সিলেটের মুরারিচাঁদ (এমসি) কলেজের ছাত্রাবাস-সংলগ্ন টিলায় বুধবার সন্ধ্যায় ইফতারের সময় হঠাৎ আগুন লাগে। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের দুটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে এক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

সিলেট ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সহকারী পরিচালক মো. ফারুক হোসেন সিকদার বলেন, এক ঘণ্টার প্রচেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। তবে কীভাবে আগুনের সূত্রপাত প্রাথমিকভাবে তা জানা যায়নি। আগুনে টিলার ঘাস পুড়ে গেছে।

একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, ধারণা করা হচ্ছে, বিড়ি বা সিগারেট খেয়ে কেউ টিলায় ফেলে রেখেছেন। এ থেকে আগুন লেগেছে। অগ্নিকাণ্ডে টিলার বেশ কিছু গাছ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় আধা কিলোমিটার জায়গার ঘাস ও গুল্ম পুড়ে গেছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

নীলফামারীতে পৃথক বিস্ফোরণে দুই বোন ও দুই শ্রমিক দগ্ধ

নীলফামারীতে দুটি গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরেণের ঘটনায় উত্তরা ইপিজেডের একটি কারখানায় ও ইপিজেডের পাশে একটি বাসায় পৃথক দুটি বিস্ফোরণের ঘটনায় দুই বোনসহ চার শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে ইপিজেডের সনিক কারখানায় (খেলনা তৈরির কারখানা) বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ওই কারখানার দুই শ্রমিক দগ্ধ হন। তাঁরা হলেন লিটন চন্দ্র রায় (২৫) ও দেলোয়ার হোসেন (২৮)।

উত্তরা ইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক আব্দুল জব্বার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মো. খুরশীদ আলম বলেন, সনিক নামের একটি কারখানা থেকে দগ্ধ অবস্থায় দুজনকে উদ্ধার করে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়।

বিস্ফোরণের পর ওই কারখানার শ্রমিকেরা বাইরে বের হয়ে বিভিন্ন দাবিতে বিক্ষোভ করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন শ্রমিক জানান, কারখানায় হঠাৎ করে কাজের চাপ বেড়ে গেছে। ২৪ ঘণ্টায় তিন পালায় শ্রমিকেরা কাজ করছেন। ফলে খেলনা তৈরির যন্ত্রগুলো বিশেষ করে ‘ডায়াস্টিক’ যন্ত্রটি বন্ধ করা হয় না। ধারণা করা হচ্ছে ওই যন্ত্র অতিরিক্ত গরম হয়ে বিস্ফোরিত হয়েছে। এ ঘটনার পর কাজ বন্ধ রেখেছেন শ্রমিকেরা।

শ্রমিকদের অভিযোগ, এর আগে ৬ এপ্রিল রাত আটটার দিকে ওই কারখানার ডায়াস্টিক যন্ত্র বিস্ফোরণের ঘটনায় রমজান আলী ও খায়রুল ইসলাম নামের দুই শ্রমিক দগ্ধ হয়েছিলেন। তাঁদের চিকিৎসার জন্য ঢাকার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ১০ এপ্রিল খায়রুল ইসলাম এবং ১২ এপ্রিল রমজান আলী মারা যান। এরপরও সনিক কারখানাটির কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি।

এ বিষয়ে কথা বলতে নীলফামারী উত্তরা ইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক মো. আখতারুজ্জামানের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
একই দিন সকাল ৬টার দিকে উত্তরা ইপিজেডসংলগ্ন এক ভাড়া বাসায় রান্না করার সময় গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ইপিজেডের একটি পোশাক কারখানার দুই নারী শ্রমিক দগ্ধ হন। সম্পর্কে তাঁরা আপন দুই বোন। দগ্ধরা হলেন সুইটি আক্তার (২০) ও তাজকিনা আক্তার (২৩)। তাঁরা জেলার ডোমার উপজেলার হরিণচড়া ইউনিয়নের সেওটগাড়ি গ্রামের বাবুল হোসেনের মেয়ে।

ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের উত্তরা ইপিজেড স্টেশনের একটি দল দগ্ধ দুই বোনকে উদ্ধার করে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পরে তাঁদের রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে স্থানান্তরিত করা হয়।

দুটি বিস্ফোরণের বিষয়ে নীলফামারী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এম আর সাঈদ প্রথম আলোকে বলেন, পৃথক দুই ঘটনায় দগ্ধ চার শ্রমিককে প্রথমে নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে চিকিৎসকের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য চারজনকেই রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। এ ছাড়া কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনার পর উত্তেজিত শ্রমিকেরা কারখানার সামনে আহতদের ক্ষতিপূরণসহ বিভিন্ন দাবিতে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেছেন। পরে পুলিশ, র‍্যাব ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ