রাজধানীর নিউ ইস্কাটনের বিসিএস প্রশাসন কল্যাণ সমিতি (বিয়াম ফাউন্ডেশন) ভবনে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা এখনও রহস্যে ঘেরা। সেদিন প্রকৃতপক্ষে কী ঘটেছিল তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস।

এদিকে দগ্ধ গাড়িচালক ফারুক মীর (৪০) বুধবার বিকেলে জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে মারা গেছেন। ২৭ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি দগ্ধ হন। একই ঘটনায় দগ্ধ হয়ে সেদিনই মারা যান বিয়ামের অফিস সহকারী আবদুল মালেক খান।

ফায়ার সার্ভিসের ঢাকা বিভাগের উপপরিচালক ছালেহ্ উদ্দিন সমকালকে বলেন, সেখানে একটি বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। তবে সেটি এসি বিস্ফোরণ, নাকি অন্য কিছু তা তদন্তের পর বলা যাবে। প্রাথমিকভাবে নাশকতার কোনো আলামত পায়নি ফায়ার সার্ভিস।

পুলিশ কর্মকর্তারা এখনই সুনির্দিষ্ট কিছু বলতে রাজি নন। হাতিরঝিল থানার ওসি মোহাম্মদ রাজু জানান, সিসিটিভি ফুটেজের ভিত্তিতে সন্দেহভাজন একজনকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন তারা। গুরুত্ব দিয়ে ঘটনার তদন্ত চলছে।

বিস্ফোরণের দিন পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, এসি বিস্ফোরিত হয়ে অগ্নিকাণ্ড। বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে এ ঘটনা ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা। তবে পরে বলা হয়, এসি বিস্ফোরিত হয়েছে নাকি অন্য কোনো ঘটনা, তা তদন্ত শেষে বলা যাবে।

এরই মধ্যে বিয়াম বিবৃতিতে জানায়, বিস্ফোরণের আগে রাত আড়াইটার দিকে মাস্ক ও ক্যাপ পরা এক যুবক ভবনে ঢোকেন, যা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে। বিস্ফোরণের পর তাকে বের হয়ে যেতে দেখা যায়। সার্বিক পর্যবেক্ষণে তাদের ধারণা, এটি পরিকল্পিত নাশকতা।

জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন শাওন বিন রহমান বলেন, ফারুকের শরীরের ৪৭ শতাংশ দগ্ধ হওয়ায় শুরু থেকেই আশঙ্কাজনক ছিলেন। বুধবার তাঁর আরও অবনতি হতে শুরু করে। এক পর্যায়ে বিকেল ৪টার দিকে মৃত্যু হয়।

ফারুকের ছোট ভাই তোফায়েল মীর জানান, তাদের বাড়ি ভোলার দক্ষিণ আইচা থানার নজরুল নগর গ্রামে। বাবার নাম মফিজ মীর। তার ভাই মাস্টার রোলে বিয়াম কার্যালয়ে সচিব পদমর্যাদার কর্মকর্তা মোশারফ হোসেনের গাড়িচালক ছিলেন। ফারুক বিয়াম ভবনেই থাকতেন। আগে তিনি প্রায় ১৫ বছর ঢাকা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের গাড়িচালক ছিলেন। তাঁর স্ত্রী ফারজানা আক্তার ফাহিমা, এক মেয়ে ও দুই ছেলে গ্রামের বাড়িতে থাকেন।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাত ৩টার দিকে বিয়াম ভবনের পঞ্চমতলায় বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে হতাহতের ঘটনাকে বোমা হামলা দাবি করে ১ মার্চ বিবৃতি দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। পরে ‘ভুল তথ্যের ভিত্তিতে বিবৃতি’ দেওয়ায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

প্রশ্নের জন্ম দিয়ে ওয়ানডেকে বিদায় বললেন স্মিথ

ভারতের বিপক্ষে মঙ্গলবার আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রথম সেমি ফাইনালে যখন ব্যাটিং করছিলেন স্টিভেন স্মিথ, তখন মনে হচ্ছিল ‘স্লো ও লো’ উইকেটে বিপদে পড়া দলের কিভাবে খেলতে হয় তার একটা ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। অথচ পরের দিনই কিনা একদিনের আন্তর্জাতিক (ওডিআই) ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়ে দিলেন ৩৫ বছর বয়সী এই অস্ট্রেলিয়ান ব্যাটসম্যান। অবাক করা বিষয় হচ্ছে টি-টোয়েন্টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অব্যাহত রাখবেন তিনি। যা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। আর চালিয়ে যাবেন টেস্ট ক্রিকেটও।

স্মিথ সেমিফাইনালে ভারতের বিপক্ষে পরাজয়ের পর তৎক্ষনিকভাবেই তার সতীর্থদের জানিয়ে দিয়েছিলেন যে, তিনি তার শেষ ওডিআই ম্যাচ খেলে ফেলেছেন। অর্থাৎ ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ার দলের অংশ হতে চাচ্ছেন না তিনি। এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে অজিদের নিয়মিত অধিনায়ক প্যাট কামিন্সের অনুপস্থিতিতে স্মিথই অধিনায়ক্ত্ব করেছিলেন।

ওয়ানডেতে দুটি বিশ্বকাপ জেতেছেন স্মিথ। ঘরের মাঠে ২০১৫ সালে এবং ভারতে অনুষ্ঠিত সবশেষ ২০২৩ সালে। তাছাড়া অয়ানডে ক্যারিয়ারে অনেক সুখস্মৃতি আছে বলেও উল্লেকজ করেন তিনি। স্মিথ বিদায়ী বার্তায় বলেন তিনি ওয়ানডে ক্যারিয়ার দারুণ উপভোগ করেছেন, “এটি একটি চমৎকার যাত্রা ছিল এবং আমি প্রতিটি মুহূর্ত উপভোগ করেছি। অনেক দারুণ সময় এবং অসাধারণ স্মৃতি রয়েছে। দুটি বিশ্বকাপ জেতা ছিল একটি বড় মাইলফলক। পাশাপাশি অনেক দুর্দান্ত সতীর্থরা যারা এই যাত্রা ভাগ করেছেন।”

আরো পড়ুন:

টেস্টে স্মিথের ক্যাচের ডাবল সেঞ্চুরি

‘দশ হাজারি’ ক্লাবে স্টিভেন স্মিথ

অধিনায়ক কামিন্স এবং নির্বাচকদের ২০২৭ সালের দল গঠনের চাপ আছে। তাদেরকে সেই সুযোগ করে দেওয়ার পেছনে এই অবসরের একটা কারণ আচক্সহে বলে উল্লেখ করেছেন স্মিথ। তাহলে প্রশ্ন আসতেই পারে সাদা বলের সংক্ষিপ্ত সংস্করণ টি-টোয়েন্টি থেকে অবসরে যাচ্ছেন না কেন? এর কারণ সম্ভবত সারা বিশ্বের ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টিতে নিজের বাজারদ র উপরের দিকেই রাখাটা হয়ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

স্মিথ বলেন, “এখন ২০২৭ সালের বিশ্বকাপের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য একটি ভালো সুযোগ এসেছে দলের। তাই এটা অনুভব হচ্ছে যে সরে যাওয়ার সঠিক সময় এটি।”

যদিও টেস্ট ক্রিকেটে এখনও নিজের অনেক কিছু দেওয়ার আছে বলে বিশ্বাস করেন স্মিথ, “টেস্ট ক্রিকেট এখনও আমার অগ্রাধিকার এবং আমি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনাল, শীতকালীন ক্যারিবিয়ান সফর এবং ঘরের মাটীয়তে অ্যাশেজ সিরিজ নিয়ে সত্যিই উত্তেজিত। আমি মনে করি আমি এখনও ওই পর্যায়ে অনেক কিছু অবদান রাখতে পারব।”

স্মিথের ওয়ানডেতে অভিষেক হয়েছিল ২০১০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর ১৭০ ওয়ানডেতে তিনি অস্ট্রেলিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করেন। যেখানে ৪৩.২৮ গড়ে ও ৮৬.৯৬ স্ট্রাইকরেটে ৫৮০০ রান করেছেন তিনি। ১২টি সেঞ্চুরির পাশাপাশি পেয়েছেন ৩৫টি হাফ সেঞ্চুরি। এছাড়াও পার্ট টাইম বোলিং করে তুলেছেন ২৮টি উইকেট।

ঢাকা/নাভিদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • তিন দফা সময় পেলেও জমা দিয়েছেন অর্ধেক
  • প্রশ্নের জন্ম দিয়ে ওয়ানডেকে বিদায় বললেন স্মিথ
  • ওয়ানডে থেকে অবসরে স্টিভ স্মিথ
  • বেতনের ৪৮ লাখ টাকা এখনও পাননি সাকিব
  • প্রেমিকার সাবেক স্বামীর ফাঁদে প্রাণ গেছে তাজকীরের