রাজধানীর ভাষানটেকে বিআরপি বস্তিতে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট। এ ঘটনায় হতাহতের খবর পাওয়া যয়নি। আজ বৃহস্পতিবার ১১টা ১৩ মিনিটে এ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের ডিউটি অফিসার লিমা খানম। তিনি বলেন, ভাষানটেকের বস্তিতে আগুন লেগেছে। আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে ফায়ার সার্ভিস। তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি।

এর আগে বুধবার রাতে রাজধানীর গাবতলীতে শাহী মসজিদের পাশের বস্তির অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। বুধবার দিনগত রাত ৪টা ৩৬ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা আনারুল ইসলাম জানান, বুধবার দিনগত রাত ৪টা ৩৬ মিনিটে গাবতলীতে শাহী মসজিদের পাশের বস্তির আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

তিনি আরও জানান, রাত ৩টা ৮ মিনিটে গাবতলীর শাহী মসজিদ বস্তিতে আগুন লাগার খবর পাওয়া যায়। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের প্রথম ইউনিট ৩টা ১২ মিনিটে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভানো শুরু করে। পরে কল্যাণপুর, মোহাম্মদপুর, মিরপুর ও তেজগাঁও ফায়ার স্টেশনের আটটি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে যুক্ত হয়। দেড় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।

তবে আগুনের সূত্রপাত, ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের বিষয়ে কোনো তথ্য জানানো হয়নি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আগ ন ইউন ট

এছাড়াও পড়ুন:

ছাত্রদল নেতার শেল্টারে জবিতে জুলাই হত্যা মামলার আসামি

জুলাই হত্যা মামলার আসামি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) আওয়ামীপন্থি ‘জয় বাংলা শিক্ষক সমাজ’ এর আহ্বায়ক ও বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মিল্টন বিশ্বাস ক্যাম্পাসে এলে আটক করেন শিক্ষার্থীরা।

আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে জবি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজাউদ্দিন সুজা ও ছাত্রদল নেতা আবু বকর খানের ছত্রছায়ায় তিনি ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার (৫ মার্চ) সন্ধ্যার পূর্ব মুহুর্তে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলে কলাভবনের সামনে থেকে জবি শিক্ষার্থীরা তাকে আটক করেন। পরে ওই শিক্ষককে প্রক্টরের জিম্মায় শিক্ষার্থীরা ছেড়ে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শী ও শিক্ষার্থীরা জানান, চব্বিশের ছাত্র-জনতার আন্দোলনে হামলার ঘটনায় মিল্টন বিশ্বাসের নামে দুইটি হত্যা মামলা রয়েছে। এ মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির কাছে একটি চিঠি নিয়ে আসেন। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন জন সুশান্ত বিশ্বাস নামে এক ব্যাক্তি। জন সুশান্ত নিজেকে তার আত্মীয় ও ছাত্রদল নেতা বলে পরিচয় দেন। তবে ছাত্রদলে তার কোন পদ-পদবি নেই।

এদিকে, বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীক  বিভিন্ন ফেসবুক পেজে শিক্ষার্থীদের মিল্টন বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করাতে ১২ লাখ টাকার লেনদেনের অভিযোগ করে পোস্ট করতে দেখা গেছে। তাদের অভিযোগ, ২৪-এর ছাত্র হত্যা মামলার আসামিকে কেন ছাত্রদল নেতা আবু বকর, সাংবাদিক সমিতির সাবেক নেতা সুজা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে দিল? তাদের শেল্টারেই এ শিক্ষক প্রবেশ করেছেন।   

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ওমর ফারুক জিলন বলেন, “ক্যাম্পাসের শিক্ষার্থী আবু বকরের সঙ্গে জনি নামের একজন লোকসহ বাংলা বিভাগের শিক্ষক মিল্টন বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসে ঘোরাঘুরি করতে দেখি। মিল্টন বিশ্বাসকে ধরার পর তার হাতে মামলা প্রত্যাহার করার জন্য একটা দরখাস্ত দেখতে পাই।

“জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, ‘দরখাস্ত রইছ উদ্দিন স্যারের কাছে নিয়ে আসছি।’ কার সঙ্গে যোগাযোগ করে আসছে জিজ্ঞেস করলে তিনি সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. সুজা উদ্দিন সুজার নাম জানান। মিল্টন বিশ্বাসের নামে দুটো হত্যা মামলা রয়েছে,”- যুক্ত করেন তিনি।

এ সময় নিজেকে ছাত্রদল নেতা পরিচয় দেওয়া জনের মোবাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আবু বকরের ফোন নাম্বার পাওয়া যায়। জবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সদস্য আবু বকর এবং সাবেক সাংবাদিক নেতা সুজাউদ্দিনের সুজা সঙ্গে যোগসাজশে ক্যাম্পাসে এসেছেন বলে বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী অভিযোগ করেন। 

এ বিষয়ে মিল্টন বিশ্বাস বলেন, “আমার নামে দুইটা মামলা আছে। মামলা থেকে অব্যাহতির জন্য আমি শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক রইছ উদ্দিন স্যারের কাছে চিঠি দিতে এসেছিলাম।”

কার শেল্টারে এসেছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক সাংবাদিক নেতা সুজাউদ্দীন সুজা ও আলামিনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এসেছি।”

এর আগেও ক্যাম্পাসে এসে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাসির উদ্দীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন তিনি। এ ব্যাপারে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক নাছির উদ্দীন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যেকোন শিক্ষার্থী ও শিক্ষক আমার সঙ্গে দেখা করতে চাইলে আমি তো না করতে পারি না। মিল্টন স্যার একজন শিক্ষক হিসেবে দেখা তো করতেই পারেন।”

মিল্টন বিশ্বাসের সঙ্গে থাকা তার আত্মীয় পরিচয় দেওয়া জন বলেন, “আমি ছাত্রদলের কেউ নই। মিল্টন বিশ্বাসের সঙ্গে এসেছিলাম। আমার ভুল হয়েছে।”

শেল্টার দেওয়া বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রদল নেতা আবু বকর বলেন, “জনের বাড়ি আমার জেলায়। তিনি ক্যাম্পাসে আসার পরে আমার সঙ্গে পরিচয় হয়েছে। তার সঙ্গে আগে থেকে কখনো যোগাযোগ ছিল না।”

অভিযোগের বিষয়ে সাংবাদিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুজাউদ্দিন সুজা বলেন, “আমার নামে মিথ্যা, বানোয়াট অভিযোগ তুলে একটা চক্রান্তকারী মহল ফাসানোর চেষ্টা চালিয়েছে। এগুলো বিষয়ে আমার কোন সম্পৃক্ততা নেই এবং আমি অবগত নই।”

দরখাস্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দিন বলেন, “সে আমার কাছে মামলা বাতিলের জন্য আবেদন নিয়ে আসে। পরে আমি তাকে বলি এটা শিক্ষক সমিতির অফিসে জমা দেবেন। আমার এখান থেকে বের হয়ে যাওয়ার পর এই ঘটনা ঘটে।”

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তাজামুল হক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের জন্য নিরাপদ এলাকা। আমরা কোন শিক্ষক-শিক্ষার্থীকে পুলিশ প্রশাসনের হাতে এভাবে তুলে দিতে পারি না। আমি এর বাইরে কিছু বলতে চাই না।”

ঢাকা/লিমন/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ