অনুসারে যুদ্ধবন্দীদের যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য বিচার করা যায় না। আমরা দাবি করছি, রাশিয়া জেনেভা কনভেনশনের আওতাধীন বাধ্যবাধকতার প্রতি সম্মান দেখাবে। রাজনৈতিক ও প্রচারণার উদ্দেশ্যে যুদ্ধবন্দীদের ব্যবহার বন্ধ করবে।’
আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সহায়তা স্থগিতে বিপদে ইউক্রেন ০৪ মার্চ ২০২৫এর আগে ২০২২ সালে রুশ অধিকৃত দোনেৎস্কের একটি আদালত যুক্তরাজ্যের দুজন নাগরিক এবং মরক্কোর এক নাগরিককে মৃত্যুদণ্ড দেন। তাঁদের বিরুদ্ধে ‘বিদেশি ভাড়াটে সেনা হিসেবে’ কাজ করা এবং ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে’ জড়িত থাকার অভিযোগ আনা হয়েছিল।
পরে সৌদি আরবের মধ্যস্থতায় করা একটি বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় ওই তিনজনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুনরাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে জাতিসংঘে যেভাবে বদলে গেল যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনবড় লক্ষ্য অর্জনে ইউক্রেনকে দূরে ঠেলছেন ট্রাম্প০১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
পাকিস্তানে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ভারত
ভারতনিয়ন্ত্রতি কাশ্মীরের পহেলগ্রামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার পর ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে। পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
রবিবার (২৭ এপ্রিল) মার্কিন সংবাদমাধ্যম নিউ ইয়র্ক টাইমস এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ভারত এই উত্তেজনা প্রশমনের বদলে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সামরিক পদক্ষেপের প্রস্তুতি নিচ্ছে।
আরো পড়ুন:
কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখায় ভারত-পাকিস্তান সেনাদের মধ্যে ফের গোলাগুলি
বাংলাদেশকেও পানি দেওয়া বন্ধের দাবি বিজেপির
পত্রিকাটি ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দেওয়া ব্রিফিংয়ের সঙ্গে জড়িত চার কূটনীতিকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ২২ এপ্রিলের পর থেকে এক ডজনেরও বেশি বিশ্বনেতার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। তবে এসব প্রচেষ্টা মূলত শান্তি আনার জন্য নয়, বরং সামরিক প্রতিক্রিয়ার ক্ষেত্র প্রস্তুতের অংশ।
গত বৃহস্পতিবার দেয়া এক ভাষণে মোদি ‘সন্ত্রাসের আস্তানা ধ্বংসের’ হুমকি দেন, যদিও তিনি সরাসরি পাকিস্তানের নাম নেননি।
নিউইয়র্ক টাইমস আরো জানায়, পরিস্থিতি অত্যন্ত উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে। ভারতীয় বাহিনী কাশ্মীরে তল্লাশি অভিযান জোরদার করেছে এবং হামলার সাথে জড়িতদের খুঁজতে শত শত মানুষকে গ্রেপ্তার করেছে।
এদিকে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী খাজা আসিফ হুঁশিয়ার করে বলেন, যদি পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়, আমাদের থামাতে কেউ পারবে না। তিনি আরও বলেন, যদি মোদি উত্তেজনা বাড়ানোর পথ বেছে নেন, তবে আমরা তাকে তার বাড়ি পর্যন্ত ধাওয়া করব।
আসিফ অভিযোগ করেন, মোদি মিথ্যা প্রচারণা চালানোর জন্য পরিচিত এবং পুলওয়ামা ঘটনার সময়ও একই কৌশল নিয়েছিলেন। তবে তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, পাকিস্তান যথেষ্ট শক্তিশালী এবং প্রয়োজন হলে উপযুক্ত জবাব দিতে প্রস্তুত রয়েছে।
এর আগে পাকিস্তানের দিকে বয়ে যাওয়া নদীগুলোর পানিপ্রবাহ বন্ধ করার ঘোষণা দেয় ভারত। সেই সঙ্গে পাকিস্তানি দূতাবাসের কিছু কর্মী ও ভারতে সফররত পাকিস্তানি নাগরিকদের দেশত্যাগের নির্দেশ দেওয়া হয়।
পাকিস্তানও পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ এবং ভারতীয় বিমানের জন্য আকাশসীমা বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছে।
গতকাল রবিবার কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর টানা চতুর্থ রাতের মতো ভারত ও পাকিস্তানের সেনাদের মধ্যে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।
সাত দশকের বেশি সময় ধরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর সংঘাতের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে, দুই দেশই এই অঞ্চল সম্পূর্ণ নিজেদের দাবি করে, তবে নিয়ন্ত্রণ করে আংশিকভাবে। কাশ্মীর ইস্যুতে দেশ দুটির মধ্যে তিনটি যুদ্ধ হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ