প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়লে জরায়ুমুখ ক্যানসার থেকে পুরোপুরি সেরে ওঠা সম্ভব। প্রাথমিক অবস্থায় যেসব উপসর্গ থাকে, সেসব জানা থাকলে একজন নারী দ্রুততম সময়ে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে পারেন। ফলে বহু অনাকাঙ্ক্ষিত এবং দুর্বিষহ জটিলতা থেকে বেঁচে যেতে পারেন তিনি। জেনে নিন এমন কিছু লক্ষণ। বাড়ির বয়োজ্যেষ্ঠ নারীদেরও এ সম্পর্কে সচেতন করে তুলুন।

অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ

দুবার মাসিকের মাঝের সময়টায় রক্তক্ষরণ হওয়া অস্বাভাবিক। স্বাভাবিকভাবেই নারীর মাসিক চক্রের সময়টা একেবারে নির্দিষ্ট থাকে না। দু-তিন দিন এদিক-ওদিক হতেই পারে। কিন্তু এ রকম দুটি চক্রের মাঝের কোনো সময় রক্তক্ষরণ হলে সেটিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করতে হবে। মেনোপজের পর যেকোনো সময় রক্তক্ষরণ হওয়াটাও অস্বাভাবিক।

অস্বাভাবিক স্রাব

জরায়ুমুখ থেকে অস্বাভাবিক স্রাব নিঃসরণ হওয়াও হতে পারে ক্যানসারের লক্ষণ। এই ক্যানসারে গোলাপি, লালচে, বাদামি কিংবা মলিন বর্ণের স্রাব দেখা দিতে পারে। বিশেষত মেনোপজের পর এ ধরনের স্রাব দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।

আরও পড়ুনবিয়ের আগেই কেন মেয়েদের জরায়ুমুখের ক্যানসারের টিকা নিতে হবে২৪ জানুয়ারি ২০২৫

অস্বাভাবিক ব্যথা

জরায়ুমুখের ক্যানসারের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক কোমরব্যথা হতে পারে। কোমর টেনে ধরে রাখার মতো একটা কষ্টদায়ক অনুভূতিতে ভুগতে পারেন ক্যানসার আক্রান্ত নারী। তা ছাড়া জরায়ুমুখের আশপাশেও ব্যথা হতে পারে।

যৌনমিলনের সময় অস্বাভাবিকতা

যৌনমিলনে অভ্যস্ত একজন নারী যৌনমিলনের সময় অস্বাভাবিক ব্যথা অনুভব করলে সেটিকে একটি অস্বাভাবিক বিষয় হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। তা ছাড়া জরায়ুমুখ ক্যানসারে আক্রান্ত নারীর যৌনমিলনের পরে রক্তক্ষরণও হতে পারে।

অস্বাভাবিক ক্লান্তি

অন্যান্য উপসর্গের পাশাপাশি ক্যানসার আক্রান্ত একজন নারীর অস্বাভাবিক ক্লান্তিও দেখা দিতে পারে। তাই অল্প পরিশ্রমেই প্রচণ্ড ক্লান্তি অনুভব করার মতো উপসর্গকেও অবহেলা করার সুযোগ নেই।

আরও পড়ুনবাংলাদেশে যেসব ক্যানসার এখন বেশি হয়০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

যে দুটি বিষয় মনে রাখতেই হবে

এসব লক্ষণের যেকোনোটি দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। আতঙ্কিত হবেন না। এসব উপসর্গ কিন্তু ক্যানসার ছাড়াও অন্যান্য বহু কারণে দেখা দিতে পারে। কারণ খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী ব্যবস্থাপত্র দেবেন চিকিৎসক।

জরায়ুমুখ ক্যানসার আক্রান্ত বহু নারীর কিন্তু প্রাথমিক অবস্থায় কোনো লক্ষণই থাকে না। তাই সবচেয়ে জরুরি বিষয় স্ক্রিনিং। এটি আপাতদৃষ্টে সুস্থ ব্যক্তির দেহে ক্যানসারের উপস্থিতি খোঁজার প্রক্রিয়া। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নির্দেশনা অনুযায়ী, ৩০ বছর বয়স থেকেই একজন নারীর জরায়ুমুখ ক্যানসার স্ক্রিনিং শুরু করা প্রয়োজন। কেবল এর মাধ্যমেই জরায়ুমুখ ক্যানসারের জটিলতা থেকে অধিকাংশ রোগীকে বাঁচানো সম্ভব। তাই প্রতিটি পরিবারে এ বিষয়ক সচেতনতা গড়ে তোলা আবশ্যক।

সূত্র: ওয়েব এমডি

আরও পড়ুন‘ক্যানসার ধরা পড়েছে, কিন্তু রোগী কে?’ চিকিৎসকের কথা শুনে হতভম্ব আমি যা করলাম০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক র একজন ন র উপসর গ র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

‘এবং বই’ বুক রিভিউ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত

বইবিষয়ক পত্রিকা ‘এবং বই’-এর আয়োজনে বুক রিভিউ প্রতিযোগিতা ২০২৫ এর পুরস্কার বিতরণ ও আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের সেমিনার কক্ষে এ আয়োজন সম্পন্ন হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাংলা একাডেমির সভাপতি ও রাষ্ট্রচিন্তক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ, কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াসমিন ও সাংবাদিক, গবেষক ড. কাজল রশীদ শাহীন। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং বই সম্পাদক ও প্রকাশক ফয়সাল আহমেদ।

এই প্রতিযোগিতায় নির্ধারিত ছিল বরেণ্য কথাসাহিত্যিক ও গবেষক আবদুর রউফ চৌধুরীর ‘রবীন্দ্রনাথ: চির-নূতনেরে দিল ডাক’, ও ‘নজরুল : সৃজনের অন্দরমহল’ নামের দুটো বই।

রিভিউয়ে অংশ নেওয়া সেরা দশজন বিজয়ীর হাতে প্রায় ৬০ হাজার টাকার পুরস্কার তুলে দেন অথিতিবৃন্দ। এর মধ্যে ছিল প্রথম পুরস্কার দুটি ১০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় পুরস্কার দুটি ৫ হাজার টাকা ও তৃতীয় পুরস্কার দুটি ৩ হাজার টাকা করে। এ ছাড়াও নির্বাচিত সেরা ৪ জনকে ২ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়। নগদ অর্থমূল্যের সঙ্গে প্রথ্যেককে এক হাজার টাকা করে সমমূল্যের বই ও উত্তরীয় প্রদান করা হয়।

অয়োজনের বিজয়ীরা হলেন, ‘রবীন্দ্রনাথ: চির-নূতনেরে দিল ডাক’ গ্রন্থে সুমন মজুমদার (প্রথম), পলাশ মজুমদার (দ্বিতীয়), কবীর আলমগীর (তৃতীয়), ইলিয়াস বাবর (বিশেষ) ও সিদ্দিকী হারুন (বিশেষ)। ‘নজরুল : সৃজনের অন্দরমহল’ গ্রন্থে নার্গিস সুলতানা (প্রথম), জাকিয়া সুলতানা (দ্বিতীয়), শাহাদাত মাহমুদ সিদ্দিকী (তৃতীয়), রাকিবুল রকি (বিশেষ) ও জোবায়ের মিলন (বিশেষ)।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অধ্যাপক আবুল কাশেম ফজলুল হক বলেন, এবং বই বইয়ের সমালোচনা প্রকাশ করছে এটা ভালো উদ্যোগ। যারা সমালোচনা লিখেন তাদের মনে রাখতে হবে এই ভাষায় বিদ্যাসাগর লিখেছেন, বঙ্কিমচন্দ্র, রবীন্দ্রনাথ, শরৎচন্দ্র লিখেছেন, বেগম রোকেয়া, এস ওয়াজেদ আলী লিখেছেন। তাদেরই উত্তরাধীকারী আমরা। এই অবস্থা থেকে আমরা নিচে নেমে গেছি। আমাদেরকে ওপড়ে ওঠতে হবে। যারা সমালোচনা লিখবেন তারা তাদের নিজের মত অনুযায়ীই লিখবেন, কিন্তু অন্যদের মত বিবেচনায় রাখবেন।

লেখক ও গবেষক আলতাফ পারভেজ বলেন, এখন যদি একটি সার্ভে হয় যে রবীন্দ্রনাথ-নজরুলের বই পড়েছি কিনা? প্রতি একশো জনে একজন পাওয়া যাবে। যদি বলি টলস্টয় পড়েছি কিনা? হয়তো এক হাজার জনে একজন পাওয়া যাবে। তরুণদের কথা বাদই দিলাম, আমি বয়স্কদের সঙ্গে আলাপ করে দেখেছি এই সময়ে প্রধান আলোচ্য বিষয় হচ্ছে, ইট-বালু-সিমেন্ট-কাঠ। এখানে বই, সিনেমা, গান, ছবির প্রদর্শনী কী হচ্ছে এসব নিয়ে কনসার্ন নেই।

কিশোরগঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নায়লা ইয়াসমিন বলেন, যখন আমরা ক্রমশ বই থেকে দূরে সড়ে যাচ্ছি, ছোট্ট ছোট্ট লেখা পড়ছি, রিলস্ দেখে সময় কাটাচ্ছি। যেখানে চিন্তার জগৎটাই ছোট হয়ে আসছে। এমন একটা সময়ে এই আয়োজন করে এবং বই অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এবং বইকে ধন্যবাদ জানাই।

সাংবাদিক, গবেষক ড. কাজল রশীদ শাহীন বলেন, প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত দুটো বই-ই গবেষণামূলক। যার একটি কাজী নজরুল ও অপরটি রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে। আমরা সাধারণত দেখি একজন লেখক যে কোনো একটি বিষয়কে নিয়েই গবেষণা করেন, কিন্তু এখানে ব্যতিক্রম লেখক আবদুর রউফ চৌধুরী। যিনি নজরুল এবং রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে দুটো বড়ো ধরণের গবেষণা গ্রন্থ রচনা করেছেন। প্রচলিত ধারার প্রতিষ্ঠানিক গবেষণা থেকে বেরিয়ে এসে লেখক একটি নিজস্ব ও সতন্ত্র ধারায় বই দুটি লিখেছেন। এবং বই বুক রিভিউর জন্য এই বই দুটিকে নির্বাচন করে একটি মাইলফলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

এবং বই সম্পাদক ও প্রকাশক ফয়সাল আহমেদ বলেন, প্রথমবারের মতো এবং বই এই আয়োজন করেছে, ভুল- ত্রুটি থাকা অস্বাভাবিক কিছু নয়। এটি একটি কঠিন কাজ ছিল। প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ও উপস্থিত সুধীজন সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি। বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান লেখক আবদুর রউফ চৌধুরীর পুত্র ড. মুকিদ চৌধুরীকে এই আয়োজনে এবং বই এর পাশে থাকার জন্য।

পুরস্কার জয়ী নার্গিস সুলতানা প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি এবং আমার মেয়ে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেছি। মেয়ের উৎসাহেই মুলত আমার বুক রিভিউ লেখা। সুন্দর আয়োজনের জন্য এবং বইকে ধন্যবাদ জানাই।

অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে কথাশিল্পী মনি হায়দার, মুক্তিযুদ্ধ গবেষক সত্যজিৎ রায় মজুমদার, প্রকাশক হাসান তারেক, ঔপন্যাসিক মাসউদ আহমাদ, শামস সাইদ, ভ্রমণ লেখক গাজী মনসুর আজিজ ও কবি মাজহার সরকার, এবং বুক রিভিউ প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া পুরস্কারপ্রাপ্তরা উপস্থিত ছিলেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তরুণকে বাঁচাতে গিয়ে গুলিতে নিহত যুবদল কর্মী
  • ৯ জেলায় বজ্রপাতে ১৫ জনের মৃত্যু
  • ৭ জেলায় বজ্রপাতে ১৩ জনের মৃত্যু
  • ৬ জেলায় বজ্রপাতে ১২ জনের মৃত্যু
  • ভারতে পুলিশ বাহিনীর সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্যের ওপর হামলা
  • আর্নে স্লট: কিংবদন্তির জায়গা নিলেন এবং নিজেই কিংবদন্তি হয়ে গেলেন
  • পেহেলগামের ঘটনায় একের পর এক বাড়ি ধ্বংস, সরকারকে সতর্ক করল কাশ্মীরের দলগুলো
  • কণ্ঠস্বরকে সুস্থ রাখতে চাই সচেতনতা
  • গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুনে পাঁচজন দগ্ধ
  • ‘এবং বই’ বুক রিভিউ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠিত