সুনামগঞ্জে আরও দুটি জলমহালের মাছ লুট
Published: 5th, March 2025 GMT
সুনামগঞ্জে আরও দুটি জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটেছে। হাজার হাজার মানুষ জড়ো হয়ে এসব জলমহালে মাছ ধরতে নেমে পড়েন। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মানুষকে বোঝালেও তাতে কোনো কাজ হয়নি। এর আগে গত পাঁচ দিনে জেলার দিরাই ও শাল্লা উপজেলায় আরও ছয়টি জলমহালে মাছ লুটের ঘটনা ঘটে।
গতকাল মঙ্গলবার দিরাই উপজেলার বেতইর জলমহালের কুচুয়া ও সেখামপুর বিলে মাছ লুটের ঘটনা ঘটতে পারে, এমন খবর আগেই পেয়েছিল উপজেলা প্রশাসন। সে অনুযায়ী ভোর পাঁচটার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সনজিব সরকার সেনাবাহিনী, পুলিশ ও আনসার সদস্যসহ সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা গিয়ে দেখেন,বিলে মাছ ধরতে মানুষজন জড়ো হচ্ছেন। এ সময় তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁরা। কিন্তু বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ঘণ্টা দুয়েক মানুষকে সামলে রাখতে পারলেও পরে আর সম্ভব হয়নি। জলমহালটির আয়তন বড় হওয়ায় যেদিকে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা ছিলেন, সেদিকে না নেমে অন্যদিকে বিলে নেমে পড়েন লোকজন। এ খবর জেনে সব দিক থেকেই মানুষ মাছ ধরতে শুরু করেন।
পরে একই জলমহালের আরেক অংশে গিয়ে লোকজনকে বিলের মাছ ধরা থেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন তাঁরা; কিন্তু উপজেলার সুজাননগর এলাকার ওই স্থানে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পাঁচ থেকে ছয় হাজার লোক আগে থেকেই জড়ো হয়ে আছেন। একপর্যায়ে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর ঢিল ছোড়েন মাছ ধরতে আসা লোকজন। পরে বাধ্য হয়ে সেখান থেকে সরে আসেন প্রশাসনের কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। দিনভর অনেকটা উৎসবের আমেজে এসব জলমহালে হাজার হাজার মানুষ পলো, জালসহ নানা উপকরণ নিয়ে মাছ ধরেন।
দিরাইয়ের ইউএনও সনজিব সরকার বলেন, ‘আমরা মানুষজনকে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখি; কিন্তু একসময় কয়েক হাজার লোক সেখানে জড়ো হন। আমরা যেদিকে ছিলাম, সেদিকে না নেমে অন্যদিকে আরও লোকজন বিলে নেমে পড়েন। বিলের ইজারাদারের লোকজন বলছে, এর পেছনে কারও কারও উসকানি আছে। পুলিশ বিষয়টি দেখছে।’
এ ছাড়া মঙ্গলবার জামালগঞ্জ উপজেলায় আয়লা-ছাদাইয়া জলমহালেও কয়েক হাজার মানুষ নেমে মাছ লুট করে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এই জলমহালের ইজারাদার স্থানীয় নবীনগর উত্তর মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রীতুষ বর্মণ। তিনি জলমহালের মাছ লুটের বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
প্রীতুষ বর্মণ জানান, এই জলমহাল জেলার দিরাই ও জামালগঞ্জ উপজেলার মাঝামাঝি অবস্থিত। মঙ্গলবার ভোররাতে পাশের দুই উপজেলার ১০ থেকে ১২ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ বিলের পাড়ে জড়ো হন। এতে ভয়ে বিলের পাহারার দায়িত্বে থাকা লোকজন পালিয়ে যান। পরে জড়ো হওয়া মানুষ বিলে নেমে মাছ লুট করে নিয়ে যান।
সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়া বলেন, তাঁরা সব ঘটনাই খতিয়ে দেখছেন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: উপজ ল র ম ছ ধরত র সদস ল কজন
এছাড়াও পড়ুন:
রাজধানীতে ৭১ চেকপোস্টে গ্রেপ্তার ১৬০
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে ঢাকা মহানগর এলাকায় পুলিশি কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে। এরই অংশ হিসেবে ডিএমপিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে সমন্বিত চেকপোস্ট ও টহল কার্যক্রম বাড়ানো হয়েছে।
গত ২৪ ঘণ্টায় ৭১ চেকপোস্টে ১৬০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। সোমবার (৩ মার্চ) দুপুরে বিষয়টি জানিয়েছেন ডিএমপির মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
তিনি বলেন, “গত শনিবার (১ মার্চ) রাত ১২টা থেকে রবিবার (২ মার্চ) রাত ১১টা ৫৯ মিনিট পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের ৫০টি থানা এলাকায় জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করে। এর মধ্যে রাতে ৩৪০টি ও দিনে ৩২৭টি টিম দায়িত্ব পালন করে। টহল টিমগুলোর মধ্যে রয়েছে-মোবাইল পেট্রোল টিম ৪৭৯টি, ফুট পেট্রোল টিম ৭৩টি ও হোন্ডা পেট্রোল টিম ১১৫টি।”
তিনি বলেন, “মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বাড়ানোর লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি কর্তৃক ৭১টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হয়।”
জননিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির টহল টিমের পাশাপাশি মহানগরীর বিভিন্ন অপরাধপ্রবণ স্থানে দুই পালায় সিটিটিসির ১৪টি, তিন পালায় অ্যান্টি টেরোরিজম ইউনিটের (এটিইউ) ১২টি ও ডিএমপির সঙ্গে রাতে র্যাবের ১০টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করে। এছাড়া ডিএমপির সঙ্গে পুলিশের বিশেষায়িত ইউনিট এপিবিএন কর্তৃক ২০টি চেকপোস্ট পরিচালনা করা হয়।
তালেবুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত মোট ১৬০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের মধ্যে রয়েছে ৬ জন ডাকাত, ১৭ জন পেশাদার সক্রিয় ছিনতাইকারী, ৩ জন চাঁদাবাজ, ১৮ জন চোর, ২০ জন চিহ্নিত মাদককারবারি, ১৯ জন পরোয়ানাভুক্ত আসামিসহ অন্যান্য অপরাধে জড়িত অপরাধী।
অভিযানে বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহৃত ৩টি চাকু, ২টি সুইচ গিয়ার, একটি দা, ৩টি লোহার রড, ৬টি মোবাইল ফোন ও দুটি মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়। এছাড়া উদ্ধারকৃত মাদকের মধ্যে রয়েছে ৫ হাজার ৩০ পিস ইয়াবা ও এক কেজি ৫৮৪ গ্রাম গাঁজা। এসব ঘটনায় ডিএমপির বিভিন্ন থানায় ৩৬টি মামলা দায়ের করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
ঢাকা/এমআর/এসবি