গাজীপুরের শ্রীপুরে জোর করে তরমুজ নিতে বাধা দেওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে বেদম পিটিয়েছেন এক সাবেক ছাত্রদল নেতা। মারধরের পর ওই ব্যবসায়ীর কাছে থাকা টাকা লুট করে প্রায় অর্ধশত তরমুজ সড়কে ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। পরে ধারালো অস্ত্র উঁচিয়ে বাজারজুড়ে মহড়া দেন ওই সাবেক ছাত্রদল নেতাসহ তাঁর সহযোগীরা। গত মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার সাতখামাইর বাজারে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় সন্ধ্যার পর বাজারের শতাধিক ব্যবসায়ী বিক্ষোভ করে ওই ছাত্রদল নেতাকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। খবর পেয়ে থানা পুলিশের দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে শান্ত হন ব্যবসায়ীরা। মারধরের শিকার ব্যবসায়ীর নাম এনামুল হক মুনসী (৪৮)। তিনি ওই এলাকার মৃত আবদুল কাদির আকন্দের ছেলে। এনামুল সাতখামাইর বাজারের মৌসুমি ফল ব্যবসায়ী। অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার নাম রমিজ উদ্দিন সৈকত (৩০)। তিনি একই এলাকার গিয়াস উদ্দিনের ছেলে। সৈকত গাজীপুর জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসম্পাদক। 

মারধরের শিকার এনামুল হক মুনসী জানান, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে সৈকত তাঁর দোকানে গিয়ে ‘টেস্ট’ করার জন্য একটি তরমুজ চান। তিনি ফ্রিতে তরমুজ দিতে পারবেন না জানালে ক্ষেপে যান সৈকত। তাঁকে অশ্লীল ভাষায় গালাগাল করে প্রায় অর্ধশত তরমুজ সড়কে ছুড়ে ফেলে দেন। এরই মধ্যে তাঁর (সৈকত) আরও ১০ থেকে ১২ সহযোগী সেখানে জড়ো হন। পরে সৈকত তাঁকে লাথি মেরে ফেলে দিয়ে বেদম পেটান। একপর্যায়ে এক সহযোগী এনামুলের পকেট থেকে ফল বিক্রির সাত হাজার টাকা ছিনিয়ে নেন। তাঁর চিৎকারে ব্যবসায়ীরা ছুটে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।

সাতখামাইর বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সভাপতি রাসেল আকন্দ জানান, ঘটনার পর সৈকতের নেতৃত্বে তাঁর কয়েকজন সহযোগী ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাজারজুড়ে মহড়া দেন। এতে ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। ওই দিন সন্ধ্যার পর ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ করে শ্রীপুর-সাতখামাইর সড়কে বিক্ষোভ করেন। বাজারের ওষুধ ব্যবসায়ী তানজির আকন্দ বাবু জানান, তারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রদর্শন করা ধারালো অস্ত্র উদ্ধারসহ সৈকত ও তাঁর সহযোগীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন। বরমী ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও উপজেলা বিএনপির সমবায়বিষয়ক সম্পাদক নাজমুল আকন্দ রনি বলেন, ‘খবর পেয়ে থানা পুলিশের আলাদা তিনটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছে প্রদর্শন করা ধারালো অস্ত্র উদ্ধারসহ সৈকতকে গ্রেপ্তারের আশ্বাস দিলে ব্যবসায়ীরা ফের দোকান খোলেন। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্ত রমিজ উদ্দিন সৈকত সমকালকে বলেন, এলাকার ছাত্রদলের নেতাকর্মী ন্যায্যমূল্যে পণ্য বিক্রি তদারকি করছিলেন। এ সময় এনামুল তাদের গালাগাল শুরু করেন। এক পর্যায়ে হাতাহাতি হয়। 

শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বলেন, একটি অভিযোগ করেছেন মারধরের শিকার ফল ব্যবসায়ী। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ন ত ব যবস য় র ম রধর র আকন দ সহয গ তরম জ

এছাড়াও পড়ুন:

মাছ রেখে ৫৬ বাংলাদেশি জেলেকে ছেড়ে দিলো মিয়ানমার নৌবাহিনী

বঙ্গোপসাগরে মাছ ধরতে গিয়ে মিয়ানমার নৌবাহিনীর হাতে আটক ৫৬ বাংলাদেশি জেলেকে ১০ ঘণ্টা পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৬ মার্চ) রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিজিবির টেকনাফ-২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আশিকুর রহমান।

ভুক্তভোগী ট্রলার মালিকদের বরাতে বিজিবির এই কর্মকর্তা জানান, বুধবার সকালে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরবর্তী দক্ষিণ-পশ্চিম সাগরে কয়েকটি ট্রলার মাছ ধরছিল। এ সময় ছয়টি ট্রলার ভুলক্রমে মিয়ানমারের জলসীমায় ঢুকে পড়ে।

এ সময় মিয়ানমারের নৌবাহিনী ট্রলারগুলো আটক করে এবং জেলেদের আটক করে নিয়ে যায়। পরে এসব ট্রলারে থাকা মাছ, জাল ও খাদ্যদ্রব্য রেখে রাত সাড়ে ১০টার দিকে ৫৬ জেলেকে ছেড়ে দেয় তারা। পরে জেলেরা নিরাপদে নিজ নিজ বাড়িতে ফিরে যান।

ছয় ট্রলারের মালিক হলেন- টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ এলাকার মো. বশির আহমদ, মো. আমিন, নুরুল আমিন, আব্দুর রহিম ও মো. শফিক। এদের মধ্যে মো. শফিকের মালিকাধীন দুটি ট্রলার রয়েছে।

এই ঘটনার পর থেকে সেন্টমার্টিন উপকূলে জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।

ঢাকা/তারেকুর/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ