বিশ্বকাপ ফাইনালের বিরতিতে থাকবে সুপার বোলের মতো আয়োজন
Published: 5th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকো ও কানাডায় হবে ২০২৬ ফুটবল বিশ্বকাপ। তিন দেশ মিলে বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রথম ঘটনা হবে সেটি। আর সেই বিশ্বকাপেই প্রথাগত নিয়ম ভেঙে হবে ফাইনাল, যুক্তরাষ্ট্রের এএফএল চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচ সুপার বোলের মতো বিরতির সময় হবে বিশেষ অনুষ্ঠান। জানিয়েছেন ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো।
২০২৬ সালের ১৯ জুলাই ইস্ট রাদারফোর্ডের মেটলাইফ স্টেডিয়ামে হবে বিশ্বকাপ ফাইনাল। এ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের দুই অঙ্গরাজ্যের টানাপোড়েন নিরসনে বিশ্বকাপের সময় মেটলাইফ স্টেডিয়ামকে নিউইয়র্ক নিউ জার্সি স্টেডিয়াম নামে ডাকা হবে। ফাইনালে প্রথমার্ধ শেষে বিরতির সময় তারকা শিল্পীরা পারফর্ম করবেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইনস্টাগ্রামে আজ ফিফা সভাপতি ইনফান্তিনো লিখেছেন, ‘আমি এটা নিশ্চিত করতে পারি যে, ফিফা বিশ্বকাপ ফাইনালের শো হবে নিউইয়র্কের নিউ জার্সিতে। এটা হবে ফিফা বিশ্বকাপের ঐতিহাসিক মুহূর্ত এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় ক্রীড়া আসরের সঙ্গে মানানসই একটি অনুষ্ঠান হবে।’
এ বছর নিউ অরলিন্সে সুপার বোলে মুখোমুখি হয়েছিল ফিলাডেলফিয়া ইগলস ও কানসাস সিটি চিফস। সেদিন বিরতির সময় র্যাপ শিল্পী কেন্ডরিক লামারের পারফরম্যান্স দর্শকদের মুগ্ধ করে। আশার, রিয়ানা, স্নুপ ডগ ও দ্য উইকেন্ডের পারফরম্যান্সও অনেকের নজর কেড়েছে। মাঠে মঞ্চ সাজাতে ও সরিয়ে কিছুটা সময় লাগায় সর্বশেষ সুপার বোলে ৩০ মিনিটের বিরতি দেওয়া হয়েছিল।
ফুটবলে সাধারণত দুই অর্ধের মাঝে ১৫ মিনিট বিরতি থাকে। তবে সুপার বোলের মতো ২০২৬ বিশ্বকাপ ফাইনালে বিরতির সময় বাড়ানো হবে কি না, সে ব্যাপারে ফিফার পক্ষ থেকে কিছু জানানো হয়নি।
তবে ফাইনালের ভেন্যুর পাশাপাশি নিউইয়র্কের টাইমস স্কয়ারেও অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন ইনফান্তিনো। শিল্পীদের তালিকা তৈরি করতে ব্রিটেনের বিখ্যাত রক ব্যান্ড কোল্ড প্লে ফিফাকে সহযোগিতা করবে বলেও জানিয়েছেন তিনি, ‘ব্রোঞ্জ ফাইনাল (তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচ) ও ফাইনালের সময় ফিফা কীভাবে টাইমস স্কয়ারের দায়িত্ব নেবে, সে ব্যাপারেও আমরা কথা বলেছি। দুটি দুর্দান্ত ম্যাচ হবে, যেখানে বিশ্বের কয়েকজন সেরা খেলোয়াড় থাকবে। নিউইয়র্ক নগরীর ঐতিহাসিক টাইমস স্কয়ারে উদ্যাপনের ব্যবস্থা করার চেয়ে ভালো আর কী হতে পারে। বিরতির মাঝের এই অনুষ্ঠানে শিল্পীদের তালিকা তৈরিতে সাহায্য করার জন্য কোল্ড প্লের ক্রিস মার্টিন এবং ফিল হার্ভেকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বার্সেলোনা নয়, মেসি মায়ামিতেই থাকছেন
লিওনেল মেসির এখন খেলছেন ইন্টার মায়ামিতে। মেজর লিগ সকারের (এমএলএস) ক্লাবটির সঙ্গে চুক্তি চলতি বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এর কোথায় যাবেন বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার? গুঞ্জন ছিল বার্সেলোনা বা নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজে যোগ দিতে পারেন এই ফরোয়ার্ড। তবে সেই জল্পনা-কল্পনাতে পানি ঢেলে দিয়ে ‘দ্য অ্যাথলেটিক’-এর দাবি, মেসির সাথে মায়ামির চুক্তি নবায়ন প্রক্রিয়া মোটামুটি চূড়ান্ত।
মেসি দারুণ খেলছে মায়ামিতে। ৩৭ বছর বয়সেও এই আর্জেন্টাইন তারকার বয়স যত বাড়ছে, ততই উজ্জ্বল হচ্ছে পারফরম্যান্স। বার্সেলোনার কিংবদন্তি এই বাঁ-পায়ের জাদুকর মায়ামির হয়ে ২০২৪-২৫ মৌসুমে এখন পর্যন্ত ৯ ম্যাচে ৮ গোল ও ৩ অ্যাসিস্ট করেছেন। স্বাভাবিকভাবেই এমন ‘সোনার ডিম পাড়া হাঁস’কে ছেড়ে দিবে না ক্লাবটি।
মেসির দুর্দান্ত পারফরম্যান্স এবং মার্কেট ভেল্যুই ইন্টার মায়ামির ক্রীড়া বিভাগকে চুক্তি নবায়নের দিকে বাধ্য করেছে। ‘দ্য অ্যাথলেটিক’-এর সাংবাদিক ডেভিড অর্নস্টাইনের মতে, মেসির চুক্তি নবায়নের দ্বারপ্রান্তে ইন্টার মায়ামি। এই চুক্তি নবায়ন মায়ামির নতুন স্টেডিয়াম ‘মায়ামি ফ্রিডম পার্ক’-এর উদ্বোধনের সঙ্গেও মিল রেখে হতে পারে। যেখানে পরবর্তী মৌসুম থেকে ক্লাবটির ঘরোয়া ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। ‘লাস গারসাস’-এর প্রধান আকর্ষণ হিসেবে মেসির উপস্থিতি এই সময়ে অপরিহার্য বলে ধরা হচ্ছে।
আরো পড়ুন:
মেসি ম্যাজিকে সেমিফাইনালে মায়ামি
গোল করেও মায়ামিকে জেতাতে পারলেন না মেসি
এছাড়াও মায়ামিতে মেসির জন্য একটি আদর্শ পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এখানে তিনি তার সাবেক বার্সেলোনা সতীর্থ লুইস সুয়ারেজ, সার্জিও বুসকেটস এবং ইয়র্দো আলবার সঙ্গে খেলছেন। আর দলের কোচ হিসেবে আছেন তারই সাবেক সতীর্থ ও স্বদেশি, হাভিয়ের মাসচেরানো। এই ক্রীড়া প্রকল্পে মেসিই এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ গোলদাতা (৪২), সর্বোচ্চ অ্যাসিস্ট প্রদানকারী (২১)। তাছাড়া তিনি ক্লাবের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম জনপ্রিয় ক্রীড়া ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্বও ৭ বারের ব্যালন ডি-ওর জয়ী।
মেসির এই ধারাবাহিকতা পেছনে কারণও আছে। মায়ামিতে খেলার সুবাদে যুক্তরাষ্ট্র-মেক্সিকো-কানাডায় অনিষ্ঠিতব্য ২০২৬ বিশ্বকাপ প্রস্তুতিটা দারুণভাবেই সারছেন ৩৭ বছর বয়সী এই ফুটবলার। আর্জেন্টিনা ইতিমধ্যেই বিশ্বকাপে কোয়ালিফাই করে ফেলেছে। সবকিছু ঠিক থাকলে এটাই মেসির জাতীয় দলের হয়ে শেষ বড় টুর্নামেন্ট।
ইন্টার মায়ামির সভাপতি জর্জ মাসও সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এই বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, “তার (মেসির) ইচ্ছে হলো যুক্তরাষ্ট্রে বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনার হয়ে খেলা এবং শিরোপা রক্ষা করা, যা আমাদের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।” ২০২৪ সালের জুনে ‘ইএসপিএন আর্জেন্টিনা’-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসি নিজেও বলেছিলেন, “আমার মনে হয় ইন্টার মায়ামিই হবে আমার শেষ ক্লাব।”
ঢাকা/নাভিদ