বন্ধুর ব্যবহৃত বাইসাইকেল ও মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে খুন করে রাস্তার পাশে ফেলে রাখে লাশ। জুয়ার টাকার জন্য দুই বন্ধু মিলে এই হত্যাকাণ্ড ঘটায় বলে জানিয়েছে নরসিংদীর পিবিআই।

গতকাল বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে এসব জানিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। এ সময় পিবিআই নরসিংদীর পুলিশ সুপার এনায়েত হোসেন মান্নান জানান, ঘটনার দুই মাস আগে চাকরি হারায় হত্যাকাণ্ডের মাস্টারমাইন্ড বিল্লাল মিয়া রনি। দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে জুয়া খেলার ছলে ঋণগ্রস্ত হওয়ায় তার বন্ধু ফরহাদকে নিয়ে পরিকল্পনা করে টাকা সংগ্রহের। পরিকল্পনা অনুযায়ী তাদেরই সহকর্মী এরশাদকে টার্গেট করে। জুয়ার টাকা সংগ্রহ করতে পরিকল্পিতভাবে দুই বন্ধু মিলে গত ১১ ফেব্রুয়ারি এরশাদকে হত্যা করে। সন্ধ্যায় ভুক্তভোগী এরশাদ মিয়া নিজ বাড়ি শান্তিরভাওলা থেকে শহরের কর্মস্থল সাইজিং মিলে যাওয়ার পথে নাগরিয়াকান্দি এলাকায় পৌঁছালে পূর্ব থেকে ওতপেতে থাকা রনি ও ফরহাদ তাকে পাশের বালুর মাঠে নিয়ে সাইকেল ও মোবাইল ছিনিয়ে নিয়ে ছুরিকাঘাত ও শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরদিন ১২ ফেব্রুয়ারি সকালে পৌর শহরের নাগরিয়াকান্দি এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় সাইজিং মিল শ্রমিক এরশাদের লাশ।

এ ঘটনায় সদর থানায় ভুক্তভোগীর বড় ভাই মামলা করলে কাজ শুরু করে পিবিআই। পরদিনই ফরহাদকে গ্রেপ্তার করতে পারলেও ধরাছোঁয়ার বাইরে থাকে বিল্লাল মিয়া ওরফে রনি। দীর্ঘদিন তৎপরতা চালিয়ে কিশোরগঞ্জের ভৈরব থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ভুক্তভোগীর বাইসাইকেল মাত্র ৯০০ এবং মোবাইল ফোন ১ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি করে অভিযুক্তরা। তাছাড়া আগে থেকেই ভুক্তভোগী এরশাদের বিকাশের পাসওয়ার্ড জানতে পারায় তার বিকাশে থাকা ছয় হাজার ৫০০ টাকা উত্তোলন করে নেয়। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার দু’জনই অপরাধ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: নরস দ এরশ দ

এছাড়াও পড়ুন:

জীবন ফিরে পাওয়া ইগলের বাচ্চারা

এ বছরের ১ ফেব্রুয়ারি। খুব ভোরে শামীমের ফোন পেয়ে জেগে উঠলাম। খবর পেলাম টাঙ্গুয়ার হাওরের কালামপুর থেকে কুড়া ইগলের দুটি বাচ্চা চুরি হয়ে গেছে। চোরেরা বাচ্চাগুলো নিয়ে অটোরিকশায় করে সুনামগঞ্জের দিকে রওনা হয়েছে। এখনই যদি পুলিশ দিয়ে রাস্তায় পাহারা বসানো যায়, তাহলে বাচ্চাগুলো উদ্ধার করা সম্ভব। তখন আমি সুন্দরবনের একটি নৌকায়। এত সকালে কী করব, কিছুই মাথায় আসছিল না। প্রথমেই ফোন করলাম বন অধিদপ্তরের ক্রাইম কন্ট্রোল ইউনিটের সহকর্মী অসীম মল্লিককে। তিনি ব্যবস্থা নেবেন বলে আশ্বস্ত করলেন। একটু পরে অসীম জানালেন, তিনি সুনামগঞ্জের ওসিকে বলেছেন। তাঁর কথায় স্বস্তি পেলাম।

শামীম আমার দীর্ঘদিনের সহকর্মী। প্রায় দুই যুগ ধরে হাওরে আমার নৌকাচালক। এখন পাখি বিষয়ে খুব আগ্রহ নিয়ে কাজ করেন। শামীম একজন চোরের ফোন নম্বর সংগ্রহ করলেন। বুদ্ধি করে গিয়েছিলেন তাহেরপুরের একটি হোটেলে। সেই হোটেলটিতে আগের রাতে চোরের দল ছিল। একজনের ফোন নম্বর পাওয়া গেল হোটেল থেকে। তারপর আমি কল দিলাম তাকে। ফোনের অপর প্রান্তে একটি অচেনা কণ্ঠ আর অটোরিকশার শব্দ। লোকটিকে বললাম পাখিটিকে ফেরত দিতে। না হলে পুলিশের ভয় দেখালাম। কিছুক্ষণের মধ্যেই তার ফোন বন্ধ পাওয়া গেল।

কুড়া ইগলের বাচ্চা চুরির ঘটনা এটিই আমার কাছে প্রথম। এ রকম ঘটনা আগে ঘটেছে কি না, জানি না। পৃথিবীব্যাপী বিপন্ন একটি ইগলের বাচ্চা চুরি হয়ে যাচ্ছে শুনে মনটা খারাপ। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ইগলের বাচ্চা চোরকে আবার পাওয়া গেল। এবার তাকে অনেকক্ষণ বোঝালাম। পাখির বাচ্চাগুলোকে ফেরত দিতে বললাম। না হলে বাচ্চাগুলোর মারা যাওয়ার শঙ্কা আছে।

পাখির বাচ্চাগুলো অটোরিকশায় রেখে চোরের দল পালিয়েছে। শামীম অটোওয়ালার সন্ধান পেল। তাঁকে বুঝিয়ে ফেরত নেওয়া হলো তাহেরপুরে। দ্রুত নৌকা প্রস্তুত করা হলো কামালপুরে যাওয়ার জন্য। একজন পরিচিত গেছোকে নিয়ে শামীম গেলেন কামালপুরে।

কালামপুরের পরিস্থিতি আরও খারাপ। বাচ্চা পাখির মা-বাবা পুরো গ্রাম অস্থির করে ফেলেছে। যাকে পাচ্ছে তাকেই ছোঁ মারার চেষ্টা করছে। বাচ্চাগুলো ফিরে পেয়ে মা-বাবা বুকে জড়িয়ে ধরল। তাদের বাসায় দেওয়া হলো শোল মাছ। পাখিগুলোর হাহাকার কমল।

চুরি যাওয়া বাচ্চা ১ ফেব্রুয়ারি উদ্ধার করে পাখিটির বাসায় ফিরিয়ে দেওয়া হয়। বাচ্চাগুলো এখন উড়তে শিখেছে। গত ১৪ ফেব্রুয়ারি টাঙ্গুয়ার হাওরের কামালপুরে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জীবন ফিরে পাওয়া ইগলের বাচ্চারা