দক্ষিণী সিনেমায় সর্বোচ্চ পারিশ্রমিক পাওয়া ৭ নায়িকা
Published: 6th, March 2025 GMT
সময়ের সঙ্গে ভারতের দক্ষিণী সিনেমার দর্শকপ্রিয়তার গ্রাফ ঊর্ধ্বগামী হচ্ছে। মজার ব্যাপার হলো, হিন্দি সিনেমার দর্শকরাও ক্রমান্বয়ে দক্ষিণের দিকেই ঝুঁকছেন। স্বাভাবিক কারণে দক্ষিণী সিনেমার অভিনয়শিল্পীদের পারিশ্রমিকও বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধু তারকা অভিনেতা নন, তারকা অভিনেত্রীরাও পারিশ্রমিক বাড়িয়েছেন। গত বছর বেশ কজন তারকা অভিনেত্রীকে পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করতে দেখা গেছে। চলতি বছরে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া সাত নায়িকাকে নিয়ে এই প্রতিবেদন।
সাই পল্লবী
সাধারণত রোমান্টিক-ড্রামা ঘরানার সিনেমায় বেশি দেখা যায় সাই পল্লবীকে। ভার্সেটাইল অভিনয়শিল্পী হিসেবেও দারুণ খ্যাতি কুড়িয়েছেন। সাই পল্লবী বেছে বেছে কাজ করে থাকেন। ২০১৮ সালে তার অভিনীত ৪টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছিল। কিন্তু তারপর আর এমনটা দেখা যায়নি। বলা যায়, বছরে তার অভিনীত একটি সিনেমা মুক্তি পায়। তার অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘থান্ডেল’। এ সিনেমার জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন সাই পল্লবী। তার পরবর্তী সিনেমা ‘রামায়ণ’। নীতেশ তিওয়ারি পরিচালিত এ সিনেমার জন্য ১৮-২০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন সাই পল্লবী। এ হিসাব অনুযায়ী, দক্ষিণী সিনেমার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া অভিনেত্রী এখন সাই পল্লবী।
রাশমিকা মান্দানা
ভারতের প্রাক্তন ‘জাতীয় ক্রাশ’ রাশমিকা মান্দানা। টানা বক্স অফিসে ঝড় তোলা সিনেমা উপহার দিয়েছে চলেছেন। ‘অ্যানিমেল’, ‘পুষ্পা টু’ সিনেমার পর তার অভিনীত ‘ছাবা’ সিনেমা বক্স অফিসে ঝড় তুলেছে। ‘পুষ্পা টু’ সিনেমার জন্য ১০ কোটি রুপি এবং ‘ছাবা’ সিনেমায় অভিনয় করে ৪ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন এই অভিনেত্রী। তার পরবর্তী সিনেমা ‘সিকান্দার’। সালমান খানের সঙ্গে জুটি বেঁধে পর্দায় হাজির হবেন তিনি। সর্বশেষ এ সিনেমার জন্য ১৩ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন রাশমিকা।
তৃষা কৃষ্ণান
দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তৃষা কৃষ্ণান। ৪১ বছরের এই অভিনেত্রী ক্যারিয়ারে অনেক দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন। এখনো দাপটের সঙ্গে কাজ করছেন। প্রতি সিনেমার জন্য ১০-১২ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন। চলতি বছরে সাতটি সিনেমার কাজ হাতে নিয়েছেন। এর মধ্যে বেশ কটির কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সর্বশেষ ‘বিশ্বম্ভর’ সিনেমার জন্য ১২ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন তৃষা।
নয়নতারা
দক্ষিণী সিনেমার ‘লেডি সুপাস্টার’ নয়নতারা। কয়েক বছর আগেও দক্ষিণী সিনেমার সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া নায়িকাদের তালিকায় শীর্ষে ছিলেন তিনি। তবে বিয়ে-সন্তান নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ায় কাজ কমিয়ে দেন। তবে ফের অভিনয়ে সক্রিয় হয়েছেন। ২০২৩ সালে ‘জওয়ান’ সিনেমার মাধ্যমে বলিউডে তার অভিষেক ঘটে। সিনেমাটির জন্য ১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নেন। নয়নতারার বিয়ের ডকুমেন্টারি ওটিটি প্ল্যাটফর্ম নেটফ্লিক্সে ২৫ কোটি রুপিতে বিক্রি করেছেন।
সামান্থা রুথ প্রভু
ভারতের দক্ষিণী সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী সামান্থা রুথ প্রভু। অভিনয় ও শরীরি সৌন্দর্যে মুগ্ধ করেছেন তিনি। দক্ষিণ ভারতের সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক নেওয়া অভিনেত্রীদের তালিকায় এক সময় দ্বিতীয় অবস্থানে ছিলেন তেলেগু সিনেমার এই অভিনেত্রী। তবে বিবাহবিচ্ছেদ-শারীরিক অসুস্থতা পিছিয়ে দেয় তাকে। সাধারণত, প্রতিটি সিনেমার জন্য ৩-৮ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়ে থাকেন সামান্থা। তবে ‘সিটাডেল: হানি বানি’-এর জন্য ১০ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
আনুশকা শেঠি
অভিনেত্রী আনুশকা শেঠি তামিল-তেলেগু ভাষার অনেক সিনেমায় অভিনয় করেছেন। বিশেষ করে ‘বাহুবলি’ সিনেমায় অভিনয় করে বিশেষ খ্যাতি কুড়ান এই অভিনেত্রী। দুঃখজনক ব্যাপার হলো, ‘বাহুবলি’ সিনেমার পর আর কোনো ধামাকা উপহার দিতে পারেননি আনুশকা। ‘বাহুবলি টু’ সিনেমার জন্য ৬ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। গত কয়েক বছরে তাকে চলচ্চিত্রে পাওয়া যায়নি বললেই চলে। চলতি বছরে কয়েকটি সিনেমার কাজ হাতে নিয়েছেন। তবে তার পরবর্তী সিনেমা ‘কানতারা’-এর জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
তামান্না ভাটিয়া
দুই দশকের অভিনয় ক্যারিয়ারে অসংখ্য দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়েছেন তামান্না ভাটিয়া। তবে ‘বাহুবলি’ সিনেমা ফ্র্যাঞ্চাইজিতে অভিনয় করে বিশেষভাবে নজর কাড়েন এই অভিনেত্রী। ‘বাহুবলি টু’ সিনেমার জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। তার পরবর্তী সিনেমা ‘ওডেলা টু’। এ সিনেমার জন্য ৫ কোটি রুপি পারিশ্রমিক নিয়েছেন এই অভিনেত্রী।
তথ্যসূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া, সিয়াসাত ডটকম
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এ স ন ম র জন য র জন য ৫ ক ট ত র পরবর ত র জন য ১০ উপহ র দ ব হ বল সবচ য়
এছাড়াও পড়ুন:
শিক্ষক রায়হান অভিযুক্ত হলেও নাম নেই অস্ত্র ব্যবসায়ীর
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে গত বছরের ৪ মার্চ শিক্ষার্থীকে গুলির একটি মামলায় গত ৩১ জানুয়ারি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে ডিবি। এতে শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীকে গুলি করা কলেজের কমিউনিটি মেডিসিনের প্রাক্তন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তবে অভিযোগপত্রে নাম নেই যার কাছ থেকে ডা. রায়হান অস্ত্র সংগ্রহ করেছিলেন সেই এস এস আল হোসাইন ওরফে সোহাগের। কুষ্টিয়ার ভেড়ামারার নওদাপাড়ার সোহাগের বিরুদ্ধে হত্যা, অস্ত্র-বিস্ফোরক ও নাশকতার একাধিক মামলা আছে।
গত বছরের ৪ মার্চ ব্যাগভর্তি অস্ত্র-গুলি নিয়ে ক্লাসে শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান শিক্ষক রায়হান। তার দুর্ব্যবহারের প্রতিবাদ করায় তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে লক্ষ্য করে শিক্ষক রায়হান গুলি করেন। শিক্ষার্থী তমাল বাম উরুতে গুলিবিদ্ধ হলেও বর্তমানে সুস্থ। ওই ঘটনায় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ব্যাগভর্তি অবৈধ অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার হন শিক্ষক রায়হান। তাঁর ব্যাগে লাইসেন্সবিহীন দুটি বিদেশি পিস্তল, দুটি জাপানি সামুরাই, ১০টি বার্মিজ ছুরি ও ৭৮ রাউন্ড তাজা গুলি পাওয়া যায়। ডা. রায়হানের বিরুদ্ধে সে সময় আহত শিক্ষার্থী তমালের বাবা বগুড়ার আবদুল্লাহ আল আমিন হত্যাচেষ্টা ও ডিবি পুলিশ বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন রায়হান। যদিও পরবর্তী সময়ে জামিন নিয়ে রায়হান এখন পলাতক। ঘটনার পর থেকে উধাও অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগও।
পুলিশ সূত্র জানায়, ডা. রায়হান সিরাজগঞ্জ আদালতে স্বীকারোক্তি ও জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, সোহাগের কাছ থেকেই সব অস্ত্র কিনেছেন। এরপর অস্ত্র ও বিস্ফোরক আইনে সোহাগ ও রায়হানের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিরাজগঞ্জ ডিবি পুলিশের সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী। অভিযোগ উঠেছে, অভিযোগপত্র থেকে সোহাগের নাম বাদ দিয়েছেন ডিবির বর্তমান তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নাজমুল ইসলাম ও ইউনিট ওসি ইকরামুল হোসাইন। ডিবির তদন্ত ও দাখিলকৃত অভিযোগপত্র নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী ও তাঁর বাবা।
সিরাজগঞ্জ ডিবির এসআই নাজমুল হক নতুন তদন্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করলেও তিনি এ বিষয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তাঁর ইউনিটপ্রধান বর্তমান ওসি ইকরামুল হোসাইন আজ ২৯ এপ্রিল প্রধান উপদেষ্টার কাছে থেকে পুলিশ পদক নিতে ঢাকায় রয়েছেন। তিনি ফোনে দাবি করেন, ডা. রায়হান আদালতে ১৬৪ ধারায় বিচারকের সামনে সোহাগের নাম বললেও তাঁর বাবা বা গ্রামের নাম জানাতে পারেননি। মামলার বাদী এজাহারে যে সোহাগের নাম-ঠিকানা উল্লেখ করেন, তিনি এতে জড়িত নন। বিএনপি করার কারণে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে হয়রানি করতেই আগের সরকারের সময় সাবেক এসপি ও ওসি সোহাগকে জড়িয়েছেন। শিক্ষক রায়হান যে সময় অস্ত্রগুলো কিনেছিলেন, তার আগে থেকেই সোহাগ ঢাকা ও ভারতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। পরবর্তী সময়ে ইমিগ্রেশন ও হাসপাতাল সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।
এ বিষয়ে সাবেক এসপি আরিফুল ইসলামের বক্তব্য পাওয়া না গেলেও মামলার বাদী ডিবির সাবেক এসআই ওয়াদুত আলী বলেন, শিক্ষক রায়হানের সঙ্গে মোবাইল ফোনে সোহাগের কথোপকথন ও লেনদেনের বিষয় নিশ্চিত হওয়া যায়। তাই এজাহারে সোহাগের নাম ও মোবাইল নম্বর উল্লেখ করা হয়।
সমকালের অনুসন্ধানেও সাবেক এসআই ওয়াদুত আলীর এজাহার অনুযায়ী সোহাগের ফোন নম্বরের কল ডিটেইল এবং এনআইডি নম্বর সংগ্রহ করা হয়। সেখানে স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা সোহাগেরই তথ্য ও ছবি পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে অজ্ঞাত স্থান থেকে শিক্ষক রায়হান শরীফ গতকাল ফোনে বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিধ্বস্ত। ডিবির চার্জশিটের বিষয়টি জানি না।’
মামলার সাবেক তদন্ত কর্মকর্তা এসআই ইব্রাহিম হোসেন বলেন, চার্জশিট থেকে সোহাগকে বাদ দেওয়ার বিষয়টি আত্মঘাতী ও তদন্তের নীতিমালার বাইরে।
জানা গেছে, ভেড়ামারার স্বেচ্ছসেবক দলের সদস্য সচিব কথিত অস্ত্র ব্যবসায়ী সোহাগ। গতকাল তিনি ফোনে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে অস্ত্র, খুন ও নাশকতা মামলাগুলো রাজনৈতিক। আমি অস্ত্র ব্যবসায়ী নই। রাজনৈতিক এক নেতার বিরুদ্ধে মামলা করায় আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।
রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি মোহাম্মদ শাহজাহান বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা স্বাধীন হলেও পুলিশ সুপার, সার্কেল অফিসার ও সংশ্লিষ্ট ইউনিটের ওসি সুপারভাইজরি অথারিটি। বিষয়টি খতিয়ে দেখব।