যেকোনো ধরনের বিপদ-আপদ সামনে এলে বলা হয় ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’। বিশ্বাসীরা কেবল মুখে বলা নয়; বরং মনে মনে এ কথা স্বীকার করে নেওয়া যে আল্লাহর কর্তৃত্বাধীন। আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব—এর অর্থ হচ্ছে, চিরকাল এ দুনিয়ায় থাকা যাবে না। একদিন আল্লাহরই কাছে যেতে হবেই।

‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন’ অর্থ সুরা বাকারার ১৫৬ নম্বর আয়াতটি কোরআন শরিফের প্রসিদ্ধ আয়াত। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। অর্থ (তারাই ধৈর্যশীল) যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে আমরা তো আল্লাহরই আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব। কারও মৃত্যুর সংবাদ শুনলে পড়েন। অনেকে মনে করেন, মানুষের মৃত্যুসংবাদ পেলে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়তে হয়। বরং ইন্না লিল্লাহ পড়ার অনেক কারণ ও গুরুত্বপূর্ণ ফজিলত রয়েছে। এই পবিত্র বাক্য আল্লাহকে স্মরণ রাখার বড় উপায়।

আরও পড়ুন যেকোনো সময় এই দোয়া করা যায়১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

আল্লাহ বলেন, নিশ্চয় আমি তোমাদেরকে (কাউকে) ভয় ও ক্ষুধা দিয়ে, আর (কাউকে) ধনে–প্রাণে বা ফল–ফসলের ক্ষয়ক্ষতি দিয়ে পরীক্ষা করব। আর যারা ধৈর্য ধরে, তাদের তুমি সুখবর দাও। (তারাই ধৈর্যশীল) যারা তাদের ওপর কোনো বিপদ এলে বলে, [ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন] ‘আমরা তো আল্লাহর আর নিশ্চিতভাবে আমরা তাঁরই দিকে ফিরে যাব।’ এসব লোকের প্রতি তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে আশীর্বাদ ও দয়া বর্ষিত হয়, আর এরাই সৎ পথপ্রাপ্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত: ১৫৫-১৫৭) এ তিনটি আয়াতে বিষয়টি সুস্পষ্ট। কারা ইন্না লিল্লাহ পড়বেন, কোনো পরিস্থিতিতে পড়বেন এবং পড়লে কী উপকার।

বিশ্বাসীরা বিপদে পড়লে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পাঠ করেন। কেউ বিপদে পড়লে যেন এ দোয়াটি পাঠ করে। একাধারে যেমন সওয়াব পাওয়া যায়, তেমনি অর্থের প্রতি লক্ষ রেখে পাঠ করা হয়, তবে বিপদের মধ্যেও শান্তি লাভ করবে বিপদ থেকে উত্তরণও সহজ হয়ে যায়। 

কোনো বিপদে বান্দার মুখে উচ্চারিত হয় এই দুটি বাক্য—এর অর্থ আল্লাহর ফয়সালা সর্বান্তঃকরণে মেনে নিচ্ছি। আর আখিরাতে বিশ্বাস করি, তাই এ বিপদে সবরের বিনিময় তাঁর কাছে প্রত্যাশা করছি। দুটি বাক্যে ইমানের মৌলিক সাক্ষ্য দেওয়া হয়। তাই এর ফজিলতও অনেক। 

আরও পড়ুনতওবা করলে আল্লাহ খুশি হন ২৪ ডিসেম্বর ২০২৩

বিপদের সময় বলতে হবে উম্মে সালামা (রা.

)–এর বরাতে হাদিস থেকে জানা যায়। তিনি বলেন, আমি রাসুল (সা.)–কে বলতে শুনেছি, কোনো মুসলিমের ওপর বিপদ এলে যদি সে বলে, আল্লাহ যা হুকুম করেছেন—ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন (অর্থাৎ আমরা আল্লাহরই জন্য এবং তারই কাছে ফিরে যাব) বলে এবং এই দোয়া পড়ে, আল্লাহুম্মা আজিরনি ফি মুসিবাতি ওয়া আখলিফলি খাইরাম মিনহা ইল্লা আখলাফাল্ল হুলাহ খয়রাম মিনহা (অর্থাৎ হে আল্লাহ! আমাকে আমার মুসিবতে সওয়াব দান করো এবং এর বিনিময়ে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করো, তবে মহান আল্লাহ তাকে এর চেয়ে উত্তম বস্তু দান করে থাকেন।) উম্মে সালামা (রা.) আরও বলেন, আবু সালামা যখন ইন্তেকাল করেন, আমি মনে মনে ভাবলাম, আবু সালামা থেকে উত্তম মুসলিম আর পাব না। এরপর আমি দোয়া পড়লাম। এরপর মহান আল্লাহ আবু সালামার স্থলে রাসুল (সা.)–এর মতো স্বামী দান করেছেন। উম্মে সালামা (রা.) বলেন, আমার কাছে রাসুল (সা.) বিয়ের পয়গাম দেওয়ার জন্য হাতিব ইবনে আবু বালতা (রা.)–কে পাঠালেন। আমি বললাম, আমার একটা মেয়ে আছে আর আমার জিদ বেশি। তখন রাসুল (সা.) বললেন, তার মেয়ে সম্পর্কে আমি আল্লাহর কাছে দোয়া করব, যাতে তিনি তাকে তার মেয়ের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেন। আর (তার সম্পর্কে) দোয়া করব যেন আল্লাহ তার জিদ দূর করে দেন। (মুসলিম: ৯১৮)

আরও পড়ুনপরিবারের জন্য অভিভাবক দোয়া করবেন০৭ মার্চ ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন আল ল হ দ ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

চাঁদপুরে দই মানেই নাছিরের দই

চাঁদপুরে দই মানেই যেনো চাঁদপুরের মতলব উত্তরের নন্দলালপুরের নাছিরের তৈরিকৃত মিষ্টি দই। যেমনি স্বাদ তেমনি পুষ্টিসমৃদ্ধ এই দই, দাবী এখানকার দই প্রেমীদের। আর এজন্যই প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত নাছিরের দোকানে দই প্রেমীদের ভিড় লেগেই থাকে।

মঙ্গলবার (৪ মার্চ) রমজানকে ঘিরে নন্দলালপুরের নাসির দই ভাণ্ডারে গিয়ে বেচাবিক্রিতে ব্যস্ততা দেখা যায়।

মিজান নামের এক ক্রেতা বলেন, অন্যান্য স্থানের দইয়ের চেয়ে নাসিরের তৈরিকৃত দই পুষ্টিসমৃদ্ধ। কারণ, সে এখানকার গরুর খাঁটি দুধ দিয়ে নির্ভেজালভাবে দই তৈরি করে। আর দামও অন্যান্য স্থানের চেয়ে কম। তাই আমরা সময় সুযোগে দইয়ের প্রয়োজন হলেই এখানে দই কিনতে চলে আসি।

স্থানীয়রা জানান, এখানে এক সময় নাছির উদ্দিন (৩৮) তার বাবা মো. আবুল হোসেনের সাথে দোকানে বসত। এরপর বাবার দেখাদেখি ছোটবেলা থেকেই সে দই তৈরি ও বিক্রিতে পারদর্শী হয়ে উঠে। এরপর থেকে তার দইয়ের সুনাম স্থানীয় বাজারসহ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়তে থাকলে সে এই ব্যবসাতেই সফলতা খুঁজতে থাকে। বর্তমানে বাজারে সে একটি সেমিপাকা ঘর ভাড়া নিয়ে দই বিক্রি করছেন। যেখানে দোকানটি আকারে ছোট হলেও ক্রেতাদের আনাগোনায় সবসময়ই প্রাণচাঞ্চল্যে ভরপুর থাকে।

নাসির উদ্দিন বলেন, “বাবার হাত ধরে ২০০৪ সালে মাত্র ২০ হাজার টাকা নিয়ে নেমে ২১ বছরের বেশি সময় যাবৎ চলছে আমার এই ব্যবসা। অভাব অনটনে নবম শ্রেণির বেশি পড়ালেখা করতে না পারিনি। তবে দই ব্যবসায় মানুষের আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছি। মানুষজন দূরদূরান্ত থেকে এখানে এসে দই খেয়ে তৃপ্তি পান। যখন ভালো বলেন তখন মানসিক শান্তি পাই। আমি গ্রাম থেকে গরুর খাঁটি দুধ সংগ্রহ করে চিনি ও দুধের অনুপাত ঠিক রেখে চাহিদানুযায়ী গ্যাসের চুলায় বাড়িতে এবং কখনো দোকানেই দই তৈরি করে বিক্রি করছি। যে কেউ চাইলে আগাম অর্ডারও করতে পারেন এই দই।”

নাসির উদ্দিন আরও বলেন, “দুধের দাম বেশি হওয়ায় এখন খরচ পোষাতে এক গ্লাস দই ৩০ টাকা এবং কেজি প্রতি দই ২০০ টাকা দামে বিক্রি করছি। আমার তৈরিকৃত মিষ্টি দই বিক্রির জন্য কাচের ও প্লাস্টিকের গ্লাসে এবং পাতিলে করে সংরক্ষণে রাখি। প্রতিদিন গড়ে ৭০ থেকে ৮০ গ্লাস দই বিক্রি করছি। এছাড়াও পাতিলে করে প্রতিদিন দই বিক্রি হয় গড়ে ১৫ থেকে ২০ কেজি। এই ব্যবসা করেই আমার ২ মেয়ে ও ১ ছেলের পড়ালেখার খরচসহ স্ত্রী ও বাবা মাকে নিয়ে সুখে শান্তিতে সংসার করছি। তবে প্রশাসনিক বা কোন সংস্থা বা কারো কোন সহায়তা পেলে এই ব্যবসাটিকে আরও নান্দনিকভাবে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব হতো।”

ঢাকা/অমরেশ/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি গাড়ি ভাঙচুর, ৮০০ শ্রমিকের বিরুদ্ধে মামলা
  • ডিজেএডির সভাপতি মিজানুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন চিস্তি 
  • ফোনে পরিচয়-প্রেম, বিয়ের আশ্বাসে নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ
  • কাঠগড়ায় যেমন ছিলেন কামাল আহমেদ মজুমদার 
  • জনপ্রিয় প্লেব্যাক গায়িকার আত্মহত্যার চেষ্টা
  • উপদেষ্টা হিসেবে শপথ নিলেন সি আর আবরার
  • উপদেষ্টা পরিষদের নতুন সদস্য হিসেবে শপথ নিলেন সি আর আবরার
  • মার্কিন অস্ত্রসহায়তা স্থগিত, বিপদে ইউক্রেন
  • চাঁদপুরে দই মানেই নাছিরের দই