আন্তর্জাতিক ওয়ানডে ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। বুধবার রাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক এক পোস্টে এই ঘোষণা দিয়েছেন তিনি।
বিস্তারিত আসছে...
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বিএসইসি চেয়ারম্যান-কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি, নইলে কর্মবিরতি
পুঁজিবাজারের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) বর্তমান চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের পদত্যাগ দাবি করেছেন সংস্থাটির কর্মকর্তা কর্মচারীরা। বুধবারের (৫ মার্চ) মধ্যে তারা পদত্যাগ না করলে কর্মবিরতি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন কর্মকর্তা কর্মচারীরা। আগামী বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে বিএসইসির কর্মকর্তা কর্মচারীরা এ কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
বুধবার (৫ মার্চ) সিকিউরিটিজ কমিশন ভবনে বিএসইসি অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে অনানুষ্ঠানিক এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুর রহমান।
এ সময় বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মোহাম্মদ রেজাউল করিম, মোহাম্মদ আনোয়ারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
মাহবুবুর রহমান বলেন, বর্তমান কমিশন নিয়ে বিএসইসির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে হতাশা তৈরি আছে। এর মধ্যে অন্যতম কারণ— কমিশনারদের খারাপ আচরণ, বিভিন্ন কোম্পানির তদন্তের আলোকে কর্মকর্তাদের ধারাবাহিক শোকজ করা এবং নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর আদেশ জারি করা। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের কাছে ৫ দফা দাবি জানাই। তবে তারা এ দাবি মেনে নেয়নি। বরং আজ সেনাবাহিনীকে ভুল তথ্য দিয়ে ডেকে এনে তারা আমাদের কর্মকর্তাদের ওপর লাঠিচার্জ করিয়েছেন। এতে আমাদের ৬ জন কর্মী আহত হয়েছেন।
এ পরিস্থিতিতে আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন কমিশনের সঙ্গে কাজ করতে পারছি না। তাই, আমরা বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের পদত্যাগ দাবি করছি। তারা যদি বুধবারের মধ্যে পদত্যাগ না করেন তাহলে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) থেকে পুরো কমিশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কর্মবিরতি কর্মসূচি পালন করবেন। আমরা সরকারের কাছে গণমাধ্যমের মাধ্যমে এ বিষয়টি তুলে ধরছি। সরকারকে এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখার জন্য বিএসইসির সকল কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পক্ষ থেকে বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি।
তিনি আরো বলেন, সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, এখানে (বিএসইসি) যোগ্য ও অভিজ্ঞ বসানো হোক। বাংলাদেশ ব্যাংকে যেমন অভিজ্ঞ অভিভাবক দেওয়া হয়েছে, আমরাও তেমন অভিভাবক চাই। যে অভিভাবক তাদের নিজেদের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সম্মান দিতে জানে না, তাদের সঙ্গে কীভাবে কাজ করা সম্ভব। আমরা তাদের দুর্ব্যবহার অনেক সহ্য করেছি, আর নয়। আমরা যদি কোনো অপরাধ করে থাকি, আর সেটা যদি প্রমাণিত হয়, তাহলে চাকরি বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হোক। কিন্তু সেটা না করে তারা এক কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠানোর মতো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। এটা সঠিক সিদ্ধান্ত নয় বলে আমরা জানিয়েছি। কিন্তু তারা সেটা শুনেননি। বরং তারা আমাদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেছেন।
বিএসইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের দাবিগুলো হলো-
১. জরুরি মিটিং কল করে নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমানের বাধ্যতামূলক অবসরের অবৈধ আদেশ প্রত্যাহার করতে হবে।
২. বিতর্কিত তদন্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের শোকজ বন্ধ করতে হবে এবং পূর্বে প্রদত্ত শোকজ সব প্রত্যাহার করে ক্ষমা চাইতে হবে।
৩. ১২৭ জনের নিয়োগের ব্যাপারে কমিশন কর্তৃক বিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ এবং ৩ দিনের মধ্যে আপিল করে কমিশনের অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে।
৪. কমিশনের কর্মকর্তা কর্মচারীদের সাথে অশোভন, অপেশাদারমূলক দুর্ব্যবহার বন্ধ করতে হবে এবং ক্ষমা চাইতে হবে।
৫. উপরিউক্ত ৪টি দাবি না মানলে এখনই পদত্যাগ করতে হবে।
এর আগে, বুধবার বেলা ১১টার দিকে বিএসইসি চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের ফ্লোর (পঞ্চম তালা) ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেন প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিএসইসি ভবনের সামনে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়। পরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা বিএসইসির ভেতরে ঢুকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিএসইসির কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে সেনাবাহিনীর অনেক বাগবিতণ্ডা এবং উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পরে সাড়ে ৪ ঘণ্টা অবরুদ্ধ অবস্থা থাকার পর চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ, কমিশনার ফারজানা লালারুখ ও মো. আলী আকবর নিজ গাড়িতে করে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সহযোগিতায় কমিশন ত্যাগ করেন।
ঢাকা/এনটি/এনএইচ