গাজা উপত্যকায় আটক মার্কিন জিম্মিদের মুক্তি এবং যুদ্ধের অবসানের জন্য একটি বৃহত্তর চুক্তির লক্ষ্যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করেছে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের জিম্মি বিষয়ক দূত অ্যাডাম বোহেলার সাম্প্রতিক সময়ে কাতারের রাজধানী দোহায় হামাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করছেন। বুধবার (৫ মার্চ) দুটি সূত্রের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম এক্সিওস।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, হামাসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের এ আলোচনা ‘অভূতপূর্ব’ ঘটনা। কারণ দেশটি এর আগে কখনো সশস্ত্র এ গোষ্ঠীর সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসেনি। ১৯৯৭ সালে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী দলটিকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর তালিকায়’ রেখেছে মার্কিন সরকার।

আরো পড়ুন:

ভারতীয় পণ্যেও শুল্ক আরোপের ঘোষণা ট্রাম্পের

যুক্তরাষ্ট্র যেকোনো উপায়ে গ্রিনল্যান্ড ‘দখল’ করবে: ট্রাম্প

প্রতিবেদন বলছে, মার্কিন প্রশাসন যে হামাসের সঙ্গে আলোচনার পথে হাঁটতে পারে এমনটা ইসরায়েলকে জানানো হয়েছিল। কিন্তু দুপক্ষে আলোচনা হয়ে গেছে, সেটি অন্য একটি চ্যানেলের মাধ্যমে ইসরায়েল জেনেছে।

এই আলোচনার লক্ষ্য হলো হামাসের কাছে বন্দি থাকা মার্কিন জিম্মিকে মুক্ত করা। এছাড়া সঙ্গে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতি নিয়েও আলোচনা হচ্ছে বলেও জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এক্সিওস। যেটির লক্ষ্য হলো সব জিম্মিকে মুক্ত করা এবং গাজায় যুদ্ধ বন্ধ করা। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একটি সূত্র এক্সিউসকে জানিয়েছে, আলোচনা চললেও হামাস ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কোনো ধরনের চুক্তি এখনো হয়নি।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকোফের মঙ্গলবার কাতারে যাওয়ার কথা ছিল। সেখানে দেশটির প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠক হতো। কিন্তু ইসরায়েলের সঙ্গে হামাসের যুদ্ধবিরতির আলোচনায় কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তিনি তার সফরটি বাতিল করেছেন।

এক্সিওস জানিয়েছে, গাজা ইস্যুতে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। কারণ ট্রাম্প বারবার হুমকি দিয়ে আসছেন যে, হামাসের জন্য ‘নরকের দরজা খুলে’ দেবেন এবং গাজা দখল করবেন। এছাড়া ইসরায়েলকে না জানিয়ে হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা ট্রাম্প প্রশাসনের আরেকটি ভিন্ন পদক্ষেপ, যা পূর্ববর্তী মার্কিন প্রশাসনগুলোতে কখনো ঘটেনি। 

হামাসের কাছে এখনো ৫৯ জিম্মি রয়েছে। যার মধ্যে ৩৫ জনই মারা গেছে বলে ধারণা দখলদার ইসরাইলের। এই ৫৯ জিম্মির মধ্যে একমাত্র মার্কিন জীবিত জিম্মি হলেন ২১ বছর বয়সী ইডান-আলেক্সান্ডার। তাকে মুক্ত করতেই মূলত আলোচনা চালাচ্ছে মার্কিন প্রশাসন। সঙ্গে যুদ্ধ বন্ধ করারও চেষ্টা চলছে।

এদিকে গত শনিবার হামাস ও ইসরাইলের যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপের ৪২ দিনের মেয়াদ শেষ হয়ে যায়। যদিও দখলদার ইসরাইল গাজায় এখনো হামলা চালানো শুরু করেনি। তবে ওইদিন থেকেই উপত্যকাটিতে সব ধরনের খাদ্য পণ্য প্রবেশ বন্ধ করে দিয়েছে তারা।

হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট বুধবার বিকেলে নিশ্চিত করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র হামাসের সঙ্গে সরাসরি আলোচনা করছে। তিনি আরো বলেছেন, বিষয়টি ইসরায়েলকে আগেই জানানো হয়েছিল। 

হোয়াইট হাউজের বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, ট্রাম্প বিশ্বাস করেন এটি মার্কিন জনগণের জন্য সঠিক পদক্ষেপ। কারণ আমেরিকানদের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল

এছাড়াও পড়ুন:

কামরাঙ্গীরচরে চা দোকানিকে মারধরের পর হাতবোমার বিস্ফোরণ, পরে গণপিটুনিতে দুজন নিহত

রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে গণপিটুনিতে মো. মাসুদ (২৯) ও নাদিম (৩৫) নামের দুই যুবক নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সোহাগ (৩০) নামের একজন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচরের সিলেটিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানিয়েছে, গণপিটুনির শিকার ৩ ব্যক্তিসহ ৯–১০ জন কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে সিলেটি বাজার এলাকার চা দোকানদার নূর মোহাম্মদকে চাঁদাবাজির মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছিলেন। এতে রাজি না হলে তাঁরা নূর মোহাম্মদকে কুপিয়ে জখম করেন। নূর মোহাম্মদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে আসেন। এ সময় ঘটনাস্থলে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মোটরসাইকেলে করে হামলাকারীরা পালানোর চেষ্টা করেন। পাঁচ–ছয়জন পালিয়ে যেতে পারলেও তিনজনকে কয়েক হাজার মানুষ ঘিরে ফেলে পিটুনি দেন।

পুলিশের লালবাগ অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গণপিটুনিতে মাসুদ ঘটনাস্থলে মারা যান। থানা–পুলিশ, সেনাবাহিনী, র‌্যাব সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে নাদিম ও সোহাগকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাদিমের মৃত্যু হয়। সোহাগ গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ