ঢাকার ধামরাইয়ের সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) এম এ মালেককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে ছাত্র-জনতা হত্যার চারটি মামলা রয়েছে। বুধবার রাতে রাজধানীর মিরপুরের বাসায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনূর কবির। তিনি বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে হামলার ঘটনায় আহত ও নিহতদের স্বজনরা ধামরাই ও আশুলিয়া থানায় একাধিক মামলা করেছেন। এমন চারটি মামলার আসামি এমএ মালেক। আজ বৃহস্পতিবার রিমান্ড চেয়ে তাকে ঢাকার আদালতে পাঠানো হবে।

এমএ মালেক ধামরাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ঢাকা-২০ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। 

উল্লেখ্য, এমএ মালেক ধামরাই উপজেলার কুশুরা ইউনিয়ন পরিষদের পরপর তিনবারের সাবেক চেয়ারম্যান ও ২০১৪ সালে দশম জাতীয় সংসদে তিনি বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য হন। এরপর দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে অংশগ্রহণ করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বেনজীর আহমদের কাছে পরাজিত হন তিনি।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আওয় ম ল গ এমপ এমএ ম ল ক

এছাড়াও পড়ুন:

দ্রুত পথরেখা ঘোষণা করা হোক

রাষ্ট্র সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মতদ্বৈধতা সত্ত্বেও সম্ভাব্য প্রার্থীরা নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়েছেন। এত দিন লোকচক্ষুর আড়ালে থাকলেও গত ঈদের ছুটিতে ছোট–বড় ও পুরোনো–নতুন দলের নেতারা প্রকাশ্যে এসেছেন। অনেকে দলের নামে দোয়া চেয়ে পোস্টারও ছেড়েছেন। যদিও এটি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন কেউ কেউ।

প্রথম আলোর প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আগস্ট অভ্যুত্থানে নেতৃত্বে থাকা ছাত্রদের নিয়ে গঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতারা ৩৯টি আসনে জনসংযোগ করেছেন ঈদের ছুটিতে। এসব গণসংযোগ হয়েছে নানা উপলক্ষে। কোথাও আগস্ট অভ্যুত্থানের শহীদ পরিবার ও আহতদের সহায়তা করতে, কোথাও প্রীতি ফুটবল ও ক্রিকেট খেলা উপলক্ষে।

এ কথার অর্থ এই নয় যে অন্য দলগুলোর নেতারা চুপচাপ বসে ছিলেন। বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি, বামপন্থী দলের নেতারা ঈদের ছুটিতে জনসংযোগ করেছেন। জনসংযোগের ক্ষেত্রে বিএনপির সমস্যা হলো, প্রায় সব আসনে তাদের একাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী আছেন। এ নিয়ে ভবিষ্যতে যে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বকে কোথাও কোথাও চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে, তার আলামত ইতিমধ্যে পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির নেতা–কর্মীদের মধ্যে যে বিভিন্ন স্থানে হানাহানি চলছে, তার পেছনেও আছে নির্বাচনী হিসাব–নিকাশ।

রাজনৈতিক নেতাদের এই জনসংযোগ দেখে এ ধারণা করা অমূলক হবে না যে ভেতরে–ভেতরে তাঁরা নির্বাচনী প্রস্তুতি নিচ্ছেন। কিন্তু রাষ্ট্রীয় সংস্কারের বিষয়ে তেমন অগ্রগতি নেই। গুরুত্বপূর্ণ ছয়টি কমিশনের প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর জাতীয় ঐকমত্য কমিশন বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনায় বসলেও এখনো অনেক দল বাকি আছে। যেকোনো সিদ্ধান্তে আসতে হলে সব দলের সঙ্গে আলোচনার পর্বটি দ্রুত শেষ করা প্রয়োজন। 

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা যখন চলমান, তখন রাজনৈতিক মহলে দুটি বিপজ্জনক প্রচার লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রথমটি হলো সংস্কারের কী প্রয়োজন, দ্রুত নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হোক। দ্বিতীয় প্রচার হলো আপাতত নির্বাচনের প্রয়োজন নেই, যত দিন দরকার এই সরকার থাকুক।

স্বাভাবিকভাবেই সংস্কার ও নির্বাচন দুটি বিষয় নিয়েই জনমনে একধরনের সংশয় ও সন্দেহ দেখা দিয়েছে। আগে কারও সঙ্গে দেখা হলে প্রথম প্রশ্ন আসত, নির্বাচনটি কবে হবে। এখন অনেকেই প্রশ্ন করেন, নির্বাচন হবে তো?

রাজনীতিকদের অনেকেই সংস্কারকে নির্বাচনের এবং নির্বাচনকে সংস্কারের প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখতে চাইছেন। কিন্তু বাস্তবে তো একটি আরেকটির প্রতিপক্ষ নয়; বরং পরিপূরক। একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন যেমন সংস্কারের অংশ, তেমনি স্বৈরতন্ত্রের পুনরাগমন ঠেকাতে সংস্কার জরুরি। কতটা সংস্কার নির্বাচনের আগে হবে, কতটা পরে হবে, এ নিয়ে বিতর্ক থাকতে পারে। কিন্তু সংস্কার অপরিহার্য।

আমরা মনে করি, সংস্কার ও নির্বাচন করতে হলে রাজনৈতিক দলগুলোকে ন্যূনতম ঐকমত্যে আসতে হবে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশন সব দলের সঙ্গে কথা না বললেও তাদের মতামত পেয়েছে; এর ভিত্তিতে তারা কোনো উপসংহার টানতে পারে। তবে উত্তম পন্থা হলো সব দলের ঐকমত্যের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ। এ ক্ষেত্রে খুব বেশি বিলম্ব কাম্য নয়, তাতে সংশয়–সন্দেহ আরও বাড়বে। রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা শেষ করে সরকার সংস্কার ও নির্বাচনের বিষয়ে দ্রুত একটা পথরেখা ঘোষণা করবে, এটাই প্রত্যাশিত।

সম্পর্কিত নিবন্ধ