‘সারাদিন ভ্যান চালিয়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা আয় হয়। চাল, ডাল, মাছ কিনতেই টাকা শেষ। স্ত্রী-সন্তানের জন্য ভালো খাবারের ব্যবস্থা করতে পারি না। বাজারের আগুনে পুড়ছি প্রতিদিন।’ আক্ষেপ করে কথাগুলো বলছিলেন পৌরসভার ভ্যানচালক স্বাধীন চন্দ্র বর্মণ। 

বেশ কিছুদিন ধরে সুন্দরগঞ্জের ভোগ্যপণ্যের বাজারে বেসামাল পরিস্থিতি বিরাজ করছে। কাঁচাবাজারে স্বস্তি দেখা দিলেও নিত্যপণ্যের দাম লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে। নিম্ন আয়ের মানুষের মধ্যে অস্বস্তি দেখা দিয়েছে। বাজার নজরদারির ঘাটতি এবং অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম ছয় মাসের ব্যবধানে ২০ ভাগ বেড়ে গেছে বলে দাবি সাধারণ ক্রেতাদের। অন্যদিকে খুচরা ব্যবসায়ীরা মনে করেন, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম; আমদানিনির্ভরতা, বাজার সিন্ডিকেট, মজুতদারির কারণে বেড়েই চলছে নিত্যপণ্যের দাম। 

উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইকারি বাজারের চেয়ে খুচরা বাজারে প্রতিটি পণ্যের দাম দুই থেকে পাঁচ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। প্রতি লিটার সয়াবিন তেল ১৮০ টাকা, সরিষার তেল ২১০, পাম অয়েল ১৫৫, সুপার তেল ১৬০, প্রতি কেজি চিনি ১২৪, ছোলাবুট ১০০, ছোলার ডাল ১২০ ও ডিম প্রতি হালি ৪২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মসলার দাম ৫০ ভাগ বেড়ে গেছে। প্রতি কেজি জিরা ৬৫০ টাকা, বড় এলাচ ২ হাজার ৯০০, সাদা এলাচ ৫০০, দারচিনি ৪৬০, গোলমরিচ ১ হাজার ২০০ ও লবঙ্গ ১ হাজার ৬০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। 

শান্তিরাম গ্রামের দিনমজুর হাফিজার রহমান বলেন, কাজকর্ম নেই বললেই চলে। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন কাজ করি। বাকি দিন বসে থাকতে হয়। প্রতিদিনের ৫০০ টাকা মজুরি দিয়ে চাল-ডাল কিনে পাঁচজনের সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে। রোজার মধ্যে ভালো-মন্দ খাবারের ব্যবস্থা করব, তার জো নেই। 

সুন্দরগঞ্জ বাজারের বিক্রেতা কেশব চন্দ্র মহাজন ও কোম্পানির কাছ থেকে পণ্য কেনেন। প্রতিদিনের বাজারদর ফোনে জানিয়ে দেন। মহাজন ও কোম্পানি দাম বাড়ালে তাদের করার কিছু নেই বলে জানান তিনি। 

কাঁচামাল দোকানি আসাদুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি পণ্যের দাম নাগালের মধ্যে রয়েছে। রসুন, আদা, পেয়াঁজ, আলু, বেগুনের দাম সামান্য বাড়ছে। প্রতিদিন সবজির দাম ওঠানামা করে।

ইএনও নাজির হোসেন বলেন, রমজান উপলক্ষে বাজার মনিটর করা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবস

এছাড়াও পড়ুন:

সম্পর্কের ৫০ বছর: বাংলাদেশে প্রথমবার চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী

বাংলাদেশ ও চীনের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে ঢাকায় প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনী।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) জাতীয় জাদুঘরের নলিনীকান্ত ভট্টাশালী এক্সিবিশন হলে আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয় এই প্রদর্শনীর।

‘দ্য ল্যানটিং লিগ্যাসি’ প্রতিপাদ্যে সাত দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী যৌথভাবে আয়োজন করেছে বাংলাদেশে চীনা দূতাবাস, বাংলাদেশ-চীন ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইনস্টিটিউট।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ছিলেন চীনা দূতাবাসের অ্যাটাশে সুন খ্যংনিং ও বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টারের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম জাহাঙ্গীর আলম রানা।

উদ্বোধনী বক্তৃতায় সুন খ্যংনিং বলেন, “আমরা এই বছর প্রথমবারের মতো চীনা ক্যালিগ্রাফি প্রদর্শনীর আয়োজন করেছি। তাড়াহুড়া করে এই আয়োজন করা হয়েছে, তাই সুন্দরভাবে আয়োজন করতে পারিনি। এর জন্য ক্ষমাপ্রার্থী; তবুও আশা করি, দর্শকরা চীনা ক্যালিগ্রাফির সৌন্দর্য উপভোগ করবেন।”

চীন-বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রতিষ্ঠার ৫০তম বার্ষিকীতে দুই দেশের সম্পর্ক আরো উচ্চ স্তরে পৌঁছাবে এবং গভীর হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

জাহাঙ্গীর আলম রানা বলেন, চীনা ক্যালিগ্রাফি তিন হাজার বছরের পুরোনো। তুলি, কালি, কলম ও কাগজ দিয়ে চীনা শিল্পীরা নান্দনিক ক্যালিগ্রাফি তৈরি করেন।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে চীনা ক্যালিগ্রাফিভক্ত লিউ চেন, কো তাহাই, হু সংসহ বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউটের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/হাসান/রাসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ