সুবিপ্রবির অস্থায়ী ক্যাম্পাস স্থানান্তরের দাবি
Published: 6th, March 2025 GMT
সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (সুবিপ্রবি) অস্থায়ী ক্যাম্পাস সুনামগঞ্জ জেলা সদরে স্থাপনের দাবিতে সুনামগঞ্জে মানববন্ধন হয়েছে। জেলা আইনজীবী সমিতির ভবন প্রাঙ্গণে মঙ্গলবার এই মানববন্ধন হয়।
দুপুর ২টায় আয়োজিত এই কর্মসূচিতে অংশ নেন আইনজীবী, রাজনীতিবিদ, শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। বিশ্ববিদ্যালয় (সুবিপ্রবি) স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলন এবং সুনামগঞ্জের আয়োজনে এই মানববন্ধন হয়।
সুবিপ্রবির স্থায়ী ক্যাম্পাস বাস্তবায়ন আন্দোলনের সদস্য সচিব মুনাজ্জির হোসেন সুজনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি রবিউল লেইস রোকেস ও অধ্যাপক সৈয়দ মহিবুল ইসলাম। এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মল্লিক মইন উদ্দিন সোহেল পিপি, সাবেক সিভিল সার্জন সৈয়দ মনোয়ার আলী, জেলা জামায়েতের নায়েবে আমির শামসুদ্দিন আহমদ, জেলা সিপিবির সাবেক সভাপতি চিত্ত রঞ্জন তালুকদার, শিক্ষাবিদ যোগ্বেশ্বর দাস, জেলা জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি অ্যাড.
বক্তারা বলেন, সুনামগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস জেলা সদর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে শান্তিগঞ্জের চারটি স্থানে করা হয়েছে। টেক্সটাইল ইনস্টিউট, একটি কলেজ ও একটি মাদ্রাসায় করা এই প্রতিষ্ঠানের বেশির ভাগ শিক্ষার্থী সুনামগঞ্জ শহর থেকে ওখানে যাতায়াত করেন। কয়েকজন ছাত্রীর আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে সাবেক পরিকল্পনা মন্ত্রীর বাড়িতে। শহর থেকে সেখানে যাতায়াত করা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি অনিরাপদ।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ন মগঞ জ স ন মগঞ জ স ব প রব আইনজ ব
এছাড়াও পড়ুন:
সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ: শামীম ওসমান পালালেও তারা দোসরা বিশৃঙ্খলায়
“নারায়ণগঞ্জ থেকে শামীম ওসমান পালিয়ে গেলেও তার দোসররা নারায়ণগঞ্জে বিশৃঙ্খলা করছে। তাদের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতাকর্মীদের লড়াই করতে হচ্ছে। তারা ঘায়েল করার জন্য বিভিন্নভাবে নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও কাল্পনিক অভিযোগ সামনে এনে বিএনপির ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। ফ্যাসিবাদের এই দোসরদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।”
রবিার (২৭ এপ্রিল) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলনে এসে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ও নারায়নগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির পরিচালক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী।
অপপ্রচারের অভিযোগ এনে এর প্রতিবাদে তিনি বলেন, “আওয়ামী দোসরদের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দেশব্যাপী বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী মহল থেকে শুরু করে তৃণমূল নেতাকর্মী পর্যন্ত উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে মিথ্যাচার ও অপপ্রচারের শিকার হচ্ছে।”
“একইভাবে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাতেও আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। আমরা এই ধরনের মিথ্যা ও ষড়যন্ত্রমূল অপপ্রচারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। দলীয়ভাবে আলোচনা করে আমরা এই ধরনের কুচক্রী মহলের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।”
ফতুল্লার চৌধুরী বাড়ীর সন্তান হিসেবে নিজেকে তুলে ধরে রিয়াদ মোহাম্মদ বলেন, “ফতুল্লা মসজিদ, মাদ্রাসা, কবরস্থান, প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বহু সরকারি ও বেসরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের ভূমির দাতা আমার পূর্ব পুরুষরা। আমার বাবা ছিলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও মা ছিলেন স্কুল শিক্ষিকা। আমি ছাত্র রাজনীতি থেকে উঠে আসা একজন বিএনপির নিবেদিত কর্মী।”
“গত ২৬ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে রইসউদ্দিন নামের এক ব্যক্তি আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেন। সেখানে আমাকে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ভূমিদস্যু, দখলবাজ, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে; যার সঙ্গে আমার কোনো সম্পর্কই নাই।”
“নির্দিষ্ট কোনো তথ্য-প্রমাণাদিও উল্লেখ করেনি। রইস উদ্দিনকে দিয়ে আওয়ামী লীগের দোসররা আমার বিরুদ্ধে অপপ্রচারে নেমেছে,” অভিযোগ রিয়াদ মোহাম্মদের।
তিনি বলেন, “যিনি মানববন্ধন করেছেন, তিনি ফতুল্লার কেউ নন এবং মানববন্ধনে মুষ্টিমেয় লোকের সবাই বহিরাগত এবং তারা কেউ এখানকার ব্যবসায়ী নন। মানববন্ধনকারীরা সঠিকভাবে আমার নামটিও জানেন না। যার কারণে তারা সঠিকভাবে আমার নামটিও উচ্চারণ করতে পারেননি। মূলত আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্যই এক পক্ষ ভাড়াটে লোকজন দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট অভিযোগ এনে একটি মানববন্ধন আয়োজন করিয়েছে।”
রিয়াদ মোম্মদের দাবি, মানববন্ধনে ফতুল্লা হোসেন ট্রেক্সটাইল নামে একটি প্রতিষ্ঠানে অগ্নিসংযোগের কথা কথা বলা হয়েছে। সেই ঘটনাটি ২০২৪ সালের ১১ সেপ্টেম্বর বিকালে ফতুল্লা ইউনিয়ন ৫ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি ও সহযোগী সংগঠন এবং এলাকাবাসীর উদ্যোগে ফতুল্লা রেললাইন বটতলা এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, ও মাদকবিরোধী একটি শান্তি মিছিল আয়োজন করে। বিএনপি ও এলাকাবাসীর সমন্বয়ে আয়োজিত সেই শান্তি মিছিলে ফতুল্লার চিহ্নিত আওয়ামী পরিবার ও গডফাদার শামীম ওসমানের অন্যতম সহযোগী যুবলীগ ক্যাডার আক্তার এবং সুমনের সন্ত্রাসী বাহিনী হামলা ও গুলি বর্ষণ করেন।
তিনি বলেন, “ফতুল্লা থানার স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক জাকির হোসেন রবিন, যুবদল নেতা মিঠু, রাহাত চৌধুরীসহ ১৫/২০ জন সাধারণ মানুষ সেই ঘটনায় গুরুতর আহত হন। তাতে হোসেন টেক্সটাইল নামে প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে আদালতে একটি মামলা করা হয়। আমি সেই ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকলে, সেই মামলায় অবশ্যই আমাকেও আসামি করা হতো।”
হত্যাকান্ডের এক দিন পর নিহতের স্ত্রী বাদী হয়ে আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসী ও হোসেন টেক্সটাইলের দখলদার আক্তার ও সুমনসহ ১১ জনকে আসামি করে ফতুল্লা মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন বলে জানান রিয়াদ মোহাম্মদ।
পুলিশ সেই মামলার ভিত্তিতে আক্তার, সুমনের বাড়ির কেয়ারটেকারসহ ৭-৮ জনকে গ্রেপ্তার করেন জানিয়ে রিয়াদ মোহাম্মদ বলেন, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেই হত্যা মামলাকে ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য অজ্ঞাত ব্যক্তিদের দিয়ে আমার বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট অভিযোগ এনে আমাকে রাজনৈতিক ও সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করা হচ্ছে।”
লিখিত অভিযোগে রিয়াদ বলেন, সন্ত্রাসী আক্তার, সুমন ও তাদের পরিবার বিগত দিনে ৮-১০টি হত্যাকাণ্ডের সাথে সরাসরি জড়িত। এর মধ্যে বীরমুক্তিযোদ্ধা গিয়াসউদ্দিন মেম্বার, ডাইং ব্যবসায়ী সোলেমান এবং নজরুল হত্যাকাণ্ড অন্যতম।
তিনি বলেন, “বর্তমানে দেশে কোন দলীয় সরকার নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগে কোন সত্যতা থাকলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অবশ্যই আমার বিরুদ্ধে কোনো না কোনো লিখিত অভিযোগ জমা থাকতো এবং আমার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হতো। কিন্তু আমার বিরুদ্ধে বিগত দিনে এই ধরনের কোনো অভিযোগ আইনশৃঙ্খল বাহিনীর কাছে নেই। আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের কিঞ্চিত সত্যতা থাকলে যৌথবাহিনী কিংবা গোয়েন্দা সংস্থা অবশ্যই অবগত থাকতেন এবং আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতেন।“
সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার, সহ-সভাপতি হানিফ কবির, সুমন আকবর, যুগ্ম সম্পাদক আনিস রহমান,ছাত্রবিষয়ক সম্পাদক সাগর সিদ্দিকী, সহ-প্রচার সম্পাদক কামাল আহম্মেদ, মিলন টালি, এনায়েতনগর ইউনিয়ন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জহির চৌধুরী।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রাসেল