সাহ্রিতে যা খেলে সারা দিন কর্মক্ষম ও ভালো থাকতে পারবেন
Published: 6th, March 2025 GMT
পবিত্র রমজান মাসে সাহ্রি থেকে ইফতারের আগপর্যন্ত দীর্ঘ সময় রোজাদারদের না খেয়ে থাকতে হয়। তাই সাহ্রি হতে হবে পরিকল্পিত ও স্বাস্থ্যকর, যেন সারা দিন শরীরে শক্তি অটুট থাকে। অনেকেই আবার সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে বলে সাহ্রিতে যত বেশি সম্ভব খেয়ে নেন, যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বরং সাহ্রির খাবার এমন হওয়া দরকার, যেন তা সারা দিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে আবার শরীরও ঠিক থাকে। তাই জেনে রাখুন দৈনিক চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখে কীভাবে সাহ্রির খাবার বেছে নেবেন।
রমজান মাসে দিনভর যে শক্তি ও পুষ্টির চাহিদা থাকে, তা পূরণে সাহ্রিতে এমন খাবার খেতে হবে, যা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও মিনারেল–সমৃদ্ধ হয়।
কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবারসাহ্রির খাবারের তালিকায় জটিল শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট–সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি। এ ধরনের খাবার হজম হতে সময় লাগে এবং দীর্ঘক্ষণ কর্মশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবার ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ দেয়। ভাত, লাল আটার রুটি, আলু, চিড়া, ওটস, সিরিয়াল, বার্লি—এসব খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে। এ ছাড়া হজম হতে প্রায় ৮ ঘণ্টা লাগে বলে এসব খাবার খেলে দিনের বেলা কম ক্ষুধা লাগে। তাই এসব খাবার খেলে সারা দিন সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা যায়।
প্রোটিন–জাতীয় খাবারমাছ, মাংস, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, দুধজাত খাবার, ডিম, ডাল প্রভৃতি প্রোটিনের ভালো উৎস। সাহ্রিতে আমিষ বা প্রোটিন–জাতীয় খাবার থাকলে তা আপনার দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সারা দিন শক্তি জোগাবে। বিশেষভাবে—
সাহ্রিতে দুধ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এ ছাড়া দুধজাতীয় বিভিন্ন খাবার—দই, ছানা প্রভৃতি কিংবা কলা ও আমসহ দুধভাত রোজার সময়ে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। দইয়ের সঙ্গে চিড়া খাওয়া যেতে পারে।
মাছ বা মাংসের বদলে সাহ্রির খাবারে একটি ডিম থাকলেও তা আপনাকে প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদা পূরণ করতে পারে।
চর্বিযুক্ত মাংস পরিহার করা উচিত। মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুনরোজা রেখে পেট খারাপ হলে কী করবেন২৬ মার্চ ২০২৪শাকসবজিশাকসবজি দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস। তাই সাহ্রিতে প্রতিদিন সবজি খাওয়া উচিত। তবে রাতের খাবারে অতিরিক্ত আঁশযুক্ত শাকসবজি খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। বরং মাঝারি আঁশের সবজি, যেমন ঝিঙা, চিচিঙ্গা, লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, গাজর প্রভৃতি সবজি খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।
খেজুরসাহ্রিতে খেজুর খেলে দিনভর কর্মক্ষম থাকার শক্তি পাওয়া যায়। এ সময় অন্তত দুয়েকটি খেজুর খান। এতে পাবেন প্রাকৃতিক ফ্রুকটোজ ও প্রচুর ফাইবার বা আঁশ। এটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
পানিইফতার থেকে শুরু করে সাহ্রি পর্যন্ত দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি খাওয়া জরুরি। তবে অনেকে সাহ্রির শেষ সময় পর্যন্ত এক নাগাড়ে পানি খেতেই থাকেন, যা পরবর্তী সময়ে পেটে অস্বস্তির সৃষ্টি করে। এটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
আরও পড়ুনরোজা রেখেও কাদের ওজন কমে না৯ ঘণ্টা আগেসাহ্রিতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেনবেশি তৈলাক্ত, মসলাদার ও ঝাল খাবার খাওয়া উচিত নয়। সাহ্রির খাদ্যতালিকা থেকে বিরিয়ানি, পোলাও, তেহারি প্রভৃতি ভারী খাবার বাদ দিন। সাহ্রিতে এসব খাবার খেলে বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া এবং পেটফাঁপার মতো সমস্যা হতে পারে।
লবণযুক্ত খাবার পানির তৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয় এবং যেহেতু সারা দিন পানি খাওয়া যাবে না, তাই লবণযুক্ত খাবার পরিহার করাই উত্তম।
অনেকে সাহ্রিতে কোল্ড ড্রিঙ্কস বা কোমল পানীয় খেতে পছন্দ করেন। এসব পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে, যা প্রস্রাবে পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সাহ্রিতে ক্যাফেইন আছে, এমন পানীয়, যেমন চা, কফি ইত্যাদি পরিহার করাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ক্যাফেইন ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে।
আরও পড়ুনরোজায় ইফতারে কী কী খাবেন০১ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এসব খ ব র
এছাড়াও পড়ুন:
সাহ্রিতে যা খেলে সারা দিন কর্মক্ষম ও ভালো থাকতে পারবেন
পবিত্র রমজান মাসে সাহ্রি থেকে ইফতারের আগপর্যন্ত দীর্ঘ সময় রোজাদারদের না খেয়ে থাকতে হয়। তাই সাহ্রি হতে হবে পরিকল্পিত ও স্বাস্থ্যকর, যেন সারা দিন শরীরে শক্তি অটুট থাকে। অনেকেই আবার সারা দিন না খেয়ে থাকতে হবে বলে সাহ্রিতে যত বেশি সম্ভব খেয়ে নেন, যা মোটেও স্বাস্থ্যসম্মত নয়। বরং সাহ্রির খাবার এমন হওয়া দরকার, যেন তা সারা দিনের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করতে পারে আবার শরীরও ঠিক থাকে। তাই জেনে রাখুন দৈনিক চাহিদার প্রতি লক্ষ রেখে কীভাবে সাহ্রির খাবার বেছে নেবেন।
রমজান মাসে দিনভর যে শক্তি ও পুষ্টির চাহিদা থাকে, তা পূরণে সাহ্রিতে এমন খাবার খেতে হবে, যা প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন ও মিনারেল–সমৃদ্ধ হয়।
কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবারসাহ্রির খাবারের তালিকায় জটিল শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট–সমৃদ্ধ খাবার রাখা জরুরি। এ ধরনের খাবার হজম হতে সময় লাগে এবং দীর্ঘক্ষণ কর্মশক্তি ধরে রাখতে সাহায্য করে। কার্বোহাইড্রেট–জাতীয় খাবার ধীরে ধীরে রক্তে গ্লুকোজ দেয়। ভাত, লাল আটার রুটি, আলু, চিড়া, ওটস, সিরিয়াল, বার্লি—এসব খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট থাকে। এ ছাড়া হজম হতে প্রায় ৮ ঘণ্টা লাগে বলে এসব খাবার খেলে দিনের বেলা কম ক্ষুধা লাগে। তাই এসব খাবার খেলে সারা দিন সুস্থ ও কর্মক্ষম থাকা যায়।
প্রোটিন–জাতীয় খাবারমাছ, মাংস, তরল দুধ, গুঁড়া দুধ, দুধজাত খাবার, ডিম, ডাল প্রভৃতি প্রোটিনের ভালো উৎস। সাহ্রিতে আমিষ বা প্রোটিন–জাতীয় খাবার থাকলে তা আপনার দেহের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি সারা দিন শক্তি জোগাবে। বিশেষভাবে—
সাহ্রিতে দুধ একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার। এ ছাড়া দুধজাতীয় বিভিন্ন খাবার—দই, ছানা প্রভৃতি কিংবা কলা ও আমসহ দুধভাত রোজার সময়ে শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি জোগায়। দইয়ের সঙ্গে চিড়া খাওয়া যেতে পারে।
মাছ বা মাংসের বদলে সাহ্রির খাবারে একটি ডিম থাকলেও তা আপনাকে প্রয়োজনীয় শক্তির চাহিদা পূরণ করতে পারে।
চর্বিযুক্ত মাংস পরিহার করা উচিত। মুরগির মাংস খাওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুনরোজা রেখে পেট খারাপ হলে কী করবেন২৬ মার্চ ২০২৪শাকসবজিশাকসবজি দেহের প্রয়োজনীয় ভিটামিনের একটি নির্ভরযোগ্য উৎস। তাই সাহ্রিতে প্রতিদিন সবজি খাওয়া উচিত। তবে রাতের খাবারে অতিরিক্ত আঁশযুক্ত শাকসবজি খেলে হজমের সমস্যা হতে পারে। বরং মাঝারি আঁশের সবজি, যেমন ঝিঙা, চিচিঙ্গা, লাউ, পেঁপে, চালকুমড়া, গাজর প্রভৃতি সবজি খাওয়া স্বাস্থ্যসম্মত।
খেজুরসাহ্রিতে খেজুর খেলে দিনভর কর্মক্ষম থাকার শক্তি পাওয়া যায়। এ সময় অন্তত দুয়েকটি খেজুর খান। এতে পাবেন প্রাকৃতিক ফ্রুকটোজ ও প্রচুর ফাইবার বা আঁশ। এটি রক্তের গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
পানিইফতার থেকে শুরু করে সাহ্রি পর্যন্ত দৈনিক চাহিদা অনুযায়ী পর্যাপ্ত পানি খাওয়া জরুরি। তবে অনেকে সাহ্রির শেষ সময় পর্যন্ত এক নাগাড়ে পানি খেতেই থাকেন, যা পরবর্তী সময়ে পেটে অস্বস্তির সৃষ্টি করে। এটা স্বাস্থ্যসম্মত নয়।
আরও পড়ুনরোজা রেখেও কাদের ওজন কমে না৯ ঘণ্টা আগেসাহ্রিতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলবেনবেশি তৈলাক্ত, মসলাদার ও ঝাল খাবার খাওয়া উচিত নয়। সাহ্রির খাদ্যতালিকা থেকে বিরিয়ানি, পোলাও, তেহারি প্রভৃতি ভারী খাবার বাদ দিন। সাহ্রিতে এসব খাবার খেলে বদহজম, বুক জ্বালাপোড়া এবং পেটফাঁপার মতো সমস্যা হতে পারে।
লবণযুক্ত খাবার পানির তৃষ্ণা বাড়িয়ে দেয় এবং যেহেতু সারা দিন পানি খাওয়া যাবে না, তাই লবণযুক্ত খাবার পরিহার করাই উত্তম।
অনেকে সাহ্রিতে কোল্ড ড্রিঙ্কস বা কোমল পানীয় খেতে পছন্দ করেন। এসব পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে, যা প্রস্রাবে পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। সাহ্রিতে ক্যাফেইন আছে, এমন পানীয়, যেমন চা, কফি ইত্যাদি পরিহার করাও গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ক্যাফেইন ঘন ঘন প্রস্রাবের মাধ্যমে শরীরকে পানিশূন্য করে ফেলে।
আরও পড়ুনরোজায় ইফতারে কী কী খাবেন০১ মার্চ ২০২৫