পাঁচ বছরে ২৫ বার সভা নিরসন হয়নি যানজটের
Published: 6th, March 2025 GMT
‘যানজটের ভোগান্তি কমাতে আলোচনা হয়। তবুও দুর্ভোগ কমে না। গত পাঁচ বছরে প্রশাসনের উদ্যোগে অত্যন্ত ২৫ বার আলোচনায় বসা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, চেয়ারম্যান, এসিল্যান্ড এবং ওসি সাহেবের কার্যালয়ে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি। উদ্যোগ সীমাবদ্ধ থেকেছে আলোচনাতেই।’
বাজার মোড়ে অসহনীয় যানজট নিয়ে আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন সাদুল্লাপুর উপজেলার স্থানীয় বণিক সমিতির সভাপতি শফিউল ইসলাম স্বপন। একই কথা বলেন, আইনশৃঙ্খলা কমিটির সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুর রশিদ আজমী।
ভাতগ্রাম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাহফুজার রহমান বলেন, প্রতিদিন দুই থেকে তিনজন গ্রাম পুলিশ যানজট নিরসনে কাজ করবেন– এমন সিদ্ধান্ত হয়েছিল। দেশে পরিবর্তিত পরিস্থিতির কারণে সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি। এ অবস্থায় রমজানে দুর্ভোগ আরও বাড়বে।
সাদুল্লাপুর বাজার মোড়টি পাঁচ রাস্তার সংযোগস্থল। এখান থেকে ইদ্রাকপুর, তুলসীঘাট, ভাতগ্রাম, বকসিগঞ্জ, ধাপেরহাট, বড় জামালপুর, মিরপুর বাজার, কান্তনগর, মহিষবান্দি, ছান্দিয়াপুর, রসুলপুর, নিয়ামতনগর, নলডাঙ্গা, কামারপাড়াসহ কয়েকটি স্থানে আসা-যাওয়া হয়। শহরের দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছয়টি কেজি স্কুল, দুটি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, তিনটি কলেজ ও চারটি মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা এ পথ দিয়ে চলাচল করেন। এ মোড়ের পশ্চিম দিকে রাস্তার দু’ধার দখলে নিয়েছেন কাঁচা তরকারি বিক্রেতারা। চারপাশজুড়ে ফলের দোকান। যত্রতত্র দাঁড়ানো ইজিবাইক। যানজট নিরসনে এ মোড়ে একসময় ট্রাফিক পুলিশ কাজ করত। দেড় বছর আগে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। কী কারণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে, কেউ বলতে পারে না! বর্তমানে গাড়ি চলাচলে শৃঙ্খলা না থাকায় মোড়টিতে যানজট লেগেই থাকে।
ব্যবসায়ী এনায়েতুল মোস্তাফিজ রাসেল বলেন, শহরঘেঁষে নেই কোনো বাইপাস সড়ক। নেই গণপরিবহন চালকদের দায়িত্ববোধ। এসব নিয়ন্ত্রণে দেখা যায় না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
স্থানীয় গণপরিবহনের টিকিট কাউন্টারের মাস্টার আবদুর রাজ্জাক বলেন, যাত্রীবাহী কোচ, মালবাহী ট্রাক, কার এবং মাইক্রোবাসের সঙ্গে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে বাজার মোড় দিয়ে। সেই সঙ্গে প্রতিদিন পাঁচ শতাধিক ইজিবাইক চলে। এসব পরিবহনের জন্য শহরে নির্ধারিত ‘স্ট্যান্ড’ নেই। যত্রতত্র দাঁড় করিয়ে যাত্রী ও পণ্য ওঠানামা করায় যানজট লেগে যায় বলেন তিনি।
সাদুল্লাপুর ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের ইনচার্জ নারায়ণ চন্দ্র ভর্মা বলেন, যানজটের কারণে প্রায়ই আটকা পড়তে হয়। অনেক সময় ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির জন্যও রাস্তা ফাঁকা করা যায় না। এ কারণে দুর্যোগ মুহূর্তে ফায়ার কর্মীরা সময়মত গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না। তাতে ক্ষিপ্ত হয়ে অনেকে গালমন্দ করেন।
ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে সাদুল্লাপুর মোড়ে ট্রাফিক পুলিশ দেওয়া হয়েছিল বলে জানিয়েছেন বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান সাবু। এখন তা তুলে দেওয়া হয়েছে। তাই যানজটের বিশৃঙ্খলা লেগেই থাকে।
থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করে ট্রাফিক পুলিশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
সদ্য যোগদান করা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ অনিক ইসলাম বলেন, যানজট নিরসনে সব পক্ষকে নিয়ে ফের আলোচনা করা হবে। রমজানে যাতে সমস্যা না হয়, সেটি মাথায় রেখেই কাজ করা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: য নজট ন য নজট র ন রসন
এছাড়াও পড়ুন:
হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক কমানোর দাবি বারভিডার
কয়েক বছর ধরে বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় দেশে রিকন্ডিশন্ড যান আমদানি ও বিক্রি কমেছে। এ পরিস্থিতিতে জ্বালানি সাশ্রয়ী ও পরিবেশবান্ধব হাইব্রিড গাড়ির শুল্ক হার কমানোর দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ রিকন্ডিশন্ড ভেহিক্যালস ইম্পোর্টার্স অ্যান্ড ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বারভিডা)। এছাড়াও গণপরিবহন হিসেবে ব্যবহৃত মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহারেরও আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
শনিবার রাজধানীর বিজয়নগর ফার্স হোটেলে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বারভিডার সভাপতি আবদুল হক এ দাবি জানান। এ সময় সংগঠনের অন্য নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
লিখিত বক্তব্যে বারভিডার সভাপতি আবদুল হক মোটরযান আমদানির জন্য একটি দীর্ঘমেয়াদি কর কাঠামো এবং শুল্ক হার নির্ধারণের দাবি জানিয়েছেন। রিকন্ডিশন মোটরযান আমদানিতে ন্যূনতম ১২৯ শতাংশ ও সর্বোচ্চ ৮২৬ শতাংশ শুল্ক দিতে হচ্ছে। মাইক্রোবাসের সম্পূরক শুল্ক ও অ্যাম্বুলেন্স আমদানির শুল্ক সম্পূর্ণ প্রত্যাহার এবং পিক আপ বা ভ্যানের শুল্ক সর্বনিম্ন স্তরে নির্ধারণ করা উচিত। এছাড়াও ঢাকাসহ বড় শহরগুলোতে মানসম্পন্ন গণপরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ১৬ থেকে ৪০ আসনের বাস আমদানিতে শুল্ক কমাতে হবে। হাইব্রিড গাড়ির সিসি স্ল্যাব ও সম্পূরক শুল্ক হার পুনর্বিন্যাস করা হলে এসব গাড়ি আমদানি সহজ হবে এবং সরকারে রাজস্ব আয় বাড়বে বলে মনে করে বারভিডা।
আবদুল হক বলেন, করোনা মহামারির কারণে বারভিডার সদস্যদের ব্যবসা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর ডলার সংকট ও দাম বেড়ে যাওয়ার কারণে আমদানি করা গাড়ির দামও বেড়েছে। ফলে মধ্য ও নিম্ন মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতাদের সামর্থ্যের বাইরে চলে গেছে রিকন্ডিশন গাড়ি। এতে এসব গাড়ি আমদানি কমেছে।
বারভিডার সভাপতি বলেন, বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানিতে দেশে বেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে। মোটরযানে ২০৩০ সাল নাগাদ ফসিল ফুয়েলের ব্যবহার কমে আসার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে বৈদ্যুতিক গাড়ির ব্যবহার বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ইদানীং নিম্নমানের বৈদ্যুতিক গাড়ি আমদানি হচ্ছে। তাই দেশে বৈদ্যুতিক, হাইব্রিড, প্লাগ-ইন হাইব্রিড এবং হাইড্রোজেন গাড়ি আমদানি ও ব্যবহার বিষয়ে নীতিমালা প্রণয়ন করা দরকার।
রিকন্ডিশন্ড গাড়ি এবং দেশে আমদানি করা নতুন গাড়ির নিবন্ধন ফি’র মধ্যে অনেক বৈষম্য রয়েছে বলে দাবি করেন বারভিডা সভাপতি।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) নিবন্ধন খরচ নতুনের চেয়ে পুরোনো গাড়িতে অনেক বেশি। দেড় হাজার সিসি সক্ষমতার গাড়ি নিবন্ধন, মালিকানা বদল ও মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) মিলিয়ে নতুন গাড়িতে খরচ পড়ে ৮০ হাজার ৪০৮ টাকার বেশি। অন্যদিকে পুরোনো গাড়িতে এ খরচ হয় ১ লাখ ৭ হাজার টাকার বেশি। আর সাড়ে তিন হাজার সিসি সক্ষমতার নতুন গাড়িতে খরচ ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৮ টাকা। একই সক্ষমতার পুরোনো গাড়ির বেলায় তা ২ লাখ ১৩ হাজার ৭১৬ টাকা।
মডেল ভেদে পুরোনো গাড়ির নিবন্ধন খরচ নতুনের তুলনায় ২৭ হাজার থেকে ৫৪ হাজার টাকার মতো বেশি। এছাড়া আমদানি করা রিকন্ডিশন গাড়ি বিক্রির সময় ‘দ্বৈত নিবন্ধন’ করতে হয়। বৈষম্যমূলক এসব সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান তারা।
সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতের যেসব ঘটনা ঘটছে সেগুলোকে গণহত্যা আখ্যা দিয়ে আবদুল হক বলেন,
ব্যাটারিচালিত রিকশা পরিবেশের জন্য হুমকি ও দেশের জন্য ‘ক্যান্সারে’ পরিণত হয়েছে। গাড়ি এখন আর বিলাসিতা নয়। নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজন। গাড়ির ব্যবহার বাড়লে দুর্ঘটনার পরিমাণ কমে যাবে