এ বছরের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে
Published: 6th, March 2025 GMT
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন হতে পারে। কত দ্রুত সংস্কার হয় তার ওপর নির্বাচনের এই সময়সীমা নির্ভর করছে। কারণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসব সংস্কার প্রয়োজন।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে গত বছর ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ার পর নতুন সরকারের দায়িত্ব নিতে বলা হলে তিনি চমকে গিয়েছিলেন বলে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন নেতা ড.
তিনি বিবিসিকে বলেন, আমার কোনো ধারণা ছিল না যে— আমি সরকারের নেতৃত্ব দেব। আমি এর আগে কখনও সরকারি কর্মযজ্ঞ পরিচালনা করিনি এবং এরপরও পরিস্থিতি বুঝে ঠিকভাবে কাজ করতে হয়েছিল।
নোবেল পুরস্কার বিজয়ী এই অর্থনীতিবিদ বলেন, একবার এটি স্থির হয়ে গেলে আমরা অন্যান্য কিছু জিনিস সংগঠিত করতে শুরু করি। যার মধ্যে— আইনশৃঙ্খলা পুনরুদ্ধার করা এবং অর্থনীতি ঠিক করা দেশের জন্য অগ্রাধিকার ছিল।
ছাত্র-জনতার ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ক্ষমতাচ্যুত হয়ে গত বছরের আগস্টের শুরুতে শেখ হাসিনা পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন। তারপর থেকে তিনি ভারতেই নির্বাসনে রয়েছেন। নাটকীয় এই পটপরিবর্তনের পর একে একে বের হয়ে আসছে সাবেক স্বৈরাচারী সরকারের গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের ভয়াবহ নানা চিত্র। হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি হয়েছে, দাবি উঠেছে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচারেরও।
এমন অবস্থায় এই বছরের শেষের দিকে নির্বাচন আয়োজন করার আশা করছেন ড. ইউনূস। ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সেখানেই নির্বাসনে থাকা হাসিনা এবং তার দল সেই নির্বাচনে অংশ নেবে কিনা তাও স্পষ্ট নয়। মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে বিচারের জন্য হাসিনাকে ফেরত চাচ্ছে বাংলাদেশ।
অধ্যাপক ইউনূস ঢাকায় তার সরকারি বাসভবনে বিবিসিকে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে বলেন, তাদের (আওয়ামী লীগকে) সিদ্ধান্ত নিতে হবে তারা এটা (নির্বাচন) করতে চায় কিনা, আমি তাদের জন্য সিদ্ধান্ত নিতে পারি না। নির্বাচনে কারা অংশগ্রহণ করবে তা নির্বাচন কমিশন সিদ্ধান্ত নেয়।
তিনি বলেন, শান্তি ও শৃঙ্খলা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জিনিস এবং এরপর অর্থনীতি। (সাবেক সরকারের রেখে যাওয়া) এটি এক ছিন্নভিন্ন অর্থনীতি, বিধ্বস্ত অর্থনীতি। এটা এমন কিছু যেন ১৬ বছর ধরে কিছু ভয়ানক টর্নেডো হয়েছে এবং আমরা এখন টুকরোগুলো তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছি।
বিবিসি বলছে, শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন এবং নিপীড়কের মতো বা নির্মম উপাযে বাংলাদেশ শাসন করেন। তার আওয়ামী লীগ সরকারের সদস্যরা নির্মমভাবে ভিন্নমতের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালায়। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে হাসিনার বিরুদ্ধে মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের হত্যা ও জেলে পাঠানোর ব্যাপক অভিযোগ ছিল।
তবে গত বছরের জুলাই-আগস্টে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন ব্যাপক গণআন্দোলন ও বিদ্রোহ হাসিনাকে ক্ষমতা ছাড়তে ও দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য করে। বিক্ষোভকারীদের আহ্বানে ড. ইউনূস নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্ব দিতে বাংলাদেশে ফিরে আসেন।
অধ্যাপক ইউনূস জানান, তিনি ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের মার্চের মধ্যে নির্বাচন আয়োজন করবেন। তার সরকার কত দ্রুত সংস্কার করতে পারে তার ওপর নির্বাচনের এই সময়সীমা নির্ভর করছে। কারণ অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এসব সংস্কারকে প্রয়োজনীয় বলে মনে করেন তিনি।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বলেন, যদি আমাদের ইচ্ছা মতো দ্রুত সংস্কার করা যায়, তাহলে ডিসেম্বরে আমরা নির্বাচন করতে পারবো। আর যদি সংস্কারের পরিমাণ বেশি হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের আরও কয়েক মাস সময় লাগতে পারে।
গত গ্রীষ্মে বাংলাদেশকে ঘিরে থাকা সহিংস বিক্ষোভের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমরা সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খলা থেকে এসেছি। (এমন বিশৃঙ্খলা যেখানে) মানুষকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছিল।
কিন্তু প্রায় সাত মাস পেরিয়ে গেলেও ঢাকার মানুষ বলছেন, আইনশৃঙ্খলা এখনও পুনরুদ্ধার হয়নি এবং পরিস্থিতি ভালো হচ্ছে না। ড. ইউসূস বলেন, বেটার (ভালো) একটি আপেক্ষিক শব্দ। উদাহরণস্বরূপ যদি আপনি গত বছরের একই সময়ের সাথে তুলনা করেন তবে এটি (আইনশৃঙ্খলা) ঠিক আছে। এখন যা ঘটছে, তা অন্য সময়ের চেয়ে আলাদা বা ভিন্ন কিছু নয়।
অধ্যাপক ইউনূস বাংলাদেশের বর্তমান দুর্দশার জন্য আগের সরকারকে দায়ী করেন। তিনি বলেন, এই ধরনের ঘটনাগুলো হওয়া উচিত— তা আমি সমর্থন করছি না। আমি বলছি যে, আপনাকে বিবেচনা করতে হবে, আমরা কোনও আদর্শ দেশ বা আদর্শ শহর নই যা আমরা হঠাৎ করে তৈরি করেছি। এই অবস্থা হচ্ছে দেশের ধারাবাহিকতা যা আমরা উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি, এমন একটি দেশ যেখানে এসব বহু, বহু বছর ধরে চলছে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ড ইউন স ড স ম বর সরক র র গত বছর র জন য বছর র ইউন স
এছাড়াও পড়ুন:
‘মেসিকে মেসির মতো থাকতে দিন’, ভক্ত–সমর্থকদের আর্জেন্টিনার ফুটবলপ্রধানের আহ্বান
লিওনেল মেসি কি ২০২৬ বিশ্বকাপে খেলবেন?
অনেক দিন ধরেই প্রশ্নটি উঠছে। স্বয়ং মেসিই এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন একাধিকবার। তাঁর সব কথার ভেতরে প্রচ্ছন্ন একটি বার্তাই বারবার ফুটে উঠেছে। আগামী বিশ্বকাপে খেলার বিষয়ে মেসি আগেভাগে কোনো প্রতিশ্রুতি দিতে চান না। নিজের ফিটনেসে খেয়াল রেখে প্রতিটি দিন ধরে ধরে এগোতে চান। অর্থাৎ বিশ্বকাপ দরজায় কড়া নাড়া পর্যন্ত মেসি সবদিক থেকে ফিট থাকলে হয়তো খেলবেন। যদিও তাঁর আশপাশের মানুষ বেশ আগে থেকেই আশায় তা দিচ্ছেন। আর্জেন্টিনা কোচ লিওনেল স্কালোনি থেকে জাতীয় দলের মেসির বেশ কয়েকজন সতীর্থই তাঁকে ২০২৬ বিশ্বকাপে দেখছেন।
আরও পড়ুনএল ক্লাসিকো: যে কারণে রিয়াল জিততে পারে, হারতে পারে যে কারণে৬ ঘণ্টা আগেযেমন দেখছেন আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের (এএফএ) সভাপতি ক্লদিও তাপিয়াও। টিওয়াইসি স্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাপিয়া বলেছেন, ‘আশা করি, সে বিশ্বকাপে খেলবে। আমরা সবাই এটা চাই। সে এটার যোগ্য। ব্যাপারটা তার ওপর নির্ভর করছে, তার ইচ্ছা ও সে কেমন করছে, তার ওপর।’
অবশ্যই এই সিদ্ধান্ত মেসির। কিন্তু সেটি তিনি জানানোর আগেই চারপাশ থেকে তাঁর খেলার বিষয়ে প্রত্যাশার বেলুনও ফোলানো হচ্ছে প্রচুর। তাপিয়া এখানে ব্যতিক্রম। তাঁর চাওয়া মেসিকে খামাখা চাপে না ফেলে তিনি নিজের মতো থাকুক, খেলাটি উপভোগ করুক, ‘তাকে তার মতো থাকতে দিতে হবে, উপভোগ করতে দিতে হবে। বিশ্বের সেরা খেলোয়াড়কে আমরা নিজেদের জাতীয় দলে খেলতে দেখছি, এটাই তো যথেষ্ট।’
এএফএ সভাপতি ক্লদিও তাপিয়া