এগারো কোটির বেশি নাগরিকের ৪৬ ধরণের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও বিক্রির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার রাতে তাকে পাঁচলাইশ থানার পেছনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিয়াউল আলম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ছিলেন। 

বুধবার বিকেলে তাকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকায় নিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার সিআইডি। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেছে। তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’

গত বছরের ৯ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শামীমুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। জিয়াউল আলম এই মামলা এজাহারনামীয় আসামি।

আসামিদের বিরুদ্ধে ১১ কোটির বেশি নাগরিকের জাতীয় পরিচয়ের (এনআইডি) ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও বিক্রির অভিযোগ আনেন বাদী।

জানা যায়, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) যাচাই সেবা গ্রহণ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ অনুসারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য-উপাত্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় বা বিক্রি করতে পারবে না। চুক্তি অনুসারে, ১১ কোটির বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের অনুলিপি তৈরি করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এসব তথ্য ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সরবরাহ করে। ডিজিকন এসব তথ্য পরিচয় ডটকম নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮০টির বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করছে। ৫ বছর ধরে এসব তথ্য বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

‘এনআইডি নিবন্ধন আইন রহিতকরণ অধ্যাদেশ নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করবে’

ফরিদপুরে জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ ২০২৫ বাতিল করার দাবিতে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বুধবার জেলা আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় বৃহত্তর পাঁচ জেলায় কর্মরত নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

সভায় বক্তারা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন আইন (রহিতকরণ) অধ্যাদেশ ২০২৫ প্রণয়ন ও কার্যকর হলে নির্বাচন ব্যবস্থাপনা তথা ভোটার তালিকা প্রণয়নে নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক ক্ষমতা খর্ব হবে। এছাড়া ভোটার তালিকা প্রণয়নের ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনকে সিভিল রেজিস্ট্রেশনের দ্বারস্থ হতে হবে; যা সংবিধানে প্রদত্ত নির্বাচন কমিশনের স্বাধীন অস্তিত্বের পরিপন্থী।

তারা বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সিভিল রেজিস্ট্রেশনে ন্যস্ত হলে ভোটার তালিকার তথ্য ও জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যের অমিলের কারণে ভোটপ্রদান বাধাগ্রস্ত হবে এবং নির্বাচন পরিচালনায় বিঘ্ন ঘটবে। এছাড়াও তথ্যভাণ্ডারের শুদ্ধতা বিনষ্ট হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হওয়ার পাশাপাশি নাগরিকদের তথ্যের গোপনীয়তার অধিকার ক্ষুণ্ণ হতে পারে।

বক্তারা আরও বলেন, জাতীয় পরিচয়পত্র সিভিল রেজিস্ট্রেশনের কাছে ন্যস্ত করা হলে ভোটার তালিকা হালনাগাদ বাধাগ্রস্ত হওয়াসহ বিঘ্ন ঘটবে আগামী সংসদ নির্বাচনেও।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন, অতিরিক্ত আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা মো. রবিউল ইসলাম, জেলা নির্বাচন অফিসার তারেক আহমেদ, নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন, মো. মিজানুর রহমান, ফরিদ আহমেদ, মাহফুজ আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সর্বজনীন পেনশনের গ্রাহক হবেন যেভাবে
  • সাবেক সিনিয়র সচিব জিয়াউল আলমকে চট্টগ্রাম থেকে গ্রেপ্তার
  • ‘এনআইডি নিবন্ধন আইন রহিতকরণ অধ্যাদেশ নির্বাচন কমিশনের ক্ষমতা খর্ব করবে’
  • আলাদাভাবে ফাইনাল পেশাগত পরীক্ষা চান ১৫০০ মেডিকেল শিক্ষার্থী
  • ডিসেম্বরে নির্বাচন ধরে নিয়ে প্রস্তুতি চলছে: সিইসি
  • নকল করায় নোবিপ্রবির ৪ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
  • আবরারকে ফাহাদকে দেওয়া হচ্ছে মরণোত্তর স্বাধীনতা পদক