বঙ্গোপসাগরে চারদিন ধরে ভাসতে থাকা ১৩ জন জেলেকে উদ্ধার করেছে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড। ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ার কারণে সুন্দরবনের দুবলার চর এলাকায় আটকা পড়া একটি ফিশিং ট্রলার থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়।

কোস্ট গার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মো. সিয়াম-উল-হক বৃহস্পতিবার সকালে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, বুধবার দুপুর ২টায় জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বর থেকে ফোন পেয়ে কোস্ট গার্ডের একটি উদ্ধারকারী দল দ্রুত অভিযানে নামে।

‘এমভি মা বাবার দোয়া’ নামের ওই ফিশিং ট্রলারটি চারদিন ধরে ইঞ্জিন বিকল অবস্থায় বঙ্গোপসাগরের দুবলারচরের আলোরকোল থেকে প্রায় ১০ নটিক্যাল মাইল পশ্চিমে ভাসছিল। খবর পেয়ে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের আওতাধীন আউটপোস্ট দুবলা থেকে চার সদস্যের একটি উদ্ধারকারী দল দ্রুত ট্রলারটির অবস্থান শনাক্ত করে এবং বৃহস্পতিবার সকালে ১৩ জন জেলেকে সফলভাবে উদ্ধার করে।

উদ্ধারের পর ট্রলারসহ জেলেদের নিরাপদে দুবলার চরে নিয়ে আসা হয়। জানা গেছে, বরগুনার পাথরঘাটা থেকে মাছ ধরতে ১২ দিন আগে সমুদ্রে যাত্রা করেছিল এই ট্রলারটি। ইঞ্জিন বিকল হয়ে পড়ার কারণে তারা চারদিন ধরে সাগরে ভাসছিলেন এবং খাবার ও পানির সংকটে পড়েন।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: উদ ধ র

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় অভিমানে গলায় ফাঁস নিলেন স্বামী!

কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে স্ত্রী বাড়ি না ফেরায় অভিমানে এক যুবক আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। যুবকের নাম শাহ জালাল (২২)। তিনি কুলিয়ারচর ছয়সূতি ইউনিয়নের মধ্যপাড়া এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে।

খবর পেয়ে শুক্রবার রাতে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মরদেহ উদ্ধার করেছে ভৈরব থানা পুলিশ।

স্থানীয়রা জানান, চার বছর আগে কুলিয়ারচরে মধ্য লালপুর এলাকার মনির মিয়ার মেয়ে জান্নাত বেগমের সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে করেন শাহ জালাল। তাদের পরিবারে নুসরাত নামে দেড় বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। শাহ জালাল ঢাকা শহরে জুতার কাজ করেন। মনির মিয়া সম্পর্কে নিহত শাহ জালালের মামা হোন। বিয়ের পর থেকেই শাহ জালাল তার শ্বশুর বাড়ি ও ঢাকায় থাকতে শুরু করেন। তার স্ত্রী জান্নাত বেগমের বাবা ও মা ঢাকায় থাকতেন। সেই সুবাদে মেয়েকেও প্রায় সময় ঢাকায় নিয়ে যেতেন। পরিবারের সচ্ছলতা নিয়ে প্রায় সময় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো। এদিকে ছেলেকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে নতুন ঘর নির্মাণ করে দেন তার মা। কয়েকদিন থেকে স্বামীর বাড়িতে থেকে স্ত্রী অভিমান করে বাবার বাড়ি চলে যায়। স্ত্রীকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে ২৫ এপ্রিল শুক্রবার স্ত্রী জান্নাতের কাছে গেলে তাদের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। বিকাল পাঁচটায় নিজ ঘরে এসে স্ত্রীর ওড়না গলায় পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে শাহ জালাল। পরিবারের সদস্যরা ফাঁসি থেকে নামিয়ে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিহতের চাচাতো ভাই মামুন বলেন, বউকে বাড়ি ফিরিয়ে আনতে গিয়ে বাড়ির পাশে একটি বাগানে আমার ভাই দেখেন তার স্ত্রী অন্য একটি ছেলের সঙ্গে কথা বলছে। এতে শাহ জালাল ক্ষিপ্ত হলে স্ত্রীর সাথে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে সে বাড়ি এসে আত্মহত্যা করেছে।

মা শাহানা বেগম বলেন, আমার ছেলেকে বিয়ের পর থেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন মানসিক নির্যাতন করে আসছে। আমি ও আমার ছেলেকে তার শ্বশুরবাড়ির লোকজন একাধিকবার মারধর করেছে। তারা চাইতো আমার ছেলে যেন তাদের মেয়েকে ছেড়ে দেয়। আমার ছেলে তার স্ত্রীকে অনেক ভালোবাসতো। কিন্তু তার স্ত্রী তাদের বাবা-মায়ের কথায় চলাফেরা করতো। এ নিয়ে আমার ছেলের সাথে প্রায় সময় ঝগড়া হতো। ২৫ এপ্রিল শুক্রবার বিকালে আমার ছেলে তার স্ত্রীকে ফিরিয়ে আনতে গেলে সে আসতে চায়নি। আমার ছেলে তাকে বলে এসেছে সে যেহেতু আসতে চায় না তাহলে তাকে মুক্ত করে শান্তিতে থাকতে দিবে। বিকালে নিজ ঘরে এসে শাহ জালাল আত্মহত্যা করেছে।

তিনি অভিযোগ করে আরও বলেন, আমার ছেলেকে তার স্ত্রী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন আত্মহত্যা করতে বাধ্য করেছে। এখন আমার পরিবারের কী হবে? তার ছোটো মেয়েটাকে নিয়ে কীভাবে চলবো?

এ বিষয়ে ভৈরব থানার এসআই শফিকুল ইসলাম শফিক বলেন, হাসপাতাল থেকে খবর পেয়ে মরদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। আজ শনিবার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ