এনআইডির তথ্য বিক্রির মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব জিয়াউল গ্রেপ্তার
Published: 5th, March 2025 GMT
এগারো কোটির বেশি নাগরিকের ৪৬ ধরণের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও বিক্রির অভিযোগে দায়ের হওয়া মামলায় সাবেক সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলমকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে তাকে পাঁচলাইশ থানার পেছনে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসকের বাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিয়াউল আলম তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ছিলেন।
বুধবার বিকেলে তাকে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ঢাকায় নিয়ে যায়। তাকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে পাঁচলাইশ থানার ওসি মোহাম্মদ সোলাইমান বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের দায়ের করা একটি মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকার সিআইডি। পাঁচলাইশ থানা পুলিশ তাদের সহযোগিতা করেছে। তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’
গত বছরের ৯ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলকসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন শামীমুর রহমান নামে এক ব্যক্তি। জিয়াউল আলম এই মামলা এজাহারনামীয় আসামি।
আসামিদের বিরুদ্ধে ১১ কোটির বেশি নাগরিকের জাতীয় পরিচয়ের (এনআইডি) ৪৬ ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি ও বিক্রির অভিযোগ আনেন বাদী।
জানা যায়, ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর এনআইডি (জাতীয় পরিচয়পত্র) যাচাই সেবা গ্রহণ বিষয়ে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন ও আইসিটি মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ওই চুক্তির অনুচ্ছেদ ২ অনুসারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল নির্বাচন কমিশনের তথ্য-উপাত্ত কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে বিনিময় বা বিক্রি করতে পারবে না। চুক্তি অনুসারে, ১১ কোটির বেশি নাগরিকের ব্যক্তিগত তথ্যের অনুলিপি তৈরি করে ২০১৯ সালের এপ্রিলে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলকে দেওয়া হয়। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এসব তথ্য ডিজিকন গ্লোবাল সার্ভিস লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে সরবরাহ করে। ডিজিকন এসব তথ্য পরিচয় ডটকম নামক ওয়েবসাইটের মাধ্যমে ১৮০টির বেশি দেশি-বিদেশি, সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে অর্থের বিনিময়ে বিক্রি করছে। ৫ বছর ধরে এসব তথ্য বিক্রি করে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
যশোরে ব্যবসায়ী অপহরণের ১ মাস পর মামলা, গ্রেপ্তার ২
যশোরে ব্যবসায়ী রেজাউল ইসলাম অপহরণের ১ মাস ৩ দিন পর কোতোয়ালি থানায় মামলা হয়েছে। চট্টগ্রাম থেকে সন্দেহভাজন দুই ব্যক্তিকে আটক করার পর শনিবার (২৬ এপ্রিল) রাতে মামলা গ্রহণ করে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, রেজাউল ইসলামের জমি বিক্রির ২১ লাখ টাকা আত্মসাতের জন্য তাকে অপহরণ করা হয়েছে। তবে তিনি জীবিত আছেন, নাকি হত্যার শিকার হয়েছেন, তা নিশ্চিত করতে তদন্ত চলছে। অভিযানের স্বার্থে আটককৃতদের নাম প্রকাশ করেনি পুলিশ।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, রেজাউল ইসলাম যশোর শহরের শংকরপুর ইসহাক সড়ক এলাকায় কাপড় ও টেইলার্সের ব্যবসা করতেন এবং কামরুল ইসলামের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। পাশের কক্ষে থাকতেন মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে রিপন হাওলাদার ও সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার তালতলা বাজার এলাকার হবি গাজীর ছেলে সবুজ ওরফে রবিউল। একই বাড়িতে বসবাসের সুবাদে তাদের মধ্যে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে।
আরো পড়ুন:
এনআইডির সাবেক ডিজি সাহেলেরই এনআইডি ব্লকের নির্দেশ
জুলাই গণহত্যা: শেখ হাসিনাসহ ৪০৮ জনের বিরুদ্ধে আরেক মামলা
পরবর্তীতে ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য রেজাউল তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া দুই শতক জমিসহ বাড়ি বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন। সবুজ ও রিপনের সহায়তায় ২১ লাখ টাকায় ওই সম্পত্তি বিক্রি করেন তিনি। গত ২২ মার্চ রাত সাড়ে ১২টার দিকে টাকা হস্তান্তরের কথা বলে সবুজ ও রিপন মোবাইল ফোনে ডেকে নেন রেজাউলকে। এরপর থেকে তিনি নিখোঁজ রয়েছেন।
রেজাউলের পরিবার প্রথমে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে এক সপ্তাহের মধ্যে অপহরণ ও গুমের অভিযোগ এনে সবুজ, রিপন এবং অজ্ঞাত ২-৩ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তবে পুলিশ তখন অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নেয়নি, বরং তদন্ত শুরু করে। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চট্টগ্রামে এক সন্দেহভাজনকে শনাক্ত করে অভিযান চালিয়ে দুইজনকে আটক করে পুলিশ।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল হাসনাত খান জানান, রেজাউলের অপহরণের ঘটনায় মামলা হয়েছে এবং সন্দেহভাজন দুইজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তবে রেজাউলের কী হয়েছে, তা জানতে তদন্ত অব্যাহত আছে।
রেজাউলের ছেলে মেহেদী হাসান চয়ন জানান, আটককৃতদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ সাতক্ষীরায় অভিযান চালাচ্ছে। তিনিও অভিযানে সঙ্গে আছেন। এখনো তার বাবার ভাগ্যে কী ঘটেছে, তা নিশ্চিত হতে পারেননি।
ঢাকা/রিটন/বকুল