মুশফিকুরের বিদায়ে আবেগের বিচ্ছুরণ, গর্বের ঝরনাধারা
Published: 6th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে বুধবার রাতে অবসর নিয়েছেন। ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি ছাড়ার পর তিন বছরের ব্যবধানে ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে সরে গেলেন মুশফিকুর।
ওয়ানডেতে দেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান করেছেন। ধারাবাহিক সাফল্যের স্রোতে না ভাসালেও লাল-সবুজের বাংলাদেশকে বেশ কয়েকবার উল্লাসের সুযোগ দিয়েছেন, বুক ফুলিয়ে গর্বের সুযোগ করে দিয়েছেন। ২২ গজে শুধু ব্যাটিং নয়, মাঠের বাইরে তার সংকল্পবদ্ধ, লড়াইয়ের মানসিকতা, নিয়মানুবর্তিতা, অধ্যবসায় তাকে নিয়ে গেছে অনন্য উচ্চতায়। তাইতো তার বিদায়ের ঘোষণার দিনে আবেগের বিচ্ছুরণ হলো সতীর্থদের। তারা খুঁজে পাচ্ছেন গর্ব।
তামিম ইকবাল
আরো পড়ুন:
মুশফিকুরের থেকে তামিমের চাওয়া ‘অন্তত ১০০ টেস্ট’
বিষন্ন মুশফিকুরের ওয়ানডে ছাড়ার ঘোষণা
‘‘মুশফিককে আমি এতোটুকুই বলতে চাই, দোস্ত তোর সাথে আমার খেলা শুরু অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায় থেকে এবং আমি তোকে প্রতিটি স্তরে উন্নতি করতে দেখেছি। আমি দেখেছি, তুই একটা নরম্যাল ব্যাটসম্যান থেকে বাংলাদেশের অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান হয়েছিস। অনেক মানুষের, আপনাদের হয়তো ওর কঠোর পরিশ্রমটা দেখার সুযোগ হয়নি। কিন্তু আমরা যেহেতু একসঙ্গে খেলি আমি দেখেছি যে, একটা ছেলে কতটা কষ্ট করতে পারে। একটা মানুষের পক্ষে যতটা কষ্ট করা সম্ভব আমার কাছে মনে হয় সে সবই করেছে এবং এখনও করে যায়। আমরা এটা নিয়ে অনেক সময় হাসাহাসিও করি যে, একটা মানুষ এতো কষ্ট করে কেন? কিন্তু তার নিবেদন, তার খেলার প্রতি ভালোবাসা এটা কল্পনার বাইরে। আমি কথা বলে কোনোদিন কাউকে বোঝাতে পারব না।’’
‘‘আমি যেহেতু ওর খুব কাছের একজন, বন্ধু আমি, এটা অনুভব করতে পারছি এটা ওর জন্য প্রচন্ড কষ্টদায়ক। বন্ধু তুই যা অর্জন করতে পেরেছিস, যে-টুকুই তুই করেছিস তা অসাধারণ ছিল। অধিনায়ক হিসেবে, খেলোয়াড় হিসেবে বাংলাদেশের জন্য…বাংলাদেশের প্রত্যেকে বছরের পর বছর তা মনে রাখবে।’’
মাশরাফি বিন মুর্তজা
‘‘তোমার বিদায়ের ঘোষণায় এক লহমায় অনেক কিছু ভেসে উঠল চোখে। এত বছরের একসঙ্গে পথচলা, মাঠের ভেতরে-বাইরে কতশত স্মৃতি! ওয়ানডেতে তোমার রেকর্ডই তোমার হয়ে স্বাক্ষ্য দেবে অনেক কিছুর। তোমার ব্যাটের দ্যুতিতে কত আলোর দিন এসেছে দেশের ক্রিকেটে! তবে রেকর্ড বইয়ে লেখা থাকবে না, কতটা নিবেদন আর নিষ্ঠায় তুমি ক্যারিয়ার গড়েছিলে, কতটা ঘামের স্রোত পেরিয়ে সাফল্যের তীর ছুঁয়েছিলে। তোমার পরিশ্রম, প্রতিজ্ঞা আর ত্যাগের গল্প বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রজন্মের পর প্রজন্মে অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। আশা করি, সাদা পোশাকের বাকি অধ্যায়টুকু রঙিন করে তুলবে। তোমার ব্যাটে অভিজাত সংস্করণে দেশের ক্রিকেট সমৃদ্ধ হবে আরও…।’’
তাসকিন আহমেদ
‘‘একটা যুগের অবসান! মুশি ভাই, তোমাকে ছাড়া বাংলাদেশের ওয়ানডে ক্রিকেট কল্পনা করা কঠিন। তোমার আবেগ, নিষ্ঠা এবং লড়াইয়ের মনোভাব আমাদের সকলের জন্য অনুপ্রেরণা। তোমার সাথে মাঠে ভাগাভাগি করে নেওয়া এবং তোমার কাছ থেকে শেখা সম্মানের। পরবর্তী অধ্যায়ের জন্য তোমাকে শুভকামনা - তোমার গৌরব চিরকাল বেঁচে থাকবে।’’
সৌম্য সরকার
‘‘বাংলাদেশ ড্রেসিংরুমে কাটানো স্মৃতিগুলো লালন করব। বাংলাদেশ ক্রিকেটের প্রতি সেবার জন্য ধন্যবাদ। নতুন শুরু এবং সামনের জীবনের অভিযানের জন্য শুভকামনা। অবসর শেষ নয়, এটি কেবল পরবর্তী অধ্যায়ের শুরু। অবসরের শুভেচ্ছা ভাই।’’
শরিফুল ইসলাম
‘‘অবসরের শুভেচ্ছা, মুশফিকুর রহিম ভাই.
তাওহীদ হৃদয়
‘‘বগুড়া স্টেডিয়ামে আপনি প্র্যাকটিস করছেন শুনে ছোটবেলায় আপনাকে দেখার আশায় স্টেডিয়ামের গেইটের গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে থাকা থেকে শুরু করে, ওডিআই -এর আন্তর্জাতিক ক্যাপ আপনার হাত থেকে গ্রহণ করা এবং একই ড্রেসিং রুম শেয়ার করা:- আমার কাছে রূপকথার গল্পের থেকে কম নয়!!
‘‘এরকম লাখো ছেলেদের আইডল আপনি, যার জন্য আমার মতন অনেকেই আপনাকে একবার দেখবে বলে কতো দিন অপেক্ষা করেছে। আপনি আমার আইডল, কতোটা গুরুত্বপূর্ণ আপনি তা হয়তো বুঝতেও পারবেন না।’’
‘‘আমি বাকরুদ্ধ এবং হতবাক, তবুও আমার আদর্শ মুশফিকুর রহিমের অবসরে আমি খুশি। আমি তোমাকে অন্য কারো চেয়ে বেশি মিস করব।’’
হান্নান সরকার, সাবেক ক্রিকেটার ও নির্বাচক
‘‘খেলাটার প্রতি তুমি কতটা সৎ ছিলা আর ঠিক কি পরিমাণ ডেডিকেশনের সাথে খেলে গেছো বছরের পর বছর ধরে, তা খুব কাছ থেকেই দেখা। শেষটা হয়তো সেরাভাবে হলো না, কিন্তু বাংলাদেশ ক্রিকেটে তোমার অবদান কোনোদিন অস্বীকার করা সম্ভব না। কখনো না। তোমার আগামী দিনগুলো খুব সুন্দর হোক, মুশফিক। টেস্টে দুর্দান্ত কিছু ইনিংস দেখার অপেক্ষায় থাকলাম।’’
আল-আমিন হোসেন
‘‘এক কিংবদন্তির বিদায়, স্মৃতিতে চির অম্লান! বাংলাদেশ ক্রিকেটের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র, মুশফিকুর রহিম, তাঁর বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের ইতি টানছেন! জয়ের স্বপ্ন বুনেছেন, দলের জন্য লড়েছেন, আর অসংখ্য স্মরণীয় মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। তার নিবেদন, নেতৃত্ব, এবং অতুলনীয় পারফরম্যান্স ক্রিকেটপ্রেমীদের মনে চিরদিন অমলিন থাকবে! আপনার দ্বিতীয় ইনিংস শুভ হোক, মুশফিক ভাই।’’
জাকের আলী অনিক
‘‘খুব মিস করবো ভাই।’’
ঢাকা/ইয়াসিন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ম ম ইকব ল আম র ক ছ র জন য বছর র
এছাড়াও পড়ুন:
বাংলাদেশ হচ্ছে বিমসটেকের পরবর্তী চেয়ারম্যান
বাংলাদেশ আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের সভাপতিত্ব গ্রহণ করতে যাচ্ছে।
থাইল্যান্ডের ব্যাংককে চলমান ষষ্ঠ বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনের শেষে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে।
সেখানে সাত সদস্যের আঞ্চলিক ব্লক: বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ডের নেতারা ‘সমৃদ্ধ, স্থিতিস্থাপক এবং উন্মুক্ত বিমসটেক’ থিমের অধীনে গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করতে একত্রিত হয়েছেন।
এবারের সম্মেলন আয়োজনকারী দেশ থাইল্যান্ডের কাছ থেকে সভাপতিত্বের দায়িত্ব গ্রহণ করবে বাংলাদেশ। সেখানে থাই প্রধানমন্ত্রী তার সমাপনী বক্তব্য রাখবেন এবং বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা তার মেয়াদকালে ব্লকের জন্য দেশের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরবেন।
আজ শীর্ষ সম্মেলন শুরু হয় অংশগ্রহণকারী নেতাদের একটি প্রতীকী গ্রুপ ছবির মাধ্যমে। এরপর থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী, বিদায়ী বিমসটেক সভাপতি স্বাগত ভাষণ দেন।
মিয়ানমার এবং থাইল্যান্ডে সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে নিহতদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
এরপর, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস এবং অন্যান্য বিমসটেক নেতারা আঞ্চলিক সহযোগিতার বিষয়ে তাদের দেশের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরে বিবৃতি প্রদান করেন।
১৯৯৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বিমসটেক। আঞ্চলিক সহযোগিতার জন্য বিশেষ করে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, পরিবহন, জ্বালানি এবং সন্ত্রাসবাদ দমনের ক্ষেত্রে ক্রমবর্ধমানভাবে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করছে।
তথ্যসূত্র: বাসস