বিদেশি সহায়তা তহবিল স্থগিত (ফ্রিজ) চেয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের করা আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট। আজ বুধবার মার্কিন উচ্চ আদালত এই সংক্রান্ত রায় দেন। খবর সিএনএনের।

যদিও তাৎক্ষণিকভাবে অর্থ ছাড়ের সময় নিয়ে কিছু জানায়নি ‍উচ্চ আদালত। তবে হোয়াইট হাউসকে নিম্ন আদালতে বিষয়টি নিয়ে আইনি লড়াই চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি দিয়েছে।

সিএনএন বলছে, বুধবারের আদেশটি স্বাক্ষরবিহীন ছিল। চারজন বিচারপতি আদেশে ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তারা হলেন- স্যামুয়েল আলিটো, ক্ল্যারেন্স থমাস, নিল গর্সুচ এবং ব্রেট কাভানাফ। এছাড়া প্রধান বিচারপতি জন রবার্টস, অ্যামি কোনি ব্যারেট, এলেনা কাগান, সোনিয়া সোটোমায়র এবং কেতানজি ব্রাউন জ্যাকসনসহ পাঁচ বিচারপতি পক্ষে রায় দেন।

সংখ্যাগরিষ্ঠ বিচারকরা উল্লেখ করেছেন, গত সপ্তাহে অর্থ ব্যয় করার জন্য আদালতের নির্দেশিত সময়সীমা ইতিমধ্যেই পেরিয়ে গেছে। নিম্ন আদালতকে ‘অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ মেনে চলা নিশ্চিত করতে সরকারকে কী বাধ্যবাধকতা মানতে হবে তা স্পষ্ট করা উচিত।’

ভিন্নমতের বিচারকদের মধ্যে আলিটো লিখেছেন, নিম্ন আদালতের বিচারককে এই মামলায় বিদেশি সহায়তা বন্ধ করার জন্য প্রশাসনকে আদেশ দেওয়ার অনুমতি দেওয়ার জন্য আদালতের সিদ্ধান্তে তিনি ‘স্তম্ভিত’ হয়েছিলেন।

দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর নির্বাহী আদেশে বিদেশি সহায়তা বন্ধের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সেই আদেশের বিরুদ্ধে মামলা করেন বেশ কয়েকটি অলাভজনক সংস্থা। পরে সংস্থাগুলোর অনেকটা পক্ষে রায় দেন দেশটির নিম্ন আদালত।

মার্কিন জেলা আদালতের বিচারক আমির আলী পুরো নির্বাহী আদেশের বিরুদ্ধে রায় না দিয়ে সীমিত সিদ্ধান্ত দেন। তিনি বলেন, ট্রাম্পের ক্ষমতা গ্রহণের আগে অনুমোদিত বৈদেশিক সহায়তা আপাতত স্থগিত বা বাতিল করা যাবে না।

ট্রাম্প প্রশাসন বৈদেশিক সহায়তা স্থগিত করার পরপরই মার্কিন আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থাকেও (ইউএসএইড) লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে। এই সংস্থাটির কয়েক হাজার কর্মী এবং ঠিকাদারকে ইতিমধ্যে ছাঁটাই করা হয়েছে। অনেককে সাময়িক বরখাস্ত বা প্রশাসনিক ছুটিতেও পাঠানো হয়েছে। এ নিয়েও সমালোচনায় পড়তে হয়েছে ট্রাম্প প্রশাসনকে। 

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে ট্রাম্পের মন্ত্রীর ব্যাগ চুরি

যুক্তরাষ্ট্রের ওয়াশিংটন ডিসির একটি রেস্তোরাঁয় গত রোববার নৈশভোজে গিয়েছিলেন হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের মন্ত্রী ক্রিস্টি নোয়েম। সেখানে খাওয়াদাওয়া করার সময় তাঁর ব্যাগটি চুরি হয়ে যায়। গতকাল সোমবার ক্রিস্টি নোয়েম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। ব্যাগে তিন হাজার ডলার ও কিছু জিনিসপত্র ছিল।

গতকাল হোয়াইট হাউসে ইস্টার এগ রোল অনুষ্ঠানে নোয়েমের কাছে ওই চুরির ঘটনা নিয়ে জানতে চাওয়া হয়েছিল। এ সময় তিনি চুরির বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। বলেছেন, বিষয়টির এখনো সুরাহা হয়নি।

নোয়েমের নিরাপত্তার দায়িত্বে আছে সিকিউরিটি সার্ভিস। তারা ক্যাপিটাল বার্গার নামের ওই রেস্তোরাঁর নজরদারি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখেছে। এতে দেখা গেছে, মুখে মাস্ক পরা অজ্ঞাত এক শ্বেতাঙ্গ ব্যক্তি তাঁর ব্যাগ চুরি করছেন এবং রেস্তোরাঁ থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার এক সূত্রের কাছ থেকে এমন তথ্য জানতে পেরেছে সিএনএন।

ওই চুরির ঘটনায় নোয়েমের ওষুধপথ্য, বাসার চাবি, পাসপোর্ট, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের বিশেষ ব্যাজ, মেকআপ ব্যাগ, ব্ল্যাংক চেক, প্রায় তিন হাজার ডলার এবং তাঁর গাড়িচালকের লাইসেন্স খোয়া গেছে।

ওই সূত্র আরও বলেছে, নোয়েমের আর্থিক হিসাবগুলো থেকে কোনো ধরনের লেনদেনের চেষ্টা হচ্ছে কি না, তা শনাক্ত করতে তদন্ত শুরু করেছে সিক্রেট সার্ভিস।

হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগের এক মুখপাত্র বলেন, নোয়েমের সন্তান, নাতি–নাতনিরাসহ পুরো পরিবারই শহরটিতে অবস্থান করছিল। পরিবারের সদস্যদের খাওয়ানো, ইস্টার সানডে উপলক্ষে তাঁদের উপহার দেওয়াসহ বিভিন্ন কাজে খরচ করার জন্য তিনি নগদ অর্থ সঙ্গে রেখেছিলেন।

মন্ত্রিপরিষদের এক কর্মকর্তার এত কাছাকাছি পৌঁছানো এবং তাঁর জিনিসপত্র চুরি করার ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের ধারণা, এ ক্ষেত্রে নিরাপত্তাব্যবস্থায় কোনো ঘাটতি ছিল।

সিএনএনের আইনপ্রয়োগ–বিষয়ক বিশ্লেষক ও সিক্রেট সার্ভিসের সাবেক কর্মকর্তা জোনাথন ওয়াকরো মনে করেন, সিক্রেট সার্ভিস, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ এবং সহযোগী আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর উচিত এ নিরাপত্তা লঙ্ঘনের ঘটনাটি নিয়ে অবিলম্বে এবং আরও বেশি করে পর্যালোচনা করা। এ ধরনের ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাব্যবস্থায় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন কি না, তা সিক্রেট সার্ভিসের খতিয়ে দেখা উচিত বলে মনে করেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • যুক্তরাষ্ট্রে রেস্তোরাঁয় খেতে গিয়ে ট্রাম্পের মন্ত্রীর ব্যাগ চুরি