প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ আর্থিক সেবা ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্স বীর’
Published: 5th, March 2025 GMT
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি বাংলাদেশ ফাইন্যান্স প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য বিশেষ আর্থিক সেবা প্ল্যাটফর্ম ‘বাংলাদেশ ফাইন্যান্স বীর’ চালু করেছে। এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে গ্রাহকরা পাবেন বিশেষ সঞ্চয় ও বিনিয়োগ সুবিধা, যা কনভেনশনাল ও শরিয়াহ ভিত্তিক উভয় মডেলে গ্রহণ করা যাবে।
এছাড় গ্রাহক ও তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য হোম লোন, এসএমই লোন, নারী উদ্যোক্তা ঋণ ও কৃষি ঋণ গ্রহণের সুযোগ থাকবে। বুধবার ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলনে এই প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো.
বাংলাদেশ ফাইন্যান্স বীর-এর বিশেষ সুবিধার মধ্যে রয়েছে সারাদেশ থেকে বিমানবন্দর পিকআপ ও ড্রপ-অফ পরিষেবা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে লাউঞ্জ অ্যাক্সেস ও মিট-অ্যান্ড-গ্রিট পরিষেবা, এবং স্বাস্থ্য ও জীবন বীমা কভারেজ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মো. কায়সার হামিদ বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের মূল্যবান রেমিট্যান্স ও বিনিয়োগের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। বাংলাদেশ ফাইন্যান্স বীর হলো তাদের এই অবদানের প্রতি আমাদের সম্মান ও কৃতজ্ঞতার প্রকাশ, যা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষায়িত আর্থিক সেবা প্রদান করবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ল দ শ ফ ইন য ন স ব র
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ার টক দই ইফতারে ছড়াচ্ছে ঐতিহ্যের স্বাদ
ইফতারে বছরের পর বছর বিশেষ জায়গা দখল করে রেখেছে বগুড়ার বিখ্যাত টক দই। এটি স্বাদ ও গুণে অতুলনীয়। রোজাদারের শরীরে প্রশান্তি আনে; বৃদ্ধি করে হজম শক্তি এবং ইফতারে উপহার দেয় অনন্য স্বাদ।
শতবর্ষের ঐতিহ্য আর খাঁটি দুধের মিশেলের দইটি শুধু বগুড়ায় সীমাবদ্ধ নেই। রাজধানীসহ দেশের নানা ইফতারি বাজারে দারুণ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। দোকান ছাড়াও মিলছে অনলাইনে।
বিভিন্ন অঞ্চলে পাওয়া গেলেও বগুড়ার টক দইয়ের স্বাদ ও মান একেবারে আলাদা। মোলায়েম টক স্বাদ ও ঘনত্ব একে দিয়েছে ভিন্নমাত্রা। দই ব্যবসায়ীরা জানান, খাঁটি দুধের সর থেকে দই তৈরি হয়। ঘনত্ব বজায় রাখতে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় রেখে জমিয়ে তার পর বাজারজাত করা হয়। নিখুঁত প্রক্রিয়ার জন্যই বগুড়ার দই দেশের অন্যান্য অঞ্চলের দইয়ের তুলনায় সুস্বাদু ও স্বাস্থ্যকর।
ব্যবসায়ীরা জানান, রমজান এলেই বেড়ে যায় বগুড়ার টক দইয়ের চাহিদা। বিভিন্ন শোরুম ছাড়াও মুদি দোকান, রাস্তা, পাড়া-মহল্লায় অস্থায়ী টেবিল ও ফেরি করে বিক্রি হয়। দোকানে ৭০ থেকে ২৮০ টাকায় টক ও সাদা ভিন্ন স্বাদের দই বিক্রি হয়। ফুটপাতে নেয় আকারভেদে ৬০ থেকে ১৮০ টাকা। ফুটপাতের দই ঘনত্বে কিছুটা পাতলা হলেও ইফতারে এর আকর্ষণ ভিন্ন। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় টক দইয়ের জোগান দিতে পারছেন না ব্যবসায়ীরা।
রমজানে জেলায় প্রতিদিন গড়ে ৩০ থেকে ৩৫ লাখ টাকার টক ও সাদা দই বিক্রি হচ্ছে, যা অন্য সময়ের তুলনায় ৩ থেকে ৪ গুণ। শহরের ব্যবসায়ী হিরন বাড়িতে দুই শতাধিক সাদা দই তৈরি করে নবাববাড়ি ফুটপাতে বসেছিলেন। মাত্র এক ঘণ্টায় বিক্রি শেষ। হিরন জানান, দই তৈরিতে যে সময় প্রয়োজন, তা পাওয়া যাচ্ছে না। চাহিদা প্রচুর, ঠিকমতো সরবরাহ করা যাচ্ছে না।
বগুড়া আকবরিয়া লিমিটেডের চেয়ারম্যান হাসেন আলী আলাল জানান, তাঁর প্রতিষ্ঠানের দই আমেরিকায় গেছে বহুবার। প্রবাসীরা বগুড়ায় এসে স্বজনের জন্য নিয়ে গেছেন। তিনি মনে করেন, পণ্যটি বাণিজ্যিকভাবে রপ্তানিতে সরকারি প্রণোদনা দরকার। এখন নতুন পদ্ধতিতে মেশিনে দই বানানো হয়। ফলে খাদ্যমান ঠিক থাকে।
টক দই কিনতে আসা আবুল কাদের জানান, রোজার ক্লান্তি দূর করতে সাদা দইয়ের ঘোল খুব উপকারী। পরিবারের সবার পছন্দের। সঙ্গে নিয়মিত মাঠা কেনা হয়। মাঠা সাদা ও টক দইয়ের মিশ্রণে তৈরি। দুপুরের পর শহরে মাঠা বিক্রির কয়েকশ ভ্রাম্যমাণ গাড়ি ঘিরে ভিড় লেগে যায়।
চিনিপাতা দইয়ের মালিক মুক্তার আলম জানান, বগুড়ায় দিনে গড়ে ৩০ টন দই তৈরি হয়। ছুটি ও উৎসবের দিনে আরও ১০ টন চাহিদা বেড়ে যায়। এখন মানুষ স্বাস্থ্য সচেতন হওয়ায় টক বা সাদা দই পছন্দের শীর্ষে রাখছেন।
বগুড়া শহরেই রয়েছে শতাধিক দইয়ের দোকান। শহরের আশপাশে রয়েছে আরও দুই শতাধিক। এসব দোকানে প্রতিদিন প্রচুর দই বিক্রি হচ্ছে। যদিও সম্প্রতি ক্রেতাদের অভিযোগ, বগুড়ার দইয়ের স্বাদ, গুণগত মান ও ঘনত্ব আগের মতো নেই। কারণ হিসেবে জানা যায়, রমজানে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় অসাধু ব্যবসায়ীরা নিম্নমানের উপকরণ ব্যবহার করে মুনাফার আশায় নষ্ট করছেন এর গুণগত মান। তারা দুধের পরিবর্তে গুঁড়া দুধ, স্টার্চ ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানে তৈরি করছেন দই। বাইরে থেকে আসা ক্রেতারা বগুড়ার আসল ও নকল দইয়ের পার্থক্য করতে পারছেন না। ফলে শতবর্ষী দই শিল্পের সুনাম ধীরে ধীরে নষ্ট হচ্ছে।