সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরার সময় ৬টি ট্রলারসহ বাংলাদেশের ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। গতকাল বুধবার দুপুরে সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণে ১০–১৫ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগরে ওই ঘটনা ঘটে।

ওই ছয়টি ট্রলারের মালিক হলেন টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা বশির আহমদ, মো.

আমিন, নুরুল আমিন, আবদুর রহিম ও মো. শফিক। এর মো. শফিকের দুটি ট্রলার রয়েছে।

সাবরাং ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, বুধবার দুপুরে সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণে ১০–১৫ কিলোমিটার দূরে বঙ্গোপসাগর থেকে ট্রলারগুলো ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। এরপর তাঁদের খোঁজখবর পাওয়া যায়নি।

শাহপরীর দ্বীপ দক্ষিণপাড়ার ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি বশির আহমেদ বলেন, ‘সাগর থেকে ফিরে আসা জেলেদের মাধ্যমে ওই ঘটনা জানতে পেরেছি। এরপর বিজিবি ও কোস্টগার্ডকে জানানো হয়েছে। আরাকান আর্মি, নাকি নৌবাহিনী জেলেদের ধরে নিয়ে গেছে, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ট্রলারে থাকা মাছ, জাল, তেল  ও খাদ্যদ্রব্য কেড়ে নেওয়া হয়েছে। ছয়টি ট্রলার বর্তমানে নৌবাহিনীর হেফাজতে রয়েছে।’

টেকনাফের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন জানান, ৬টি ট্রলারসহ ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি তিনি কোস্টগার্ডের কাছে শুনেছেন। কোস্টগার্ড ও বিজিবির সঙ্গে এ বিষয়ে তিনি কথা বলেছেন। তাঁরা জেলেদের ফেরত আনার জন্য কাজ করছেন।

এ বিষয়ে জানতে কোস্টগাড টেকনাফ স্টেশন কমান্ডারের দাপ্তরিক মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট  কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, ‘ঘটনাটি শুনেছি। মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছে বিজিবি।’

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা

চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে চলায় জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা দেখা দিয়েছে। আজ বুধবার বেলা তিনটায় পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আর্দ্রতা ২৮ শতাংশ।

এর আগে গতকাল মঙ্গলবার জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস আর বাতাসের আর্দ্রতা ছিল ৬১ শতাংশ। অর্থাৎ এক দিনের ব্যবধানে তাপমাত্রা বেড়েছে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বাতাসের আর্দ্রতা কমেছে ৩৩ শতাংশ।

চুয়াডাঙ্গার প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জামিনুর রহমান জানান, চলতি মৌসুমে এটি জেলায় দ্বিতীয় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এর আগে ২৮ মার্চ জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যদিও ওই দিন দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল যশোরে ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তিনি বলেন, কাল বৃহস্পতিবার ও পরশু শুক্রবার তাপমাত্রা আরও বাড়বে। এরপর দুই দিন স্থিতিশীল থাকার পর ২৭ এপ্রিল থেকে তাপমাত্রা কমার সম্ভাবনা আছে।

আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে ১৪ মার্চ জেলায় তাপপ্রবাহ শুরু হয়। ওই দিন বেলা তিনটায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এরপর পর্যায়ক্রমে ১৬ মার্চ ৩৬ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৭ মার্চ ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৮ মার্চ ৩৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ২৯ মার্চ ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩০ মার্চ ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৩ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৫ এপ্রিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, ৬ এপ্রিল ৩৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস, গতকাল ২২ এপ্রিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং আজ ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হলো।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাব অনুযায়ী, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াসকে মাঝারি তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সেই হিসেবে গত ১৪ মার্চ থেকে আজ পর্যন্ত অন্তত ১১ দিন জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে গেছে। যার মধ্যে আট দিন মৃদু ও বাকি তিন দিন মাঝারি তাপপ্রবাহ বয়ে চলেছে।

এদিকে জেলার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে চলায় জনজীবনে হাঁসফাঁস অবস্থা দেখা দিয়েছে। মানুষের বাইরে চলাচল সীমিত হয়েছে। জরুরি প্রয়োজন ছাড়া কেউ তেমন বাইরে বের হচ্ছেন না। শহরে মানুষের আনাগোনাও কমে গেছে। ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে এর প্রভাব পড়েছে। খায়রুল ইসলাম নামের একজন কাপড় বিক্রেতা বলেন, ‘দিনির বেলা গিরামের খদ্দের বেশি আসে। তাপ বাইড়ে যাওয়ায় খদ্দের বাজারে আসা কুমে গিয়েচে। বেচাকিনা না থাকায় শুয়েবসে কাটাতি হচ্চে।’

এদিকে তাপপ্রবাহের মধ্যেই মেঘের ঘনঘটা কৃষকদের ভাবিয়ে তুলেছে। ঝড়বৃষ্টির আগেই ভুট্টা ও বোরো ধান ঘরে তোলার মৌসুমে কৃষিশ্রমিকের সংকট দেখা দিয়েছে। সুযোগ বুঝে শ্রমিকেরা অন্যান্য সময়ের তুলনায় দ্বিগুণ মজুরি দাবি করছেন।

দুপুরে সদর উপজেলার বোয়ালমারী মাঠে কথা হয় কৃষক আবুল কাশেমের সঙ্গে। কচুখেতে সেচ দিচ্ছিলেন তিনি। রোদ থেকে রক্ষা পেতে শ্যালো মেশিনের পাশে মোটা চটের ছাউনি দিয়েছেন। জমিতে সেচনালা তদারকির মাঝে মাঝে ছাউনির নিচে এসে বসছেন এবং শ্যালো মেশিন থেকে চোখেমুখে পানি ছিটাচ্ছেন। কচুর পাশাপাশি ভুট্টা ও ঢ্যাঁড়স আবাদ করেছেন এই কৃষক।

আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রোইদ আর গরমে টিকা যাচ্চে না। মন বলচে না মাঠে আসি। বাড়ি বইস থাকারও উপায় নেই। জনের দাম (শ্রমিকের মজুরি) অ্যাকন ৭০০ থেকে ৮০০ ট্যাকা। আগে যেকেনে ছিল ৪০০ ট্যাকা। একই সুমাইতি ধান কাটা, ভুট্টা তুলা, পাট নিড়ানি, কচু নিড়ানির কারণে বেশি ট্যাকা দিয়েই জোন পাওয়া যাচ্চে না। তাই নিজিই জমিতি আসিচি।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • স্মৃতি ও শ্রদ্ধার অনন্য আয়োজন
  • ছাত্র আন্দোলন: হত্যাচেষ্টা মামলায় কুষ্টিয়া পৌরসভার সার্ভেয়ার গ্রেপ্তার
  • পারভেজ হত্যার প্রধান আসামি মেহেরাজ পাঁচ দিনের রিমান্ডে
  • ‘কারাগার’ নির্মাতা শাওকীর সিরিজে শাশ্বত ও চঞ্চল 
  • প্রত্যাবর্তনে প্রমাণের চ্যালেঞ্জ বিজয়ের
  • রাশিয়ায় রাষ্ট্রদূত রাখার সুযোগ পাচ্ছে তালেবান
  • জুমে ভুয়া সাক্ষাৎকারের ফাঁদ
  • রূপগঞ্জে প্রবাসী রায়হান হত্যা মামলার পলাতক ৩ আসামি গ্রেপ্তার
  • পারভেজ হত্যা মামলার আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার
  • চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রা রেকর্ড, গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা