জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীদের খাবারের গুণগত মান বাড়াতে বরাদ্দ বাড়িয়েছে সরকার। জনপ্রতি বরাদ্দ বেড়ে ২৫০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। আগে এই বরাদ্দ ছিল ১৭৫ টাকা।

আজ বুধবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি অর্থ বিভাগে বরাদ্দ বাড়ানোর জন্য পাঠানো চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে দেশের সব সরকারি হাসপাতালে নির্দেশনা পাঠিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি অতিরিক্ত বরাদ্দ চেয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। গত ২ মার্চ বরাদ্দ বাড়ানোর একটি চিঠি ইস্যু করা হয়। তাতে সই করেছেন মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মো.

শাহাদাত হোসেন কবির।

মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা নির্দেশনায় বলা হয়, জুলাই-আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ও ভর্তি হওয়া রোগীদের খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধির লক্ষ্যে তাদের পথ্য (রোগীর খাবার) বাবদ জনপ্রতি বর্তমান বরাদ্দ ১৭৫ টাকার পরিবর্তে ২৫০ টাকায় উন্নীত করার বিষয়ে অর্থ বিভাগ থেকে সম্মতি পাওয়া গেছে।

তবে শর্ত হচ্ছে, এ বিষয়ে আবশ্যিক সব বিধিবিধান ও আর্থিক নিয়মাবলি যথাযথভাবে পালন করতে হবে। প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় থেকে সরকারি আদেশ (জিও) জারির তারিখ থেকে এটি কার্যকর হবে। রোগীপ্রতি দৈনিক ২৫০ টাকা বরাদ্দ অন্য কোনো ক্ষেত্রে নজির হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না এবং রোগীপ্রতি দৈনিক ২৫০ টাকা বরাদ্দ আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় চিঠিতে জানায়, অর্থ বিভাগের সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে উল্লিখিত শর্তাবলি যথাযথ অনুসরণপূর্বক পরবর্তী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।

প্রসঙ্গত, ২০২২ সালে সরকার এক পরিপত্র জারি করে রোগীদের খাবারের বরাদ্দ ১২৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৭৫ টাকা করে। এই টাকায় রোগীদের তিন বেলা খাবার দেওয়া হয়। অর্থ বিভাগের চিঠিতে এই বরাদ্দ শুধু জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে আহত ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রোগীর জন্য স্বাস্থ্য বিভাগের প্রস্তাব ও বাজার দর বিবেচনায় বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আহত জ ল ই গণহত য বর দ দ ব ড় ২৫০ ট ক র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কোটা চালু করা হয়েছে: বিন ইয়ামিন

রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটার অবতারণা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা।

তিনি বলেছেন, “বর্তমান পরিস্থিতিতে মানুষের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়া, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে না পারা, জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা প্রকাশ করতে না পারা, আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত না করাসহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নানামুখী ব্যর্থতা রয়েছে। এ ব্যর্থতা ঢাকতে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটার অবতারণা করা হয়েছে।”

সোমবার (৩ মার্চ) দুপুর সোয়া ২টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদেরও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা প্রদানের বিরোধিতা করে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

আরো পড়ুন:

আ.লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে গণঅবস্থানের ১৮ দিন

নাগরিক পার্টির যুগ্ম-আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রদল নেতা

এ সময় নেতাকর্মীরা- ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’, ‘আমার সোনার বাংলায়, বৈষম্যের ঠাই নাই’, ‘২৪ এর বাংলায়, কোটার ঠাই নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে থাকেন। 

বিন ইয়ামিন মোল্লা বলেন, “আমরা মনে করি এ কোটা প্রথা চালুর পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে। বর্তমান সরকার রাষ্ট্র সংস্কার, আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ, শহীদ ও আহতদের পরিবারকে পুনর্বাসন করা, আহতদের চিকিৎসা নিশ্চিত করা, দেশের প্রতিটি সেক্টরকে স্বৈরাচার মুক্ত করাসহ সব বিষয়ে ব্যর্থ হয়েছে। এ সরকার দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি রোধ করতে পারেনি। মানুষের এখন নিরাপত্তা নেই। এ পরিস্থিতিতে তাদের ব্যর্থতা ধামাচাপা দিতে কোটার অবতারণা করেছে।”

তিনি বলেন, “আমরা ২০১৮ সাল থেকে সারাদেশে কোটার বিরুদ্ধে আন্দোলন করে আসছি। যার ধারাবাহিকতায় শেখ হাসিনার পতন হয়েছে। আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের পোষ্য কোটার বিলুপ্তির দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে বর্তমান সরকার আবারো বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কোটা পুনর্বহাল করছে। আমরা চাই এ কোটা প্রথা বাতিল করা হোক। অন্যথায় ছাত্র অধিকার পরিষদ তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলবে।”

ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি আহ্বায়ক সানাউল্লাহ হক বলেন, “যে কোটার কারণে শেখ হাসিনার পতন হয়েছে, আমরা চাই না কোটার কারণে বর্তমান সরকারের অধঃপতন না হয়। শেখ হাসিনা যে খেলায় ব্যর্থ হয়েছে, আমরা চাই না আপনারা আবার সে খেলায় ব্যর্থ হন। আপনারা মানুষের প্রত্যাশা অনুযায়ী রাষ্ট্র সংস্কার ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার কাজে মনোযোগ দিন। মানুষের আশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়ন করতে ও নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে আপনারা সবাইকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করুন।

সংবাদ সম্মেলনে ছাত্র অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব রাকিবুল হাসান প্রমুখ বক্তব্য দেন।

সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক অফিসে আদেশে বলা হয়েছে, শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তানদের পাশাপাশি জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদেরও সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য ৫ শতাংশ কোটা রাখা হয়েছে। তবে মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের পুত্র-কন্যা এবং জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদ পরিবারের সদস্যদের পাওয়া না গেলে মেধা তালিকা থেকে এই আসনে ভর্তি করতে হবে। কোনে অবস্থায় আসন শূন্য রাখা যাবে না।

ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আশুলিয়ায় পোশাক কারখানায় আগুন, আহত ৫
  • ’২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের ইতিহাস মুছে যেতে দেবে না জামায়াত: শফিকুর রহমান
  • রাজনৈতিক উদ্দেশ্য কোটা চালু করা হয়েছে: বিন ইয়ামিন