মাদ্রাসা থেকে পালানোর অপরাধে শিশুকে অমানবিক নির্যাতন বাবা-মায়ের
Published: 5th, March 2025 GMT
মাদ্রাসা থেকে পালানোর অপরাধে মা আসমা বেগম গরম খুন্তি দিয়ে ছ্যাকা দিয়েছেন, বাবা কামরুজ্জামান সিকদার গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করেছেন ৯ বছরের শিশুকে। ঘটনা বরগুনার তালতলীর সওদাগরপাড়া গ্রামে। নির্যাতনের শিকার ওই শিশুর নাম লামিয়া।
বুধবার (৫ মার্চ) বিকালে এই ঘটনা ঘটে। লামিয়া তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে ছালমা শিশুটির চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন।
প্রতিবেশীরা জানান, উপজেলার সওদাগরপাড়া গ্রামের কামরুজ্জামান সিকদারের শিশু কন্যা লামিয়া তালতলী শহরের আয়শা সিদ্দিকা মাদ্রাসায় চতুর্থ শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। বুধবার সকালে শিশু লামিয়া মাদ্রাসার শিক্ষকদের না বলে বাড়ি চলে যায়। ওই দিন দুপুরে শিক্ষকরা মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যাওয়ার কথা তার বাবা কামরুজ্জামানকে জানায়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বাবা কামরুজ্জামান শিশু কন্যাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে বেধড়ক মারধর করে।
শিশুটির অভিযোগ মা আসমা বেগম তাকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছেন। বাবা গাছের সঙ্গে বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন। এতে শিশুটির শরীর ঝলসে গেছে এবং বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়েছে।
শিশু কন্যার ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে রক্ষা করে। এসময় তারা শিশুটিকে উদ্ধার করে তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়।
এদিকে তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা শিশুটির চিকিৎসাসহ লেখাপড়ার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন। একই সঙ্গে তালতলী থানার ওসিকে বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে শিশু নির্যাতন দমন আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মা আসমা বেগম বলেন, “আমার স্বামী প্রায়ই মেয়েকে মারধর করে। আজকে মারধর শুরু করলে আমি ক্ষুব্ধ হয়ে খুন্তির ছ্যাঁকা দিয়েছি। এটা আমার অন্যায় হয়েছে। আমি বুঝতে পারিনি এমন অবস্থা হবে।”
তালতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা.
তালতলী থানার ওসি মো. শাহজালাল বলেন, “উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নির্দেশ মতে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।”
তালতলী উপজেলা নির্বাহী অফিসার উম্মে সালমা বলেন, “শিশুটির চিকিৎসাসহ যাবতীয় খরচের দায়িত্ব নিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।”
তিনি আরো বলেন, “শিশু নির্যাতন দমন আইনে শিশুটির বাবা ও মায়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে ওসিকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অফ স র ম রধর ত লতল উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
কাগজ আমদানিতে ৫ শতাংশ কর কমানোর দাবি
প্রকাশনা, মোড়কজাত ও ওষুধ শিল্পের প্রধান কাঁচামাল পেপার ও পেপার বোর্ড আমদানিতে প্লাস্টিক শিল্পের অনুরূপ শুল্ক কর (সিডি) ৫ শতাংশ বা তার ও কম করার দাবি জানিয়েছে এ খাতের চারটি সংগঠন। তারা বলছে, এতে ব্যবসায় শৃঙ্খলা ফিরবে, কর ফাঁকি ও দুর্নীতি কমবে। ফলে রোধে শুল্ক হার কমালে রাজস্ব আয় বাড়বে।
রোববার জাতীয় প্রেস ক্লাবে এ খাতের চার সংগঠন যৌভাবে সংবাদ সম্মেলন করে এ দাবি জানিয়েছে। সংগঠনগুলো হলো- বাংলাদেশ পেপার ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিপিআইএ), বাংলাদেশ পেপার মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (বিপিএমএ), মেট্রোপলিটন প্রেস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এবং চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপ।
এতে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন বিপিআইএর সভাপতি শফিকুল ইসলাম ভরসা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল, বিপিআইএর সহ সভাপতি খোরশেদ আলম, বিপিএমএর সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল আজিম প্রমুখ।
শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, ব্যক্তিগত বা কোম্পানি আয়করের ওপর অডিট আপত্তির বিপরীতে আপিল ট্রাইবুনালে আপিল দায়ের করতে হলে আপত্তিকৃত মোট টাকার ওপর ১০ শতাংশ সরকারি কোষাগারে জমা করার বিধান রয়েছে। উচ্চ আদালতে আপিল দায়ের করার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ অর্থ জমা দিতে হয়। এছাড়া ভ্যাট কমিশনারের দাবি করা মূসকের বিপরীতে ট্রাইব্যুনালে আপিল দায়ের করতে গেলে বিধিবদ্ধ জমা ১০ শতাংশ ও উচ্চ আদালতে আয়কর রেফারেন্সের ক্ষেত্রে ১০ শতাংশ করে জমা দিতে হয়।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম কাগজ ও সেলোফিন ব্যবসায়ী গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ বেলাল সমকালকে বলেন, কিছু অসাধু কর্মকর্তা অনৈতিক সুবিধা আদায়ের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃতভাবে আয়করের ওপর অযাচিত অডিট আপত্তি দিয়ে থাকেন। মূলত ব্যবসায়ীদের হয়রানি করতে এটাকে মূল অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করেন এনবিআরের কর্মকর্তারা।
ব্যবসায়ীদের হয়রানি থেকে মুক্তি দেওয়ার অনুরোধ করে এনবিআরের উদ্দেশে তিনি বলেন, এসব ক্ষেত্রে ৫ শতাংশ করে অর্থ জমা দেওয়ার বিধান চালু করলে অসাধু কর্মকর্তাদের দৌরাত্ম্য কিছুটা কমে আসবে। একই সঙ্গে ব্যবসায়ীরাও উপকৃত হবে।
লিখিত বক্তব্যে শফিকুল ইসলাম ভরসা বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ গত ২০ ফেব্রুয়ারি একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে চট্টগ্রাম বন্দর অভ্যন্তরে এবং কমলাপুর আইসিডিতে আমদানি করা এফসিএল কন্টেইনারের কমন ল্যান্ডিং ডেট এর অষ্টম দিন থেকে প্রযোজ্য স্ল্যাবের চারগুণ হারে স্টোর রেন্ট আরোপ করেছে। ঈদের ছুটির দুই-এক দিন আগে থেকে আসা কনটেইনার এবং ঈদের ছুটির মধ্যে বন্দরে আসা কনটেইনার নির্ধারিত ৪ দিনের মধ্যে খালাস করা সম্ভব ছিল না। এ ছাড়াও বন্দর বা আইসিডি থেকে মালামাল খালাসে বন্দর কর্তৃপক্ষ ছাড়াও আরও অন্যান্য এজেন্সির সম্পৃক্ততা থাকে এবং এসব ডকুমেন্টেশন প্রসেসিংয়ে অনেক সময় লেগে যায়।
আমদানিকারকদের ওপর এরূপ অযৌক্তিক উচ্চহারে স্টোররেন্ট আরোপের ফলে শিল্প উৎপাদন বা অভ্যন্তরীণ ব্যবহার উভয় ক্ষেত্রে পণ্যের মূল্য বেড়ে যাবে। এতে ব্যবসায়ীরা অপূরণীয় ক্ষতির সম্মুখীন হবেন। এমতাবস্থায় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃক স্টোর রেন্ট আরোপের সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানান তিনি।
এ সময় ব্যবসায়ীরা বাণিজ্যিকভাবে আমদানি করা ডুপ্লেক্স বোর্ড ও আর্টকার্ডের মূল্য বিশ্ববাজারে কমে যাওয়ায় প্রকৃত বিনিময় মূল্যে শুল্কায়নের অনুরোধ জানান।